নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৪ পিএম
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শেষ হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ। ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন দলটির লাখ লাখ নেতাকর্মী। তারই জেরে আবারও তীব্র যানজটের কবলে পড়েছে পুরো ঢাকা শহর। রাজধানীবাসীর ভোগান্তি উঠেছে চরমে।
সমাবেশ শেষে কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ ভ্যানে, কেউ আবার বাসে করে ফিরছেন গন্তব্যে। তারা বেশিরভাগই দলীয় পোশাক ও মাথায় টুপি পরিহিত। রমনা পার্ক, শাহবাগ, টিএসসি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কর্মীরা ক্লান্ত হলেও উজ্জীবিত চিত্তে সমাবেশের বার্তা নিয়ে ফিরছেন।
নেতাকর্মীদের অনেকেই জানিয়েছেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন এবং একইভাবে ঘরে ফিরছেন। তবে যানজট ও গণপরিবহনের সংকটে কিছুটা ভোগান্তির কথাও শোনা গেছে তাদের মুখে।

এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জামায়াতের এই জাতীয় সমাবেশের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, বাংলামোটরসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে।
একইভাবে রমনা থেকে মৎস্য ভবন হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তোপখানা রোড, পুরানা পল্টন, গুলিস্তান, দক্ষিণ দিকে চানখাঁরপুল এলাকায়ও দীর্ঘ সময় যানবাহন সড়কে আটকে রয়েছে। এছাড়া কাকরাইল মোড় থেকে তেজগাঁও রোডেও যানজট দেখা গেছে।
শুধু রাজধানীর সড়কগুলোই নয়, মেট্রোরেলেও একই দৃশ্য। শাহবাগ, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, টিএসসি, সচিবালয় স্টেশনে যাত্রীদের তীব্র চাপ। এতে স্বাভাবিক চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

কারওয়ান বাজার স্টেশনে দেখা হয় আরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাস, রাইড শেয়ারিং কিছুই চলতে পারছে না। পুরো রাস্তা ব্লক। তাই মেট্রো স্টেশনে এসেছি। মতিঝিল যাবো, কিন্তু ট্রেনে উঠার মতো জায়গা পাচ্ছি না।’
এদিকে বাংলামোটর এলাকায় একটি ছোট পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়। তাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘মেট্রো স্টেশনে ভিড় দেখে নিচে চলে এসেছি। সিএনজিও পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়ে হেঁটে যাচ্ছি।’
মিরপুরগামী জব্বার হোসেন বলেন, ‘কোনো গাড়ি যেতে পারছে না। তাই বাধ্য হয়ে হেঁটেই যাচ্ছি। বিজয় সরণী গেলে হয়তো যানজট কম হবে। সেখানে গিয়ে গাড়িতে উঠবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘এসব সমাবেশ রাজধানীর পাশে কোনো জায়গায় করলে ভালো হয়। শহরের ভেতরে হলে নিজেদের কাজে বের হয়ে আমাদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।’
এর আগে ভোর থেকে যখন সমাবেশের উদ্দেশে জামায়াতের নেতাকর্মীরা প্রচুর যানবাহন নিয়ে ঢাকায় ঢুকতে শুরু করে তখনও ব্যাপক যানজটের কবলে পড়ে শহর। দুপুর পর্যন্ত ছিল সেই যানজটের তীব্রতা। এরপর সমাবেশ শুরু হলে কিছুটা স্বস্তি ফেরে।
এদিকে এই সমাবেশকে ঘিরে যে শহরে তীব্র যানজট এবং ভোগান্তি হবে, সেই আশঙ্কা করে আগেভাগেই নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে নগরবাসীর কাছে দুঃখপ্রকাশ করে জামায়াত। গতকাল দুঃখপ্রকাশ করেন দলটির শীর্ষ নেতারাও।
এএসএল/এমআর/এএইচ