images

রাজনীতি

৪৭ বছরে বিএনপি: সুবর্ণ সুযোগের মধ্যেও আছে শঙ্কা

বোরহান উদ্দিন

০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ এএম

• অপরাধে জড়ানো কর্মীদের ঠেকাতে ঘাম ঝরছে শীর্ষ নেতাদের
• নির্বাচনের রোডম্যাপের ঘোষণা পেতে অপেক্ষায় বাড়ছে দুশ্চিন্তা 
• রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে চায় হাইকমান্ড
• ১৭ বছরে নানামুখী চাপেও নেতাকর্মীদের দল না ছাড়ায় স্বস্তি

প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছরে এসে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতাকর্মীরা অতীতের সবসময়ের চেয়ে যেন স্বস্তিতে দিন কাটাচ্ছেন। কারণ আওয়ামী লীগের টানা চার মেয়াদে (সাড়ে ১৫ বছর) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতেও বেগ পেতে হয়েছে দলটিকে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর এবার বাধাহীনভাবে পালন করছে ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। 

তবে দেশের উপর দিয়ে যাওয়া আকস্মিক বন্যায় ছন্দপতন ঘটিয়েছে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে অপরাধে জড়ানো নেতাকর্মীদের ঠেকাতে যেন ঘাম ঝরছে হাইকমান্ডের। আবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকার নিয়ে শুরুতে স্বস্তি থাকলেও নির্বাচনের রোডম্যাপ না পাওয়ায় কিছুটা দুশ্চিন্তায়ও আছে বিএনপি। শীর্ষ নেতারা বলতে শুরু করেছেন, নির্বাচন বিলম্ব হলে আবারও ১/১১’র মতো মাইনাস টু ফর্মুলার ফাঁদে পড়তে হতে পারে।

যদিও নানা শঙ্কা, চাপকে সামলে নিয়ে বিএনপি নেতারা মামলা, জেল-জুলুম থেকে কর্মীদের স্বস্তির পরিবেশ করে দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করার আশা করছেন। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনের জন্য দলকে ভালোভাবে প্রস্তুত করার পরিকল্পনা নিয়েও কাজ করছেন। একইসঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে নতুন উদ্যোমে দেশ গঠনে কাজ করার স্বপ্ন বুনছেন সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা।

3

সৃষ্টিকর্তার ওপর পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার অর্থে সমাজতন্ত্র’- এই চারটি মূলনীতির ভিত্তিতে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি নামক রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ৪৬ বছর পরেও নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি। ২০০৬ সালে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দলটি নানা সংকটের মুখেও বিএনপি ভাঙেনি। যেটাকে সবচেয়ে বড় সফলতা হিসেবে দেখছেন নেতা-কর্মীরা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এক শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছেন, এখন গণতন্ত্রকে নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে। আইনের শাসন, মত প্রকাশ, সংবাদ পত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলেই দেড়যুগ ব্যাপী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের আত্মদান সার্থক হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভলগ্নে আমাদের অঙ্গীকার হোক বাংলাদেশকে নিপীড়ন-নির্যাতনসহ সব পৈশাচিকতা মুক্ত একটি সুস্থির-শান্তিময় নাগরিক অধিকার সুরক্ষার দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। দেশজুড়ে যেন আর কখনোই গুম, গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নারী ও শিশুদের ওপর পৈশাচিকতা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, টাকা পাচারের মতো ঘৃণ্য বিভীষিকার পুনরাবৃত্তি না হয়। জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই এখন বিএনপির মূল লক্ষ্য। 

এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন।

বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা জানিয়েছেন, বন্যার কারণে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি সীমিত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত টাকা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তবুও এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বেশ ব্যতিক্রমীভাবেই দেখছেন নেতারা।

4

বিএনপির নেতাদের ভাষ্য গত ১৬ বছর যে নির্যাতন করা হয়েছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের ওপর হয়নি। ফলে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নতুন করে স্বপ্ন দেখার সুযোগ মিলেছে। ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়ার পর অন্তর্বতীকালীন সরকার এসেছে। তাদের কাছে আশা করছি একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করবে। গণতন্ত্রকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে। সেখানে বিএনপিও সাধ্যমত সহযোগিতার চেষ্ঠা করে যাচ্ছে। উদ্দেশ্য এখানে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরি করা।

