জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম
জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করে নানা বাহানায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, ‘আপনারা যখন এত বেশি আত্মবিশ্বাসী যে, সরকারি দল হবেন, তাহলে নির্বাচনে আসেন না কেন? আজকে এই বাহানা, কালকে ওই বাহানা, পরশু আরেক বাহানা দিয়ে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন কেন? উদ্দেশ্য কী, সেটা তো আমরা জানি।’
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অপর্ণ আলোক সংঘের আয়োজনে ‘তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তার তৃতীয় সংলাপ-মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন।
জামায়াত ইসলামীকে নিয়ে গণমাধমের সংবাদের কথা তুলে ধরে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কালকে কয়েকটা সমাবেশ হয়েছে সারাদেশে, বিভিন্ন বিভাগ পর্যায়ে। পত্রিকায় আজ হেডলাইন দেখলাম, কোথাও বলছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে।’
সালাহউদ্দিনের প্রশ্ন, ‘ভাইসাব আপনারা কি নির্ধারণ করে দিয়েছেন, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে নাকি জনগণ তাদের বিরোধী দল করবে?’
রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা কোনো সংকট সৃষ্টি না করি, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি। আমাদের ফ্যাসিস্টবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়েছে, সেটাকে আমরা সমুন্নত রাখব এবং এটাকেই শক্তিতে পরিণত করব ইনশাআল্লাহ। গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখলে তবেই আমরা সফলকাম হবো।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে যদি ঐকমত্য পোষণ না হয়, তাহলে যেভাবে প্রচলিত বিধি-বিধানসম্মত হবে সেভাবেই হবে। এখানে যেন আমরা পরস্পর জবরদস্তি না করি। যে পরিবর্তনগুলো আমরা সামনের দিনে আনতে চাচ্ছি, সেটা রাতারাতি হবে না। সেটার জন্য সময় দরকার, পর্যায়ক্রমে যাওয়া দরকার।’
গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের দলে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছাত্র প্রতিনিধি সরকারের দায়িত্বে আসাটা আমার বিবেচনায় সঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ প্রেশার গ্রুপ হিসেবে জাতিকে নির্দেশক হিসেবে তারা থাকতে পারতো। এখনো ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে যারা সরকারে বসে আছে, প্রতিদিনই তাদের লাইবিলিটির (দায়) কাদা নিতে হচ্ছে, হবে।’
বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঠের আন্দোলনের সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আলোচনা টেবিলে চলমান থাকা অবস্থায় মাঠে আন্দোলন করাটা স্ববিরোধী।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছে, এ সরকার পুরোপুরি সাংবিধানিকও না আবার পুরাপুরি বিপ্লবী সরকারও না, মাঝামাঝি সরকার। এটা নির্ধারণ হওয়া দরকার, এক বছর পরে এসে কেন এ প্রশ্ন উঠছে? এর পেছনে উদ্দেশ্য থাকতে পারে। এ ধরনের প্রশ্নের মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক সংকট যদি সৃষ্টি হয়, তাহলে বেনিফিশিয়ারি কে হবে? বেনিফিশিয়ারি হবে পতিত স্বৈরাচার।’
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আমরা রাষ্ট্রকে সেই জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি কেন? প্রশ্নগুলো তুলে এই সরকার সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার সরকার কি না, সেই প্রশ্ন যদি আজ তোলা হয়, তাহলে তাদের মতলব আলাদা।’
বিইউ/এএইচ