images

রাজনীতি

বৈছাআ’র চাঁদাবাজির দায় উমামা এড়াতে পারেন না: এনসিপি নেতা তুহিন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৮ জুলাই ২০২৫, ১০:৩১ পিএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতাদের চাঁদাবাজির দায় উমামা ফাতেমা এড়াতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন। তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী’ ও ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ের এখন আর অস্তিত্ব নেই, মার্চে নাহিদ যখন এমন ঘোষণা দিলেন, তখন বাধা হয়ে দাঁড়ান মুখপাত্র উমামা ফাতিমা। গত ৫ মাস মূলত উমামার শেল্টারেই এই প্লাটফর্মটা টিকে ছিল। তার একক ক্ষমতা চলতো সেখানে। বাকি সব শীর্ষ নেতা এনসিপি বা ছাত্র সংগঠন বাগছাসে যোগ দেয়।

সোমবার (২৮ জুলাই) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। আরিফুর রহমান তুহিন লেখেন, সারাদেশে এনসিপির কার্যক্রম উমামার ছেলেরা বাধাগ্রস্ত করেছে। নাহিদকেও হেনস্তা করেছে দুই জায়গায়। ওরা বাগছাসের বিরোধী, এনসিপি কেন হইলো এটা ওরা মানতে পারে না। ওরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেই চায় কারণ সমন্বয়ক পদে অনেক মজা। মূলত ফেব্রুয়ারি থেকেই এনসিপি ও বাগছাসের সঙ্গে বৈছাআ’র আনুষ্ঠানিক ডিভোর্স হয়। আমাদের ছেলেরা এটা ছেড়ে যায়।

তিনি আরও জানান, জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এই সংগঠনটি নাহিদ ইসলাম বিলুপ্ত করতে চেয়েছিল কিন্তু এর কিছু অসৎ নেতাকর্মীর কারণে। উমামাকে আহ্বান জানানো হইছিল এনসিপিতে আসতে। কিন্তু এই প্ল্যাটফর্মকে সে একাই টিকিয়ে রাখে এবং একের পর এক বিতর্কের জন্ম দেয়। নাহিদ বা এনসিপি চাইছিল অন্তত সারাদেশের কমিটি বিলুপ্ত করে কেবল কেন্দ্রীয় কমিটি থাকুক। কিন্তু নিজের আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে উমামা ফাতিমা এটাকে কন্টিনিউ করে।

তুহিন লেখেন, তাই অন্তত মার্চ থেকে এই সংগঠনে যত অপকর্ম হয়েছে এটার দায় উমামা কখনোই এড়াইতে পারেন না। তিনি একাই এটাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং কারো বিরুদ্ধে কঠোর হননি। যখন সব তালগোল পাকিয়ে ফেলেন, তখন কাউন্সিল দিতে রাজি হন। মাত্র কয়েকদিন আগে রিফাত রশিদ দায়িত্ব নেন এবং গতকাল কমিটি বিলুপ্ত করেন। সমস্যা হলো, জনগণ জানেন না যে এনসিপির সঙ্গে বৈছাআ’র কোনো সম্পর্ক নেই। ওরা রূপায়ণ টাওয়ারেও আর নাই। হলুদ মিডিয়া এটা জানতে দেয়নি। আবার নেতৃত্বে কে ছিল সেটাও জানায়নি। কারণ, উমামা ফাতিমা বাম করে আর তাদের নিয়ে কিছু বলা তো যাবে না। আবার এই সুযোগে একটু এনসিপিকেও সাইজ করা গেলো।

তিনি আরও বলেন, অথচ প্রায় সব গণমাধ্যম জানে যে, এরা দল গঠনের পর থেকে পুরোপুরি আলাদা এবং উমামা ফাতিমাই এটাকে চালিয়েছে। উমামা কতগুলো অভিযোগ নিয়ে সামনে আসলো। কিন্তু যখন দায়িত্বে ছিলেন তখন কিন্তু এগুলো বলেনি। কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি। আবার নাহিদের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সে এইটাকে চালাইছে। এখন দায় কেন তাহলে নিবে না? আমি বিশ্বাস করি, বিএনপির চান্দার দায় তারেক রহমানের হলে বৈষম্যবিরোধী নেতাদের দায় উমামা ফাতিমার।

আরেকটা কথা হলো, বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম থেকে আমাদের ছেলেরা এনসিপি ও বাগছাসে যোগ দিয়েছে। শিবিরের ছেলেরা আপ বাংলাদেশ করে। আর ভালোদের একটা অংশও ওই দুই সংগঠনের ব্যানারে কাজ করে। কেবল অধিকাংশ উমামা ফাতিমার পন্থীরাই ছিল এটার পক্ষে।

রিফাত গতকাল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা আরও এক সপ্তাহ আগে নিলে ভালো হইতো। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা প্ল্যাটফর্ম পুরোপুরি গুটিয়ে আনা কঠিন এটা রাজনীতি যারা করেন তারা বোঝেন। এবার উচিত একটা গণতদন্ত করে সব অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার সুপারিশ করা। উমামা ফাতিমা কেন এটাকে ভাঙতে দিলেন না এবং প্রশ্রয় দিলেন সেই প্রশ্নও ছোড়া উচিত বলে উল্লেখ করেন তুহিন।

টিএই/এফএ