নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল এবং সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। এরপরই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা উচিত। তিনি বলেন, দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও সংবিধান অনুযায়ী এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা জাতিকে শান্তি ও স্থায়িত্ব দেবে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ইসলামী ৮ দলের রাজনৈতিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর পল্টন মোড়ে এই বিশাল মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি আগামী দিনের রাজনীতির মাইলফলক হয়ে থাকবে এবং মুসলিম উম্মার ঐক্য ও দেশপ্রেমিক মানুষের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।
তিনি আরও বলেন, সরকারের গঠিত জাতীয় ঐক্যবদ্ধ কমিশন প্রায় নয় মাস ধরে সাংবিধানিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও বিচারবিভাগীয় বিভিন্ন সংস্কারের মধ্য দিয়ে কাজ করেছে। ফলে আগামী ২৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের জন্য প্রায় একমত হয়েছে। তবে এক মহল ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। ষড়যন্ত্রের সূত্র ধরে আগামী ১৩ তারিখে শাটডাউনের নামে নতুন নাশকতার পরিকল্পনা রয়েছে।

জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, যারা দাবি করছেন একদিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, জনগণ তা মানবে না। জুলাই মাসে জাতীয় সনদের যে সংস্কারগুলো করা হয়েছে, তা সংবিধানের নানা ধারা সংশোধনের মাধ্যমে হয়েছে। দলের প্রধান এবং সরকার প্রধান এক থাকবেন না, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রবর্তিত হয়েছে। তবে এগুলো যদি আইনি ভিত্তি না পায়, তাহলে জাতীয় নির্বাচন কী ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে?
তিনি হাইকোর্টের আর্টিকেল ১০৬ ধারার মাধ্যমে সরকারের বৈধতা নিয়ে বিতর্কের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞরা এই আইন নিয়ে বিতর্ক করেছেন। ফলে একমাত্র গণভোটের মাধ্যমে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য যত সংস্কার হয়েছে, তা যদি আইনি ভিত্তি না পায়, জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিশ্চিত হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পাঁচ দফায় মানবতা বিরোধী অপরাধের খুনিদের বিচারের আওতায় আনার জন্য যে দাবি ছিল, আমরা তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। ভয় ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া যখন এগিয়ে যাচ্ছে এবং নভেম্বরে কিছু অপরাধীর রায় আসার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, তখনই ফ্যাসিস্টরা ককটেল ও আগুন দিয়ে নাশকতার ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি সরকার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কে উদ্দেশ্য করে বলেন, ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে নাশকতার জন্য অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিদের গ্রেফতারের জন্য অবিলম্বে অভিযান চালান। পাশাপাশি, আগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করুন। এরপর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করুন। জাতি এই সরকারকে সহযোগিতা করবে।
এএইচ/এআর