নিজস্ব প্রতিবেদক
০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৫ এএম
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশকে ‘গ্লোবাল বিজনেস হ্যাভেন’ হিসেবে গড়ে তুলতে রোড ম্যাপ ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও আইনভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামোই বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের মূল ভিত্তি বলে মনে করেন দলটির নেতারা।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত সংলাপে এসব বলেন এনসিপি নেতারা।
দেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ, জাতীয় সম্পদ সুরক্ষা এবং কৌশলগত সার্বভৌমত্বের ভারসাম্য নিয়ে উচ্চপর্যায়ের নীতিগত সংলাপের আয়োজন করে এনসিপি। এতে নীতিনির্ধারক, বিনিয়োগকারী, শিল্পখাতের উদ্যোক্তা ও উন্নয়ন অংশীদাররা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে এনসিপির শিল্প ও বাণিজ্য সেলের প্রধান জাবেদ রাসিন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশকে ‘গ্লোবাল বিজনেস হ্যাভেন’ হিসেবে গড়ে তোলার দলীয় ভিশন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও আইনভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামোই বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের মূল ভিত্তি।’
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মো. আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল। তিনি গত ১৫ বছরের অর্থনৈতিক বয়ান বিশ্লেষণ করে তথ্য বিকৃতি, বিকৃত প্রবৃদ্ধি চিত্র এবং নীতিগত অকার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ফয়সাল বলেন, ‘বর্তমানে জিডিপির মাত্র ০.৩৪ শতাংশ এফডিআই—এটি বিশ্বের অন্যতম নিম্ন হার। এনসিপি এটি ৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে।’এ লক্ষ্যে তিনি ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সহজীকরণ, ব্যবসার ব্যয় হ্রাস, নিয়ন্ত্রক কাঠামো সরলীকরণ এবং যুববান্ধব উদ্যোক্তা পরিবেশ তৈরির ওপর জোর দেন।
তাসনিম জারা বাংলাদেশের শিল্প ও স্টার্টআপগুলোকে বিশ্ববাজারে তুলতে উদ্ভাবন, স্কেল-আপ এবং গ্লোবাল ভ্যালু চেইনে সংযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্প ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করা ছাড়া বাংলাদেশকে বৈশ্বিক প্রতিযোগী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়।’
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রশাসনিক কাঠামোর দুর্বলতাকে দেশের বিনিয়োগ পরিবেশের জন্য ‘সবচেয়ে বড় বাধা’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিবর্তনের ঊর্ধ্বে গিয়ে টেকসই ও ধারাবাহিক সংস্কার নিশ্চিত করতে না পারলে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরবে না।’
অনুষ্ঠানে নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারীসহ এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন শিল্পখাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ব্যবসায়ী নেতারা তাদের বক্তব্যে বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতা, নীতিগত চ্যালেঞ্জ এবং বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা তুলে ধরেন।
এমআর/ক.ম