images

রাজনীতি

বন্যার জন্য ‘নতজানু’ পররাষ্ট্রনীতিকে দায়ী করলেন মোশাররফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ জুন ২০২২, ০৪:১২ পিএম

সম্প্রতি সিলেটসহ উত্তরাঞ্চলে যে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে এর জন্য সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতিকে দায়ী করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। প্রয়োজনের সময় ভারত পানি দেয় না, আর যখন প্রয়োজন নেই তখন পানিতে ভাসিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।  

মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন।

সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পানি বন্টনের ইস্য’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দেন সাবেক এই মন্ত্রী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মোস্তফা কামাল মজুমদার।

সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কিছুদিন আগের লোক দেখানো আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়ে জিআরসি মিটিং করেছেন। সেই মিটিংয়ে কী করেছেন? জয়েন্ট রিভার কমিশনের কোনো রিপোর্ট ছাড়া যে তারা লিপ সার্ভিস একটা দিলেন-এটা আসলে বাংলাদেশের মানুষকে প্রতারণা করা হয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কারণ সবাই জানেন, বন্যায় যখন বাংলাদেশ তলিয়ে গিয়েছে, মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এখন পর্যন্ত ভালো করে এর হিসাব দেওয়া হচ্ছে না। সব গেইট ভারত এই বর্ষাকালে খুলে দিয়েছে। যখন আমাদের পানির প্রয়োজন নাই তখন আমাদেরকে ভাসিয়ে দিচ্ছে। যখন আমাদের পানি প্রয়োজন, আমার জীবিকা, আমার জীবন রক্ষার জন্য তখন উজানে পানি অন্যদিকে আমাদেরকে এই বাংলাদেশকে মরুকরণ করে দেওয়া হচ্ছে।’

মোশাররফ বলেন, ‘যে যুমনা নদীর জন্য ব্রিজ হলো এত বড় নদীর জন্য, এখন যারা শুষ্ক মৌসুমে নদীর ব্রিজের উপর দিয়ে যান তারা দেখবেন নিচে দিয়ে গরুর গাড়ি যাচ্ছে-এই হচ্ছে অবস্থা। কেন? বাঁধগুলোর কারণে। আমাদের নদীর তলদেশ গভীরতা হারাচ্ছে এবং বেসিনের গভীরতা হারাচ্ছে। আপনারা পত্রপত্রিকায় দেখেছেন সুরমা বেসিনের তলদেশ কী পরিমাণ উঁচু হয়ে গেছে যার জন্য এবার ১২২ বছরে এ রকম বন্যা বাংলাদেশে হয় নাই। কেন হচ্ছে-এই বাঁধের জন্য হচ্ছে। পানি ব্যবস্থাপনার একতরফা যে সিদ্ধান্ত আমরা যারা নিচের দিকে বসবাস করি এই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিতে যে নতজানু নীতি তার জন্য আজকে এটা করা সম্ভব হচ্ছে।’

সরকার বন্যার্তদের পাশে নেই দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘যে প্রলয়ংকারী বন্যা হয়েছে তা মোকাবিলায় সরকার যেভাবে এগিয়ে আসার কথা ছিল, যে পরিকল্পনা থাকার কথা ছিল- আমরা লক্ষ্য করেছি সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। তারা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। দুর্ভাগ্য জনগণের। জনগণের ভোটের সরকার যদি না হয় তাহলে জনগণের কষ্ট, জনগণের দুঃখ প্রাধান্য পায় না, পায় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থ।’

সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা ড. এস আই খান, পানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী এম ইনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যায়ন বিভাগের অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বক্তব্য দেন।

জেবি