images

রাজনীতি

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনাসহ ১৯ দফা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ মার্চ ২০২৫, ০২:৩০ পিএম

images

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনাসহ ১৯ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সিটিজেন পার্টি (বিসিপি)। সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে প্রেসক্লাবে আয়জিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। 

তাদের দাবিগুলো হলো-

১. গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরবদ্ধারে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি 'নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার' গঠনের মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
২. বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা, পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাস ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
৩. দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ নারী, তাদের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ গুরত্ব দিয়ে সকল রাষ্ট্রীয় নীতির পুনর্বিন্যাস করা হবে।
৪. দেশে স্বাধীন বিকাশ অনুকূল, মর্যাদাপূর্ণ পরিস্থিতি ও ভীতিহীন পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে, যাতে বিশাল সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর শাসনেও কেউ অস্বস্তি বোধ না করেন।
৫. শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিমূলক সরকার ও গণপ্রতিনিধিত্বশীল কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় গঠনতান্ত্রিক সংস্কার সম্পন্ন করা। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধন করা।
৬. স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম শক্তিশালী দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন, দুর্নীতি প্রতিরোধকে রাজনৈতিক অগ্রাধিকার দেয়া এবং দুর্নীতিবাজদের সামাজিক ভাবে বর্জনের সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
৭. বাক, ব্যক্তি, চিন্তা ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্ত সাংবাদিকতার সুরক্ষায় ডিজিট্যাল নিরাপত্তা আইন, অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্টের মতো সব দমন ও নিপীড়নমূলক গণবিরোধী আইন বাতিল করা। নাগরিকদের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা।
৮. বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার ও মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থন প্রদানকারী, দুর্নীতি ও ঋণের ফাঁদে জড়াবে না। অর্থনৈতিক সহযোগীতাকারী, সামরিক জোট ভুক্ত করতে চাপ দেবে না তেমন রাষ্ট্র, সমতা ও বহুমাত্রিক বহুদেশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতার উদার নীতিতে সৎভাবে বিশ্বাসীদের সাথে চলার বন্ধুত্বাভিমুখী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা হবে।
৯. মৌলিক অধিকারহীন স্বাধীনতা এবং জনগণের ভরসা হারানো সার্বভৌমত্বকে আপন মহিমায় পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য স্বদেশপন্থী দৃঢ় এক প্রতিরক্ষা নীতি প্রনয়ণ করে, তা কঠোর ভাবে পালন করা। ১০. প্রাণবৈচিত্র, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও খাদ্য নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কৃষি, শিল্পায়ন এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস করা।
১১. শিল্প ও ব্যবসা উদ্ভাবন, নতুন উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা বিকাশের পথের বাধা সমূহ সরিয়ে দেয়া; সবার জন্য সমান সুযোগ ও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা। উৎপাদনমুখী ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পের বিকাশকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
১২. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লুটপাট বন্ধ, খেলাপি ঋণ উদ্ধার ও প্রাতিষ্ঠানিক শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে সৎ, সাহসী ও যোগ্য নাগরিকদের সমন্বয়ে স্বাধীন জাতীয় কমিশন গঠন করা।
১৩. শ্রমিকের কাজের পরিবেশ, চাকরির নিরাপত্তা এবং সংগঠন করার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান শ্রমআইন সংশোধন করা। শ্রমিকের ওপর দমন-পীড়ন, হামলা ও হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করা।
১৪. জনশক্তি রপ্তানিকারক, তাদের নিয়োজিত দালাল এবং জনপ্রশাসন ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বিভিন্নবাহিনীর দৌরাত্ব, প্রতারণা ও কমিশন বাণিজ্য বন্ধ করা। সক্ষম ও উৎসাহী তরুণ-তরুণীকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় ভাষাশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে নিরাপদ ও সম্মানজনক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
১৫. দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে চতুর্থ শিল্পবিপ-ব উপযোগী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর কর্মমুখী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা। এ লক্ষ্যে মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রসারে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং তা সম্পূর্ণ অবৈতনিক করে দেওয়া।
১৬. বেকারত্ব নিরসন ও প্রত্যেক পরিবারে অন্তত একজনের চাকরি নিশ্চিত করতে জাতীয় কর্মসৃজন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা।
১৭. পরিবহন আইনের আমূল সংস্কার ও বিআরটিএ-এর পুনর্গঠন করা। সড়ক, নৌ ও রেলপথে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে টেকসই ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
১৮. জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে সবার জন্য সুলভ, নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
১৯. প্রাণ-প্রকৃতির সুরক্ষা, দুর্যোগ মোকাবিলা ও দূষণ রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা। নদী, খাল, বিল, হাওর, জলাশয় সহ বেদখল হওয়া সরকারি সকল ভূমি দখল মুক্ত করা। 

সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য দাবিগুলো উপস্থাপন করেন দলটির চেয়ারম্যান ড. আসলাম আল মেহেদী। অনুষ্ঠানে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

এএসল/ইএ