images

রাজনীতি

ক্ষমতায় থাকি বা না থাকি আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে: ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

০৪ মে ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম

ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক বিএনপি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে থাকবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (৪ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষ্যে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে সম্পাদক পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। এতে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকরা অংশ নেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নির্দ্বিধায় দৃঢ়চিত্তে স্পষ্ট করে বলতে পারি, আমরা বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতে থাকব … সে গভর্মেন্টে থাকি আর না থাকি সেখানেই থাকি… এই ব্যাপারে আপনাদেরকে আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারি। তবে আমরা আপনাদেরকে নিশ্চিত করতে পারি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি শুধু নয় এটা আমাদের বিশ্বাস, আস্থা এবং এটাকে আমরা যদি কখনো সুযোগ পাই সরকারিভাবে সেখানেও আমরা এটাকে স্টাবলিস করবো, না পেলে বিরোধী দলে থাকলে সেখানেও আমরা এটাকে স্টাবলিস করার জন্য লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাবো।’

একই সঙ্গে গণমাধ্যমের ওপর অতীতে নিপীড়ন নির্যাতন এবং বিভিন্ন কালা-কানুনের বিরুদ্ধে দলের শক্ত অবস্থানের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ব্যাপারে আমরা লড়াই করে চলেছি, এখনো করছি। খুবই স্পষ্ট ভাষায় দৃঢ়ভাষায় আমরা বলতে চাই, আমরা কখনোই অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেওয়ার যে ব্যাপারটা আছে সেটা আমরা সমর্থন করব না।’

সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়টি ২০১৬ সালে ঘোষিত ‘ভিশন-২০৩০’২০২৩ সালে প্রণীত ৩১ দফার রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে সংস্কার কর্মসূচিতে রয়েছে বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব।

‘দেশে সংস্কার শুরু করেছে বিএনপিই’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে একরকম প্রচারণা চালানো হয় যে, আমরা নাকি সংস্কারের বিরুদ্ধে… প্রায় বলা হয় আমরা সংস্কার না নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কার বিষয়টা শুরু হয়েছে আমাদের দ্বারা। আমরাই একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসনব্যবস্থায় গেছি, আমরাই আপনার পার্লামেন্টারি ফ্রম অব গভার্মেন্টে গেছি প্রেসিডেন্ট ফ্রম অব  গভার্মেন্ট থেকে, আমাদের অনেক আপত্তি সত্ত্বেও আমরা কেয়ারটেকার গভমেন্টকে সংবিধানে নিয়ে এসেছি… এগুলো বাস্তবতা।’

আরও পড়ুন

সবচেয়ে নিরাপদ ও নির্ভরশীল দল হচ্ছে বিএনপি: মির্জা ফখরুল 

সংগ্রাম শেষ হয়নি, সর্তক থাকুন: মির্জা ফখরুল

‘এই বাস্তবতা থেকে অযথাই আমাদেরকে আবার প্রশ্নবিদ্ধ করে অন্য পথে দেখানোর চেষ্টাকরা এটার  পেছনে কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চারটি সংবাদপত্র ছাড়া সমস্ত সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব যখন ক্ষমতায় এলেন তিনি নিষিদ্ধ সংবাদপত্রগুলো চালু করেছেন, স্বাধীনতা দিয়েছেন। আমরা বলি না যে, আমরা একেবারেই ধুয়া তুলসি পাতা। কিন্তু এই কথা নিঃসন্দেহে বলতে পারি যে, আমরা নিঃসন্দেহে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার স্বাধীনতার জন্য অনেক বেশি কাজ করেছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটা ট্রানজিশনাল পিরিয়ডে আছি। অনেক রকম ঘটনা চলছে, অনেক রকম টানা হেঁচড়া চলছে। তবে একটা কথা কি? গণতন্ত্র যদি আমরা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করতে চাই গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে, চিন্তা-ভাবনাগুলোকে গণতান্ত্রিক করতে হবে। আমি মনের মধ্যে যা বলব সেটাই সঠিক তাহলে আমরা সেভাবে গণতন্ত্রকে চর্চা করতে সক্ষম হবো না।’

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের সভাপতিত্বে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল কবির, কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ বক্তব্য দেন।

এই অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দিন, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলীসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

বিইউ/জেবি