নেতারা আরও বলছেন, সামনে মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দেশে একটা সংস্কারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যাওয়া। এ ব্যাপারে অন্তর্বতীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করা। পাশাপাশি দৃঢ় জনমত তৈরি করা। সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ হলো- দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দল ও সন্দেহ-সংশয় ও সমন্বয়হীনতা পাশ কাটিয়ে সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকা। সে লক্ষ্যে এরমধ্যেই শুরু করেছে দলটি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চার ইস্যুতে সর্বাধিক মনোযোগ বিএনপির। 

এগুলো হচ্ছে- আন্দোলনে হতাহতদের খোঁজ নেওয়া এবং সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ব্যাপকভিত্তিক ত্রাণ বিতরণ; জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি; নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড জোরদার করা।

7

জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের পরিবার এবং আহতদের খোঁজখবর নিচ্ছে বিএনপি। 

দলটির পেশাজীবী সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) এবং বিশেষ সেল ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। দেশের পূর্বাঞ্চলে হঠাৎ বন্যাদুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো।

বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি শতাধিক আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসার পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতা পৌঁছে দিয়েছেন।

দলটির নীতিনির্ধারকরা ভাষ্যমতে, শেখ হাসিনার পতনের পর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে, উৎফুল্ল মনোভাব তৈরি হয়েছে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দলের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জও দেখা দিয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ডকে। বিশেষ করে দলীয় ট্যাগ ব্যবহার করে কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী চাঁদাবাজিতে নেমেছে; যা দলের জন্য অত্যন্ত অস্বস্তির কারণ।

5

পাশাপাশি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বেশকিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন এলাকায় দখল, চাঁদাবাজি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অবশ্য যে কোনো ধরনের দখল-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। এরই মধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে দুই শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গত ২৯ আগস্ট রংপুর সাংগঠনিক বিভাগের অধীন থাকা জেলাগুলোর নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময় সভায় বিএনপিতে কোনো দুষ্কৃতকারীর ঠাঁই নেই উল্লেখ করেছেন তারেক রহমান।

শুরুতে বিএনপির পক্ষ থেকে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করা হলেও এখন আর নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমার কথা বলছে না বিএনপি। বরং অন্তর্বতী সরকারের করণীয় কী হবে সে বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে দলটির পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে বিএনপি যে বিষয়গুলো সামনে আনছে তা হলো নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর সংস্কার, সাবেক সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনা। বিএনপি বলছে, এসব বিষয়ে সরকারকে দ্রুত কাজ করতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার পথ পরিস্কার করতে চায় দলটির সিনিয়র নেতারা। ফলে কৌশলের অংশ হিসেবে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ‘যৌক্তিক সময়’ দিয়ে এই সময়ের মধ্যে দলের পুনর্গঠন, মামলা প্রত্যাহার এবং বিশেষত: দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসার পথ পরিষ্কার করতে চান নেতারা। একইসঙ্গে অন্তর্বতীকালীন সরকার এবং নির্বাচন নিয়েও নিজস্ব মতামত মতও রয়েছে দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের।

শুরুতে দলটির পক্ষ থেকে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করা হলেও এখন আর নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমার কথা বলছে না বিএনপি। বরং অন্তর্বতী সরকারের করণীয় কী হবে সে বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে দলটির পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে বিএনপি যে বিষয়গুলো সামনে আনছে তা হলো নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর সংস্কার, সাবেক সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনা। বিএনপি বলছে, এসব বিষয়ে সরকারকে দ্রুত কাজ করতে হবে।

6

বিএনপি চেষ্টা করছে, দেশব্যাপী দল গুছিয়ে নির্বাচনের জন্য নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত করতে। এরমধ্যে স্থায়ী কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটিতে কিছু রদবদল হয়েছে। স্থায়ী কমিটিতে নতুন মুখ হিসেবে স্থান পেয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। পাশাপাশি দলটির কারাবন্দী বহু নেতা কারামুক্ত হয়েছেন এবং হচ্ছেন। নেতা-কর্মীদের নামে থাকা মামলা কীভাবে প্রত্যাহার হবে সে বিষয়েও প্রস্তুতিও নিচ্ছে বিএনপি। ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলের তৃণমূল নেতাদের প্রতি নির্দেশনাও দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

