০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম
দেশে গণতন্ত্র উত্তরণের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আজকে একটা ষড়যন্ত্র চলছে, একটা চক্রান্ত চলছে যে, দেশে আবার একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করবার, দেশে একটা ষড়যন্ত্র তৈরি করবার যেন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ট্রানজিশন সঠিক মত না হয়। কিন্তু আমরা এটা বিশ্বাস করি… যুবদল, ছাত্রদল যতদিন তারা টিকে থাকবে ততদিন এই দেশে এই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবার কোনো শক্তি কখনো জয়ী হতে পারবে না।’
সোমবার বিকালে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও আমার না বলা কথা’ শীর্ষক এই আলোচনায় মির্জা ফখরুল এসব বলেন। অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে তারেক রহমানের ভাবনাকে ‘ড্রিম’ হিসেবে দেখার কথা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আশা করছি, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব আমাদেরকে যে পথ দেখাচ্ছেন, যে কথাগুলো বলছেন অর্থনীতি সম্পর্কে, রাজনীতি সম্পর্কে… তিনি দেশের সামনে যে স্বপ্ন তুলে ধরছেন সেই স্বপ্ন শুনে আমার একটি কথাই মনে হয়, মার্টিন লুথার কিং এর সেই ঐতিহাসিক কথা … ‘আই হেভ এ ড্রিম’।তারেক রহমান এজ এ ড্রিম’। ইনশাল্লাহ সেই ড্রিম নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব এবং আমরা জয় করব এবং উই শেল ওভার কাম ইনশাল্লাহ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আহ্বান জানাতে চাই, আসুন আমরা পরস্পর পরস্পরে কাঁদা ছড়াছড়ি না করে, আমরা এই যে একটা সুযোগ পেয়েছি, বাংলাদেশে আবার গণতন্ত্রকে তৈরি করবার, বাংলাদেশকে আবার অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করবার… আসুন সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে আমরা বাংলাদেশকে সেই দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই, মাথা উঁচু করে দাঁড়াই। ইনশাআল্লাহ আমরা সফল হব।
গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকতা দিতে এবং অর্থনীতিকে সচল করতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পদক্ষেপ তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্রের যতগুলো কাঠামো আছে সেই কাঠামোকে শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করানোর কাজটা বিএনপি করেছে, অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন অর্থনীতিতে যে উন্নয়নের লক্ষ্য সেটাও করেছে এই বিএনপি দেশনেত্রী এবং খাজার নেতৃত্বে এবং আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া রহমান সাহেবে।
‘বিএনপিকেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন একটা আমরা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি। যখন আমরা গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটা স্বপ্ন দেখছি, সুযোগ দেখছি। আমাদের সামনে এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যে একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি, একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজনৈতিক কাঠামো… সেটাকে আবার ভিত্তি তৈরি করে, তাকে তৈরি করে আমাদেরকে আবার সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যখনই দেশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় যখনই অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যায় তখনই বিএনপি সেই দায়িত্বে এসে পড়ে এটাকে আবার পুনর্গঠন করার জন্য। প্রতিদিন সময় তাই ঘটেছে। আজকে এখন আবার যা মনে হচ্ছে তাতে করে বিএনপিকেই হয়তোবা সেই দায়িত্বটা নিতে হবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যুব দলের নিহত ৭৮ পরিবারের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সন্মাননা ও আর্থিক সহযোগিতা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। জুলাই-অভ্যুত্থানের ওপর কবিতা আবৃত্তি করেন নাসিম আহমেদ।
‘আরেক নাটক শুরু করেছে’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘ একটি কথা শুনলাম, মাজেদ নাকি সাজেদ একজন মেজর…. দেশে বসে চক্রান্ত করছে সরকারকে বিপদে ফেলতে কিংবা দেশে একটা ঘটনা ঘটাবে। এই সমস্ত চক্রান্ত কিন্তু আমরা বুঝি। এগুলো একটি বানানোর নাটক শুরু করেছেন যাতে নির্বাচনটা পেছানো যায়, যাতে নির্বাচনটা না হয়। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন, দেশের মানুষ ১৭ বছর আন্দোলন করেছে ভোটের জন্যে। এই ভোট এই সরকারের কাছ থেকে আমরা আদায় করেই ছাড়ব। সরকারের পেছনে সরকারের ভিতরের বাইরে যতই ষড়যন্ত্র চলুক কোন ষড়যন্ত্রকেই বিএনপি অপ্রতিরুদ্ধ মনে করে না।
তিনি বলেন, ‘‘ ইনশাআল্লাহ আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে ১৭ বছরের মতই আগামীতে প্রয়োজন পড়লে আরো ১৭ বছর আন্দোলন করব কিন্তু কোন অরাজক পরিস্থিতি কিংবা কোন স্বৈরশাসককে আমরা প্রতিষ্ঠিত হতে দেব না।”
জাতীয়তাবাদী যুব দলের সভাপতি এম আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মেহেদি আমিন, মানবাধিকার কর্মী সাইয়েদ আবদুল্লাহ, যুব দলের রবিউল ইসলাম নয়ন, দীর্ঘদিন গুম হয়ে থাকা অ্যাডভোকেট সোহেল রানা, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সায়েম আল মনসুর ফয়েজী, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সায়েম আল মনসুর ফয়েজী, শহীদ মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে আপন, ইয়াহিয়া আলীর মেয়ে তাইয়েবা খাতুন, হাফিজুর রহমান সুমনের স্ত্রী বিধী আখতার, নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আখতার নেহা বক্তব্য দেন।
বিইউ/ক.ম