images

রাজনীতি

‘আ.লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারে আপস করবে না গণঅধিকার পরিষদ’

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:১৬ পিএম

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, গণহত্যার বিচার এবং দোষীদের গ্রেফতারের বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদ কোনো আপস করবে না বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে একের পর এক আন্দোলন সরকারের স্থিতিশীলতার পথে বাধার সৃষ্টি করছে। এর ধারাবাহিকতায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি দেশের বিভিন্ন স্থানে বুলডোজার দিয়ে ধানমন্ডি ৩২ সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাড়িঘরে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগের কোনো সদস্য ছিল না, তবে সরকার এবং প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থায় আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী সদস্যরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। সরকারের দুর্বলতা এবং এসব ঘটনা সরকারের প্রত্যক্ষ সহায়তা বা পুরোপুরি ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়।’

তিনি বলেন, ‘এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক মহলে নেতিবাচক বার্তা গেছে, যা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।’

গণঅধিকার পরিষদের নেতা আরও বলেন, গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু হয়েছে, কিন্তু সেনাবাহিনীর কাছে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের অবস্থান এখনও অজানা। ‘ওবায়দুল কাদের কেন গ্রেফতার করা হয়নি, ৩ মাস নিরাপদে অবস্থান করার পরেও?‘—এ প্রশ্ন তুলেছেন রাশেদ খাঁন। তিনি বলেন, অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে যেন শুধুমাত্র অপরাধীরা গ্রেফতার হন, সাধারণ কর্মী বা সমর্থকরা যেন হয়রানির শিকার না হন, এমন দাবি জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়নি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সরকার ভ্যাট বাড়িয়ে জনগণের পেটে লাথি মারছে। সামনে রমজান, সরকারের উচিত দ্রব্যমূল্য, লোডশেডিং এবং গ্যাসের সংকটের দিকে গভীর মনোযোগ দেওয়া।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গণঅধিকার পরিষদ আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি, বিকেল সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এছাড়া ১২ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী লিফলেট বিতরণ এবং গণসংযোগ কর্মসূচি পরিচালনা করবে। ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলায় জেলায় ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।

গণঅধিকার পরিষদ তাদের ৫ দফা দাবি তুলে ধরেছে—
১. জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিগত ১৬ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আহত, ক্ষতিগ্রস্ত এবং শহীদদের সঠিক তালিকা তৈরি, ক্ষতিপূরণ, যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন।
২. জুলাই গণহত্যায় জড়িত বিদেশে পলাতক গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনাসহ সকলকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা এবং তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।
৩. ফ্যাসিবাদী আমলে অর্থ পাচার এবং লুটপাটে জড়িতদের গ্রেফতার এবং বিচার নিশ্চিত করা।
৪. রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে কার্যকর সংস্কারের জন্য অভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা।
৫. ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুন এবং ভুয়া নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা।

এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ও উচ্চতর পরিষদ সদস্য ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, হাবিবুর রহমান রিজু, সহ-সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ জিলু খান, আবদুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, যুব ক্রীড়া সম্পাদক ইলিয়াস মিয়া, যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এমই/এইউ