নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছাত্রদের নেতৃত্বে হলেও বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জোরালো সম্পৃক্ততা এর সঙ্গে ছিল। তবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের বছর না পেরোতেই রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে চরম বিভক্তি ও অনৈক্যের পরিবেশ। বিশেষ করে জোটবদ্ধ হয়ে দীর্ঘদিন পথচলা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিরোধ এখন প্রকাশ্যে এসেছে।
এ ব্যাপারে জাতীয় সমাবেশে আসা জামায়াতে ইসলামীর তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করলে তারা জানান, বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় সাধারণ জনগণ বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি খুঁজছে। এ অবস্থায় জামায়াত যদি গণসংযোগ বাড়িয়ে রাজনৈতিক ভিন্নমতগুলোকে সম্মান দেখিয়ে সামনে এগোতে পারে, তাহলে সংগঠনের জন্য এটি হতে পারে একটি নতুন সুযোগ। তারা বলছেন, দলগুলোর মধ্যে কিছু বিরোধ দেখা যাচ্ছে। তবে আমরা হাসিনা ইস্যুতে সবাই এক হয়ে যাবো।
শনিবার (১৯ জুলাই) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে কয়েকজন তৃণমূল নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা হয়। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা জামায়াতের ইউনিটের দায়িত্বে থাকা আবু হানিফ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আসলে দেখেন একেকটা রাজনৈতিক দল একেক মতাদর্শ। মতপার্থক্য থাকাটা স্বাভাবিক। মূলত বিরোধ হলো নির্বাচন প্রক্রিয়া ও সময় নিয়ে। আমরা মৌলিক সংস্কার চাই, তারপর নির্বাচন চাই। কারণ সংস্কার না হলে আমাদের রাজনৈতিক ভাগ্য পরিবর্তন হবে। রাষ্ট্রের দুর্নীতি কমবে না। জনগণ শান্তি পাবে না।’

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থেকে আসা জামায়াতের রোকন সামিউল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, বিএনপি আমাদের ভাই। আমরা প্রকাশ্যে তাদের বিরোধিতা করতে চাই না। এতে জাতীয় ঐক্য নষ্ট হবে। আমাদের সবার উচিত জুলাই আকাঙ্ক্ষা লালন করা। জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধ থাকলেও তৃণমূলে তেমন প্রভাব পড়ছে না। কারণ আমরা একই এলাকা, একই গ্রামের লোক।’
হাতিরঝিল জামায়াতের অপর কর্মী মাইদুর রহমান বলেন, ‘আমরা জুলাই আন্দোলনকে বিক্রি হতে দেব না। বিএনপি দেখছে দিন দিন তাদের জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে জামায়াত ও এনসিপির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এটা সহ্য করতে না পেরে বিএনপি চায় দ্রুত নির্বাচন। তবে আমাদের কথা হচ্ছে নির্বাচন যখনই হোক না কেন আমরা মৌলিক সংস্কার চাই।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের এক সদস্য বলেন, ‘আমরা মাঠে কাজ করি, কিন্তু অনেক সময় উপরের নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। তাতে কর্মীদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়।’
এমআর/জেবি