নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৯ পিএম
ঝালকাঠির একটি আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে ছাড় পাওয়ার আলোচনা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সেই আসনে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করায় দলটির ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। ঘোষণা দিয়ে বিএনপির সঙ্গে প্রায় ২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে লেবার পার্টি।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ২টায় নয়া পল্টন দলীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ লেবার পার্টির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের সিদ্ধান্ত হয়।
দলটির পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লেবার পার্টি মনে করে, বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে ডাকা হরতালে ডা. ইরানের গ্রেফতার, যুবলীগের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া, অসংখ্য মিথ্যা মামলা ও পাঁচবার কারাবরণ, জুলাই গনঅভ্যুত্থানে দুজন কর্মীর শাহাদাত বরণ, সারাদেশে অসংখ্য নেতাকর্মী হামলা মামলা গ্রেফতার নির্যাতন নিপীড়ন-সবই প্রমাণ করে লেবার পার্টি ছিল বিএনপির সবচেয়ে নিবেদিত, বিশ্বস্ত ও ত্যাগী শরিকদল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বিএনপি দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক ভ্রাতৃত্ব, যৌথ সংগ্রাম ও মিত্রতার সম্পর্ককে অবজ্ঞা করে শরিক দলের সাথে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে সমমনা দলগুলোকে মাইনাস করে এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। যা রীতিমতো প্রতারণামূলক, অমর্যাদাকর ও বেঈমানিপূর্ণ আচরণ।
নেতৃবৃন্দ মনে করেন, আন্দোলন–নির্বাচন–সরকার গঠন একসঙ্গে করার প্রকাশ্য প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তারেক রহমান চিহ্নিত চাঁদাবাজ, হত্যা মামলার আসামি, দুর্নীতিবাজ, রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎকারী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের মনোনয়ন দিয়েছেন। আমরা শুনেছি, বিএনপি টাকার বিনিময়ে অযোগ্য, ফ্যাসিবাদী শক্তির দোসর এবং অনৈতিক ব্যক্তিদের মনোনয়ন দিয়ে হাজার কোটি টাকার মনোনয়ন বানিজ্যে লিপ্ত হয়েছে। এমন কর্মকাণ্ড বিএনপির নৈতিক নেতৃত্বকে সম্পূর্ণ ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এবং তাদের রাজনৈতিক চরিত্রকে আরও দুর্বল করেছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার চরম সংকটকালে, যখন তার সবচেয়ে বেশি দৃঢ় রাজনৈতিক ঐক্য ও বন্ধুত্বের প্রয়োজন ছিল, ঠিক সেই সময় বিএনপির মিত্রদের সঙ্গে এমন আচরণ কেউই প্রত্যাশা করেনি। এ আচরণ রাজনৈতিক অমর্যাদা ও অকৃতজ্ঞতার এক বেদনাদায়ক নজির হয়ে থাকবে। ইতোপূর্বেও আওয়ামী লীগ যখন জোট সুসংহত করেছে বিএনপি তখন দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামীকে মাইনাস করতে ২০ দলীয় জোটকে ভেঙে দিয়েছে।
লেবার পার্টির নির্বাহী কমিটি মনে করে, শরিকদের প্রতি অবজ্ঞা, অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত, নীতিহীন মনোনয়ন প্রক্রিয়া এবং বেঈমানিপূর্ণ আচরণের মধ্য দিয়ে বিএনপি নিজেকে বন্ধুহীন, অবিশ্বাস ভঙ্গ ও নেতৃত্বহীন দলে পরিণত করেছে। এমন কর্মকান্ডে বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব উন্মোচিত হয়েছে। ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক শক্তিই তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারবে না- এ দায় সম্পূর্ণ বিএনপির।
সভায় লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জোহরা খাতুন জুঁই, হিন্দুরত্ম রামকৃষ্ণ সাহা, মো. মোসলেম উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব আবদুর রহমান খোকন, মুফতি তরিকুল ইসলাম সাদি, মো. হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ রুম্মান সিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাউল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মো. মনির হোসেন খান, দফতর সম্পাদক মো. মিরাজ খান, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনীন সরকার, কেন্দ্রীয় সদস্য মাসুদ আলম পাটোয়ারী, ছাত্র মিশনের সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন বক্তব্য দেন।
জেবি