নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেছেন, শরীফ ওসমান হাদি শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী জনতার ঐক্যের প্রতীক। তার ওপর হামলা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে না; এটি বাংলাদেশের জাতিসত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব গ্রাসের একটি সুপরিকল্পিত কর্মসূচির অংশ।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, ২৪-এর জুলাই আন্দোলনের অভূতপূর্ব মৃত্যুঞ্জয়ী সৈনিক শরীফ উসমান হাদি আজ বাংলাদেশের মানুষের চেতনার প্রতীক। তফসিল ঘোষণার পরদিন একজন জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী প্রকাশ্যে গুলিবিদ্ধ হন—এটি কখনোই বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে না। নির্বাচন কমিশনের এমন মন্তব্য বাংলাদেশের মানুষের সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও জাতিসত্তার প্রতি চরম অবমাননা। যারা বাংলাদেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করতে চায়, যারা এ দেশকে গ্রাস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, হাজিরপুরের ঘটনা সেই প্যাকেজ কর্মসূচিরই অংশ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ডিএফআই, ডিবি, এসবি, এনএসআই—হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত এসব সংস্থা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। হামলার কয়েক দিন আগেই হাদি প্রকাশ্যে নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গোয়েন্দা মহল বিষয়টি জানার পরও তার নিরাপত্তায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তার জবাব সরকারকে দিতে হবে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্ব নেওয়ার পর জুলাই আন্দোলন ও বিরোধী শক্তির ওপর একের পর এক হামলা হয়েছে। জাতীয় ঐক্য ও জুলাই চেতনা ধরে রাখার আহ্বান জানানো হলেও সরকার এখন পর্যন্ত একজনও ফ্যাসিবাদী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ব্যর্থতার দায় সরকার এড়াতে পারে না।
মিয়া গোলাম পরোয়ার আরও বলেন, রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রতিটি থানায় সশস্ত্র আওয়ামী অস্ত্রধারীদের তালিকা পুলিশের কাছে রয়েছে। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় জনগণের ক্ষোভ আরও বিস্ফোরিত হবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, নির্বাচনকে প্যাকেজের মধ্যে নিয়ে বাংলাদেশকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের করদরাজ্য বানানোর যে চেষ্টা চলছে, তা কখনোই সফল হতে দেওয়া হবে না। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া এবং হামলাকারীদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া শক্তিগুলো কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দেবে না। আওয়ামী লীগকে নতুন মোড়কে ফিরিয়ে এনে বা অন্য কাউকে আওয়ামী লীগ বানিয়ে ক্ষমতায় বসানোর স্বপ্ন এই দেশের মানুষ পূরণ হতে দেবে না। আজকের এই প্রতিরোধ সমাবেশ প্রমাণ করেছে—গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে সন্ত্রাস, আধিপত্যবাদ ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।
এএইচ/এআর