জেলা প্রতিনিধি
৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দিতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনূসকে অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অনেক ঘটনা ঘটছে। যত দেরি করবেন এই ঘটনাগুলো ক্ষতি করবে দেশের। তাই দেরি না করে নির্বাচনটা তাড়াতাড়ি করে দেন, তাতে সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মুন্সিরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত গণসংযোগে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা কথা বলার ও পত্র-পত্রিকায় লেখার স্বাধীনতা চাই। দল করার স্বাধীনতা দিতে হবে। বিএনপি করলে আমার চাকরি হবে না, এই ব্যবস্থা আমরা চাই না। আমরা স্বাধীন বিচারব্যবস্থা চাই। সরকারের কথা শুনে যেন বিচারের রায় না দেয়, এমন একটা বিচার ব্যবস্থা চাই। তাই সরকারকে অনুরোধ করে বলছি, আপনি এগুলো তাড়াতাড়ি করেন। তাড়াতাড়ি করলে জনগণ ভোট দিয়ে তারা নিজস্ব সরকার গঠন করবে।’
ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'আপনি যতই বলেন, আপনাকে তো আর জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেনি। তাই এখন জনগণ চায় তারা ভোট দিয়ে তাদের লোককে নির্বাচিত করতে। তারা ভোট দিতে চায়। সেই ব্যবস্থাটা একটু তাড়াতাড়ি করেন। আর যত দেরি করবেন ততই হাসিনা ফেসবুক ইউটিউব ও ফোন করে বলবে, আমি আসতেছি আবার।'

শেখ হাসিনা সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, 'ভারতকে বলা হচ্ছে হাসিনাকে ফেরত দিতে। ওই হাসিনা ছাত্র-জনতাকে মেরেছে। তার বিচার করা হবে। মা-বোনদের সম্ভ্রম নষ্ট করেছে। তার জবাবদিহিতা করতে হবে। রাষ্ট্র এমনি এমনি চলে না। যে রাষ্ট্র চালায় তার মন বিশাল হতে হবে। সবাইকে সমানভাবে দেখতে হবে। ভালোবাসতে হবে। হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা যাবে না।’
প্রমাণিত হয়ে গেছে এদেশের মানুষের প্রতি হাসিনার কোনো দয়ামায়া নেই উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো অনেক মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। কই আমরা তো পালিয়ে যাইনি। খালেদা জিয়া ছয় বছর জেল খেটেছেন, কই তিনি তো পালিয়ে যাননি। আমি ১১ বার জেল খেটেছি। বাড়ি থেকে রাস্তা থেকে পুলিশ এসে নিয়ে গেছে, কিন্তু পালিয়ে যাইনি। কারণ আমরা রাজনীতি করেছি, চুরি করিনি।’
তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা দয়া করে বিভ্রান্ত হবেন না, আমরা সবাই এক। আমরা হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম খ্রিষ্টান সবাই মিলে এই দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলবো। গণতান্ত্রিক দেশ তৈরি করব। শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে যুবকদের চাকরির ব্যবস্থা করবো। কৃষকদের কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্যের ব্যবস্থা আমরা করব। শ্রমিকরা যাতে ন্যায্য পারিশ্রমিক পায় সেই ব্যবস্থা করব ইনশাল্লাহ।’

বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, আগামী মাসের ৪/৫ তারিখে তিনি দেশে আসবেন। আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। এরপর তারেক রহমান সাহেবও আসবেন। পরে আমরা নেতৃবৃন্দের সাথে নিয়ে নির্বাচনকে সুন্দর করে তৈরি করে একটা পার্লামেন্ট গঠন করব ও সুন্দর দেশ তৈরি করব। এই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে সবাই একযোগে একসাথে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে কিসমত কেশুরবাড়ী লক্ষ্মীর হাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের সাথে মতবিনিময় সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুর ইসলাম আলমগীর ভাগকে ভয়ঙ্কর বলে আখ্যায়িত করে বলেছেন, আমরা হিন্দু-মুসলমান ভাগ হব না।
আরও পড়ুন
ফখরুল বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি তারা কাউকে নৌকা আর কাউকে ধানের শীষে ভাগ করেছি। হিন্দু-মুসলমানে ভাগ করেছি। এ ভাগ খুব ভয়ংকর। আমরা কখনো হিন্দু-মুসলমান ভাগ হব না ৷ আপনার ভোট আপনি দেবেন, যাকে খুশি তাকে দেবেন।
এসময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনসহ জেলা বিএনপির অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধি/জেবি