নিজস্ব প্রতিবেদক
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৯ পিএম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ও নিবন্ধন স্থগিত করেনি। তারা জনগণের আবেগ নিয়ে খেলছে। এভাবে চলতে থাকলে তারা ব্যর্থ হবে। আর তারা ব্যর্থ হলে আ.লীগ আবার ফিরে আসবে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। বিমান টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রবাসীরা গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তারা রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করায়, হাসিনার গদি কেঁপে ওঠে। মধ্যপ্রাচ্যে ৫৭ জন প্রবাসী গ্রেফতারও হয়। কিন্তু এর বিনিময়ে তারা কী পেয়েছে? তাদেরকে সরকার ঠিকঠাক মূল্যায়ন করেনি। সৌদি আরবের বিমান ভাড়া এতো বাড়লো কেন? সিন্ডিকেট ধরলে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণহত্যার বিচার করতে পারছে না, আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারকে ধরতে পারছে না। তারা এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। তারা এখন বিল্ডিং ভাঙা শুরু করেছে, কিন্তু কখন আ.লীগ পালিয়ে যাওয়ার পর। বিষয়টা এমন যে, চোর পালানোর পর বুদ্ধি বাড়ে। এখনো সচিবালয়ে আ.লীগ, পুলিশ-প্রশাসন-র্যাব-বিজিবিতে আ.লীগ।
গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফারুক হাসান বলেন, বিমান টিকিটের দাম কমানোর জন্য ট্রাভেল ট্যাক্স, এক্সাইজ ডিউটি, জেট ফুয়েলের দাম, ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জসহ সকল অপ্রয়োজনীয় চার্জ প্রত্যাহারের করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও ইউরোপগামী ফ্লাইটের টিকিটের দাম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা প্রবাসী কর্মীদের জন্য ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে। অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে বহু কর্মী বিদেশে যেতে পারছেন না, যা তাদের জীবিকা এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইটের টিকিটের মূল্য প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় প্রবাসী কর্মীরা বাধ্য হয়ে জমি বিক্রি করে বা উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে টিকিট কিনছেন। বিশেষত, মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বাংলাদেশিদের জন্য এই সংকট আরও তীব্র।
বিভিন্ন এয়ারলাইন্স দাবি করছে, অতিরিক্ত ট্রাভেল ট্যাক্স, এক্সাইজ ডিউটি, জেট ফুয়েলের অস্বাভাবিক মূল্য, সিভিল এভিয়েশনের ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একক গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং চার্জ—এইসব কারণে বিমান ভাড়া বেড়েছে।
মানববন্ধনে বিমান টিকিটের দাম কমানোর জন্য বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ চার দাবি পেশ করেন।
তাদের দাবিগুলো হলো-
১. আগামী সাত দিনের মধ্য বিমান টিকিটের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে হবে ও দাম কমাতে হবে।
২. ট্রাভেল ট্যাক্স, এক্সাইজ ডিউটি, জেট ফুয়েলের দাম, ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জসহ সকল অপ্রয়োজনীয় চার্জ প্রত্যাহার করতে হবে।
৩. বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি অন্যান্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৪. টিকিটের দাম স্থিতিশীল রাখতে একটি বিমান টিকিট রেগুলেটরি বোর্ড গঠন করতে হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, আব্দুর জাহের, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রবাসী অধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন শাহাব উদ্দিন শিহাব। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য আসিফ আহমেদ জনি।
মানববন্ধনে আরও ছিলেন- বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ। তাদের মধ্যে লিমন খান, সম্রাট আহমেদ, হাবিব আহমেদ, নয়ন খান কবির, জাকির খান, রাকিবুল হাসান, গোলাম রব্বানী, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ ছিলেন।
এমআর