নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩২ পিএম
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘এই ইসির অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য যদি এমন মন্তব্য করেন, তাহলে তার পদে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার থাকে না। তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কি না—এই প্রশ্ন দীর্ঘদিন ধরেই তোলা হচ্ছে। অবিলম্বে ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।’
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে এসব কথা বলেন নাহিদ।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা এখানে কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে আসিনি। আমরা এসেছি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কর্মী হিসেবে। বাংলাদেশ আজ আক্রান্ত হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে নৈতিকভাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাই তার পদত্যাগের দাবি উঠেছে।’
নাহিদ বলেন, ‘৫ আগস্টের পরও দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বরং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারীদের টার্গেট করা হয়েছে, শহীদ পরিবারগুলো হয়রানির শিকার হয়েছে এবং মামলা বাণিজ্য চলেছে। বিচার হয়নি ঠিকভাবে, অথচ আইন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টারা পদে বহাল থেকেছেন।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিরোধী দল দমনে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ ৫ আগস্টের পর সেই দক্ষতা যেন হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে। এখন তারা খুনিকে সীমান্ত পার হতে দেয়, ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও গ্রেফতার করতে পারে না।’
ফলে শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নয়, রাষ্ট্রের ভেতরে থাকা ‘ডিপ স্টেট’ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নাহিদ।
বিজয় দিবস প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর শুধু বিজয়ের দিন নয়, প্রতিরোধের যাত্রারও দিন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকেই ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুরু হয়েছিল, যা আজও অব্যাহত।’
তাই আগামীকাল বিজয় দিবসে উৎসব নয়, বরং প্রতিরোধের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন তিনি।
এনসিপি নেতা বলেন, ‘ঢাকা শহরের রাজপথে ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং বাংলাদেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ র্যালি হবে। ভারত যদি মনে করে ৫ আগস্টের পরও আগের মতো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করতে পারবে, তাহলে তারা ভুল ভাবছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ভারতকেও সম্মান ও মর্যাদা বজায় রাখতে হবে।’
নাহিদ বলেন, ‘হাদির গায়ে গুলি লাগার মাধ্যমে শুধু একজন ব্যক্তি নয়, জুলাই বিপ্লব এবং পুরো বাংলাদেশ আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ যতবার আক্রান্ত হয়েছে, ততবারই তরুণরা রাজপথে নেমেছে। আজও সেই গণঐক্যের প্রতীক হিসেবে আমরা শহীদ মিনারে একত্রিত হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের যাত্রা অব্যাহত থাকবে, তবে জুলাই বিপ্লবকে টার্গেট করে যারা মিডিয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ও আইনাঙ্গনে মুজিববাদী রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ চলবে।’
এএইচ/এএইচ