নিজস্ব প্রতিবেদক
০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৮ পিএম
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘আমি মানুষকে বলব, যেসব দল চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মামলাবাজি, দখলবাজি করবে; সেসব দলকে ভোট দেবেন না। মানুষ বদলে গেছে। মানুষ দলের নেতাদের অতীত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে। মানুষ সচেতন। সবকিছু বিবেচনা করেই আগামী নির্বাচনে তারা ভোট দেবে।’
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন ও গণতন্ত্রের সংগ্রাম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার ছলচাতুরী করে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ ইতোমধ্যেই হারিয়েছে। শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের পর ভারত নিরপেক্ষ বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে। ৭ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করলে নির্বাচন হবে কি হবে না এই প্রশ্নের সুযোগ থাকবে না। গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে কোনো আলোচনা হচ্ছে না। শেষ দিনে এসে যদি বিএনপি গণতন্ত্র মঞ্চকে তিনটা সিট দিয়ে বলে আর সিট দিতে পারব না। তাহলে আমাদের কী হবে? আমরা কি তাহলে তাদের সাথে জোট করব? ভাবেন আপনারা। গণতন্ত্র মঞ্চ যদি নির্বাচিত হয়, তাহলে আমরা বেকার ভাতার ব্যবস্থা করব। বছরে ৩৬ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে।’
ডাকসুর এই সাবেক ভিপি বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ যেন মানুষের জন্য লড়াই করে। অতীতে কী করেছি তা নিয়ে অহংকার না করে বর্তমানে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। আমরা যদি তিনশ’ আসনে প্রার্থী দিয়ে মানুষের কাছে যেতে পারি, তাহলে বিভিন্ন দল আমাদের পেছনে দৌড়াবে। আগে দুই তৃতীয়াংশ জেতার কথা বলত। এখন প্রার্থী দেওয়ার আগে ভাবে প্রার্থী জিতবে তো! মানুষ চিন্তা করে এই দলের লোকজন নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি করে, আমরা ওই দলে যাই। সুতরাং আমাদের মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে।’
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পরই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব বেড়ে যাবে। উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে প্রার্থীদের জামানত দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্টেক হোল্ডারদের বাদ দিয়ে আরপিও সংশোধন করে আইনে পরিণত করা হয়েছে। ১৭ বছর ধরে আমরা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছি। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জায়গার প্রার্থীরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে। নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ৩০০ আসনেই না ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। নিবন্ধিত দল নিজস্ব প্রতীকের পাশাপাশি জনপ্রিয় কোনো প্রতীকে নির্বাচন করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোনো কোনো উপদেষ্টা পদে থেকেই নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে। নিজের নির্বাচনী আসনে কোটি কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। ধর্মের নামে জবরদস্তি, হানাহানি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অভ্যুত্থানের নাম করে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। ধর্মের নামে রাজনীতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতি জোর জবরদস্তি করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে গণভোটের মাধ্যমে হ্যাঁ ভোটকে জয়যুক্ত করাটা আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। না ভোট জয়যুক্ত হলে জুলাইয়ের অর্জন শেষ হয়ে যাবে।’
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
এম/এফএ