কাজী রফিক
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ পিএম
সরকার পতনের পর দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি বড় অংশ। আবার অনেকেই এখনও রয়েছেন দেশে। দেশে-বিদেশে অবস্থানরত এসব নেতাকে আসামি করে কয়েকশ মামলা এরইমধ্যে করা হয়েছে। একদিকে থানা, আরেকদিকে আদালতে করা হচ্ছে একের পর এক মামলা। এ কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে। তবে তাতে খুব একটা ভ্রুক্ষেপ নেই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাদেরই।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল— সব স্তরের আওয়ামী লীগ নেতারা গা ঢাকা দেয়। অনেক খুঁজেও তাদের দেখা মেলেনি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জানা গেছে, কেউ বৈধ, কেউবা অবৈধ পথে দেশ ছেড়েছেন। আবার দেশ ছাড়তে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরাও পড়েছেন অনেকে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই এরইমধ্যে দেশ ছাড়তে পেরেছেন৷ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারাও দেশে নেই। স্থানীয় নেতা, জনপ্রতিনিধিদেরও অনেকেই প্রবাসে।
দেশে এবং বিদেশে অবস্থান করা এসব নেতার বেশিরভাগকেই শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর করা বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের অনেকেই ডজন খানেক মামলায়ও আসামি হয়েছেন।
ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা এসব ‘মামলা টিকবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের একজন নেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, মামলা তো দিয়েছে, দিচ্ছে৷ এসব মামলায় গড়পড়তা সবাইকে আসামি করা হচ্ছে৷ এসব মামলা টিকবে না, এটা সবাই জানে। এগুলো হচ্ছে আমাদেরকে মাঠ থেকে দূরে রাখার একটা কৌশল।
একই ধারণা পোষণ করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের একজন জনপ্রতিনিধি।
তিনি বলেন, কিছু মামলার কাগজ তো দেখেছি। যে যেখানে ছিল না, সেখানেও তাকে আসামি করা হয়েছে। একেক মামলায় আসামি করা হয়েছে ৭০-৮০ জনকে৷ টপ-টু-বটম সবাই আসামি। এগুলো যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা তা সবার কাছেই স্পষ্ট। টার্গেট করে এসব মামলা সাজানো হচ্ছে— এটাও সবাই বুঝে। আমরা তাদের এই মামলার রাজনীতি নিয়ে চিন্তিত না।
৫ আগস্টের পর দেশের সীমানা পেরিয়ে ভারতে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগের সহযোগী এক সংগঠনের মহানগর পর্যায়ের এক নেতা। ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এখন মামলা হচ্ছে, হবে, এটা স্বাভাবিক। তারা চাচ্ছে, আমাদেরকে মামলার ভয় দেখিয়ে দূরে রাখা। এতে আমরা চিন্তিত না।
এদিকে দেশে অবস্থান করা নেতাদের অনেকেই মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নিস্ক্রিয় থাকার দায়ে বেশকিছু কমিটি বাতিল করে আওয়ামী লীগ। সেই পদ হারানো নেতাদেরও অনেকে মামলার আসামি।
সম্পৃক্ত না থেকেও মামলার আসামি হয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন এক নেতা। তিনি বলেন, আন্দোলনের আগে আমি ও আমার নেতারা নিস্ক্রিয় ছিল। কমিটি ভেঙে দিল। যখন কমিটি নাই, তখন আমরা মাঠে থাকব কেন? ছিলাম না। তারপরও আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে৷ এখন নিজের বাসায় থাকতে পারি না।
কারই/জেএম