নেতা-কর্মীদের নামে থাকা মামলা কীভাবে প্রত্যাহার হবে সে বিষয়েও প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। নেতা-কর্মীদের নামে যে মামলা আছে সেগুলোর সমাধান করে সাংগঠনিক দিক দিয়ে একটা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে দলের ভেতরে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রস্তুতি এবং দলের সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়াতে জেলা নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় শুরু করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রংপুর বিভাগের মধ্য দিয়ে গত ২৯ আগস্ট মতবিনিময় শুরু করেন তিনি। এরপর থেকে নিয়ম করে প্রতিদিনই জেলা ও বিভাগের নেতাদের সঙ্গে নির্বাচন কেন্দ্রিক আলোচনা করছেন তিনি।

সেখানে তিনি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের স্থিতিশলীতা বজায় রেখে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়াও সিনিয়র নেতারা নিয়মিত নিজ এলাকায় গিয়ে কর্মীসভা করছেন। 

এছাড়াও নেতা-কর্মীদের নামে থাকা মামলা কীভাবে প্রত্যাহার হবে সে বিষয়েও প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। নেতা-কর্মীদের নামে যে মামলা আছে সেগুলোর সমাধান করে সাংগঠনিক দিক দিয়ে একটা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে দলের ভেতরে।

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য পনেরো বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি। এই আন্দোলনে আটশত নেতা-কর্মী গুম হয়েছে। হাজার হাজার হত্যা হয়েছে। প্রায় ষাট লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের চেয়ারপারসনকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখনও দেশের বাইরে। এই বিষয়গুলোকে এখন আমাদের একটু নরমাল (স্বাভাবিক) অবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মামলাগুলো আইনিভাবে মোকাবেলা করেই আমরা তাকে ফেরাতে পারবো বলে আশাবাদী।

কী বলছেন বিএনপি নেতারা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ ঢাকা মেইলকে বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী দল। অন্তর্বর্তী সরকার রোডম্যাপ প্রকাশ করার পর আমরা নতুন পরিকল্পনা করব। আশা করবো দ্রুত সেটা ঘোষণা হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের লক্ষ্য থাকবে আমাদের কর্মসূচিকে আরও গণমুখী করা। সে লক্ষ্যে বিএনপি কাজ করছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক ঢাকা মেইলকে বলেন, ১৬ বছর ধরে অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়েছে বিএনপি । তবুও বিক্রি হয়নি দলের নেতাকর্মীরা। এখন আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সময়। মিথ্যা মামলায় শিকার হয়ে আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান দেশে আসতে পারছেন না। আমাদের প্রত্যাশা তারেক রহমান অবশ্যই দেশে আসবেন। আইনজীবীরা তার মামলার বিষয়ে কাজ করছেন। যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে। তিনি সরাসরি রাজনীতির মাঠে ফিরলে দল আরও শক্তিশালী হবে। নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হবে।

নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনেকদিন অপেক্ষা করেছি। প্রয়োজনে আরও অপেক্ষা করবো। আশা করি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের যে প্রত্যাশা সুন্দর বাংলাদেশের সেই পথে হাঁটবে নতুন সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার শেষে অবিলম্বে সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে। তবে সতর্ক থাকতে হবে আবারও যাতে দেশ ১-১১ দিকে না যায়।

ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব কাজী আবুল বাশার ঢাকা মেইলকে বলেন, বিএনপি দেশের জনপ্রিয় ও জনভিত্তিক দল। আমাদের দলে ভাঙনের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সবাই ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। এত চাপের মধ্যেও আমরা টিকে আছি। আশা করি সামনের দিনগুলোতে দেশ গঠনেও আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারবো।

তিনি বলেন, ‘বিদেশে থেকেও তারেক রহমান দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পেরেছেন। এটাই সফলতা। এখন দলকেও আরও সুসংগঠিত করাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। আশা করি সেটা আমরা করতে পারবো। আমরা প্রমাণ করবো আমরা মানুষের পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো।

কর্মসূচি:

বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আজ ১ সেপ্টেম্বর রোববার সকাল ৬টায় ঢাকাসহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা। বেলা ১১টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমর সমাধিতে দলের মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় নেতারা পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।

বাদ জোহর দলীয় কার্যালয়ের সামনে বন্যায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা, সম্প্রতি ছাত্রজনতার আন্দোলনে শহীদ নেতাকর্মীদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা এবং তারেক রহমানের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

বিইউ/এএস