জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া কয়েকটি রাজনৈতিক দল হয়ে অবশেষে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। এই দলে যোগ দিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, বিএনপিতে যোগ দিতে পেরে তিনি গর্বিত।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন রেজা কিবরিয়া। পরে তিনি নিজের প্রতিক্রিয়া জানান।
রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘আমি বিএনপিতে যোগদান করতে পেরে খুবই গর্বিত। আমি বিএনপিতে আজকে ফরমালি জয়েন করলাম। এই দলটার ইতিহাসটা হলো গণতন্ত্রের ইতিহাস। দুই দুইবার তারা গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের থেকে। একবার শেখ মুজিবের গণতন্ত্র ধ্বংস করে। সেখান থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এটাকে রক্ষা করলেন। আর দ্বিতীয় বার শেখ হাসিনা-জেনারেলের এরশাদের সঙ্গে গণতন্ত্র ধ্বংস এবং আমাদের বেগম খালেদা জিয়া, যিনি এখন অনেক অসুস্থ, সবাই দোয়া করবেন উনার জন্য। উনি আবার এটা রক্ষা করলেন।’
রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘এটা একটা ঐতিহাসিক ভূমিকা। একটা দল দুইবার বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষা করেছে। আমি ইতিহাসে এরকম কোনো উদাহরণ অন্য কোনো দেশে দেখি না। এইসব কারণে আমি বিএনপির প্রতি আকৃষ্ট এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমার আদর্শ। উনার সাহস, উনার ব্যক্তিগত চরিত্র, উনার সততা এগুলো নিয়ে এত বছর পরও সবাই এখনো গর্ব করে। উনি যে কোয়ালিটির ছিলেন, এত বছর পরও গ্রামের লোক উনার কথা বলে- এরকম মানুষ আর বাংলাদেশে জন্মাবে না হয়তো।’
বিএনপির নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি বিএনপি এখন যেই নেতৃত্বে আছে এবং যারা আছেন, বিএনপির সিনিয়র নেতারা আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মকে তাদের সব স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। তাদের যে ভিশন দেশের জন্যে, এটা আগের ভিশন না। অনেক কিছু বদলে গেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব উনার যে রক্ত, এটা কোন কোয়ালিটির আপনারা যদি চিন্তা করেন, উনার বাপ কী ছিলেন এবং মা কী আছেন, এটা ইনক্রেডিবল; এটা বাংলাদেশে আর কারো ওই কোয়ালিটির ব্লাড লাইন নাই, সেটা আপনাদের বলতে পারি। আমরা সবাই উনাকে (তারেক রহমান) সাহায্য করব একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। আমার ধারণা, উনি বিদেশে আছেন, এটা একদিক থেকে দুঃখজনক, আমাদের দেশের মানুষের কাছে নাই। আরেক দিক থেকে আমি এটাতে খুশি যে, উনি (তারেক রহমান) বিদেশের সব কোয়ালিটি, সব প্রশাসনিক জিনিস উনি দেখছেন, শিখছেন এবং সেইগুলি বাংলাদেশে উনি আনবেন, আমি এটা আশা করি। আমি মনে করি উনার ইংল্যান্ডে থাকাও দেশের মানুষের জন্যে একটা লাভজনক জিনিস। উনি অনেক কিছু নিয়ে আসবেন এ দেশে, যেটা আগে ছিল না।’
রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশটাকে উন্নত করে এশিয়ার প্রথম তিন দেশের মধ্যে আনা অসম্ভব কিছু না। আপনারা ভাবছেন, আমি কী রূপকথার মতো বলছি। এটা পরে দেখবেন। আমি ৩৫টা দেশে কাজ করেছি প্রায় ৪০ বছর। আপনাদের বলতে পারি, আমাদের দেশের মানুষের কোয়ালিটি এটা হলো ‘টপ ক্লাস’ এবং এই মানুষগুলিকে দিয়ে একটা ‘টপ ক্লাস’ দেশ, প্রথম সারির দেশ তৈরি করা যাবে ইনশাআল্লাহ।’
সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া এই নেতা বলেন, ‘বিএনপিকে এই সুযোগটা যদি ভোটাররা দেয়, তাহলে আপনারা দেখবেন তারা কী পারে এই দেশের জন্যে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে। আমি আশা করি আমার এলাকায় নবীগঞ্জ-বাহুবল সেখানে আমার কাজ করার একটা সুবিধা হবে এবং যদি ওনারা মনে করেন জাতীয় কোনো জায়গায় আমাকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়ার; আমি চাই, দেশের জন্য কাজ করতে। আমি খুব ভালো চাকরি ছেড়ে এসেছি। আপনারা জানেন আইএমএফের চাকরির লাভজনক লোভজনক একটা চাকরি। সেই চাকরি ছেড়ে আমি আসছি দেশের জন্যে, দেশের মানুষের জন্যে কাজ করার জন্যে। এটা ছিল আমার বাবার স্বপ্ন। আমি আশা করি সেটা পূরণ করতে পারব।’
বিইউ/জেবি