images

রাজনীতি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞাকে সাধুবাদ বিএনপির

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

১১ মে ২০২৫, ০১:২৯ পিএম

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার উদ্যোগ এবং দলটির কার্যক্রমের ওপর অন্তর্বর্তী সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটাকে সাধুবাদ জানায় বিএনপি।

রোববার (১১ মে) দুপুরে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ এই কথা জানিয়েছেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ ইজ নো মোর পলিটিক্যাল পার্টি। আওয়ামী লীগ একটা মাফিয়া পার্টি, এটা একটা ফ্যাসিবাদী দল। সুতরাং রাজনৈতিক তকমা দিতে চাই না। আওয়ামী লীগের ডিএনএতেই গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের চর্চা নেই।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমার মনে হয় এজন্য সরকারকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কিছুটা সংশোধনী আনতে হবে। কারণ এই আইনে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের কথা বলা আছে। এখানে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়টি উল্লেখ নেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে কি এখন পৃথিবী স্বীকৃতি দেয়? দেশের মানুষ কি স্বীকৃতি দেয়? আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি, আওয়ামী লীগ একটি মাফিয়াতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদ ও মাফিয়া তন্ত্রের চর্চা করেছে বাংলাদেশের মানুষের ওপরে। তাদের অত্যাচার, নিপীড়ন, গণহত্যার মধ্য দিয়ে তাদের পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা শাহবাগে কেন যাবো? আমরা তো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে লিখিতভাবে কয়েক মাস আগে প্রধান উপদেষ্টাকে দিয়েছি, মৌখিকভাবে বলেছি, বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বক্তব্য রেখেছি। আমাদের শাহবাগে গিয়ে এ কথা বলতে হবে কেন? তখন প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি যদি আমলে নিতেন তাহলে গত ২ দিনের (আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলন) বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।

সারাদেশের মানুষ আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তার জন্য আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছি যেন আগামী নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করেন শিগগিরই। না হলে এ রকম বিব্রতকর পরিস্থিতি আরও সৃষ্টি হতে পারে।

আরও পড়ুন

রাজনৈতিক দলের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ

নিজামীর ফাঁসির রাতেই আ.লীগের ‘মরণযাত্রা’!

এর আগে গতকাল শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সবধরনের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত হয়। ছাত্র-জনতার জোরালো আন্দোলনের মুখে সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক শেষে রাত ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। 

আইন উপদেষ্টা লিখিত বক্তব্যে বলেন, আজ শনিবার, ১০ মে ২০২৫ তারিখে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেস-সহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, এর পাশাপাশি আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে। 

বিইউ/জেবি