জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৬ পিএম
১৮টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সম্পর্কে বলতে গিয়ে এর চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ‘১৮টি দল একীভূত হয়ে আমরা আজ জোট করেছি। এই জোট কেবল নির্বাচনি জোট নয়, এটি রাজনৈতিক জোট। আমাদের জোটে অংশগ্রহণকারীরা এতে সম্মতি দিয়েই অংশগ্রহণ করছে। দেশ যে বিভাজনের মাঝে আছে আমরা সেই বিভাজন দূর করে একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি উপহার দিব।’
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েলস পার্টি সেন্টারে ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)’ এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে প্রধান উপদেষ্টা, জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান ও জাপা মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মুখপাত্র করা হয়েছে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
জাতীয় পার্টি একাংশের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হতে যাচ্ছে মব কালচারের নির্বাচন। যদি না এই সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে না পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবার প্রশ্ন নির্বাচন হবে কি না। অর্থাৎ সরকার এখনও নির্বাচনি পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি। নির্বাচন যদি আমরা ঠিকভাবে না করতে পারি, অতীতের নির্বাচনগুলোর ভুল থেকে যদি শিক্ষা নিতে না পারি; তাহলে কীভাবে সম্ভব? বর্তমানে যে অবস্থা চলছে সেই অবস্থা থাকলে এটি প্রকৃত একটি মব কালচারের নির্বাচন হবে।’
আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের যে সুযোগ এসেছে সেটিকে ভালোভাবে কাজে লাগানো উচিত। কারণ নির্বাচনই গণতন্ত্রের প্রথম ও প্রধান পাথেয়। নির্বাচন কমিশন বলছে তারা প্রস্তুত। কিন্তু আমরা এর কোনো প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি না। আমরা আশা করি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করে নির্বাচনকে সঠিকভাবে আয়োজন করা হবে। যাতে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মাত্র ৩ মাসের মধ্যেই আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলো প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করে ফেলেছিল। ১৯৯২, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন মানুষের কাছে এখনও গ্রহণযোগ্য। এরকম পরিবেশ কেন সৃষ্টি করা হচ্ছে না?’
আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি একটি শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন অর্থনীতির জন্য। আমরা অনেক ভুল করেছি। আমরা দলীয়ভাবে সেই ভুলের জন্য ক্ষমাও চেয়েছি। কিন্তু একটা সরকারকে পালিয়ে যেতে হবে; সেটি আমরা চাই না।’
রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধপূর্ণ বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা দেখছি প্রধান দলগুলো একজন অপরজনের অতীত নিয়ে কথা বলছে। এটি আমরা চাই না। আমরা চাই ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা হোক। আমরা আমাদের প্রশাসন, পরিবেশ ও আইনশৃঙ্খলার উন্নতি না করে ৭১-এ কে কী করেছে, কে আগে কী করেছে সেটা চিন্তা করছি। আমরা এসব চাই না। আমরা চাই পুরোনো সব ভুলে যেতে।’
সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ হাই কমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সিলর টিম ডাকেট, মার্কিন দূতাবাস প্রতিনিধি কামরুল হাসান খান, ব্রুনাই মিশন প্রধান রোজাইমি আবদুল্লাহ, ভারতীয় দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) পুজা ঝাও এফিসাস, কাজী শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, সিনিয়র চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, লিয়াকত হোসেন খোকা, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, জনতা পার্টি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার মিলন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি শাহ মো. আবু জাফর, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সভাপতি আবু লায়েস মুন্না, তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব মেজর (অব.) ডা. হাবিবুর রহমান, গণফ্রন্টের মহাসচিব আহমেদ আলী শেখ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, জাতীয় ইসলামী মহাজোটর চেয়ারম্যান আবু নাসের এম ওয়াহেদ ফারুক, জাতীয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মেজর (অব.) আমীন আহমেদ আফসারি, ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান এম আশিক বিল্লাহ, অ্যালায়েন্স ডেমোক্রেটিক পার্টির (এডিপি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম আর করিম, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান এম আর এম জাফর উল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টির চেয়ারম্যান মির্জা আজম, ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান নারায়ণ কুমার দাস প্রমুখ।
বিইউ/এফএ