images

রাজনীতি

রোকেয়া প্রাচী ছাড়া দুর্দিনে আ.লীগের পাশে নেই কোনো তারকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ আগস্ট ২০২৪, ০৯:০১ পিএম

আওয়ামী লীগ টানা চার মেয়াদ ক্ষমতায় থাকাকালে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন। ব্যতিক্রম নয় তারকা ও সংস্কৃতিকর্মীরাও। কিন্তু গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কোথাও দেখা মিলছে না সেই তারকাদের। একমাত্র আওয়ামী লীগের হয়ে মাঠে রয়েছেন অভিনেত্রী ও নির্মাতা রোকেয়া প্রাচী। আওয়ামী লীগপন্থী অন্য সংস্কৃতি কর্মীরা কোথায় সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।  

বুধবার (১৪ আগস্ট) ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবন এলাকায় দেখা গেছে রোকেয়া প্রাচীকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন সকালের দিকে তিনি পুড়ে যাওয়া ওই ভবনটি ঘুরে দেখেন। ভবনের নিচে কিছু সময় বসেও থাকেন।

আরও পড়ুন

আওয়ামী লীগের নারী নেত্রীরা কে কোথায়?

এদিন সন্ধ্যায়ও তার নেতৃত্বে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। কর্মসূচি শেষে তার ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে। ২০/৩০ জন যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় এবং এতে রোকেয়া প্রাচী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

Dhanmondi11
ধানমন্ডিতে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হন রোকেয়া প্রাচী। ছবি: সংগৃহীত

মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচিতে রোকেয়া প্রাচী বলেন, 'আজ আমরা সবাই এখানে একত্রিত হয়েছি, কারণ বাংলাদেশ পুড়েছে। আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি, কারণ আমাদের ১৯৭১ পুড়েছে। আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি, কারণ আমাদের বঙ্গবন্ধুর ছবি পুড়েছে, ধানমন্ডি ৩২ পুড়েছে৷ আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি, বাংলাদেশ পুড়েছে বলে। আমরা এখানে কোনো রাজনীতির কথা বলতে আসিনি। বাংলাদেশ আমাদের সবার।'

এই অভিনেত্রী বলেন, 'আমরা এখানে শোক প্রকাশ করতে এসেছি শান্তিপূর্ণভাবে। আমরা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা করি। তিনি আমাদের জন্য এই বাংলাদেশ দিয়েছেন, সংবিধান দিয়েছেন। এই বত্রিশ নম্বর যখন পুড়েছে তখন আমাদের মনে হয়েছে আমরা পুড়েছি। আমরা ধানমন্ডি ৩২ এ দাঁড়িয়ে সারাবিশ্বের এই মহানায়কের কাছে ক্ষমা চাইছি, আমরা লজ্জিত, বাঙালি জাতি আজ লজ্জিত।'

আরও পড়ুন

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে রোকেয়া প্রাচীর ওপর হামলা

এর আগে গত সোমবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে রোকেয়া প্রাচী লিখেন, ‘আমরা জেগে উঠবো এই ধ্বংস থেকে, জেগে উঠবো আগুনে পোড়া ৩২ এর এই ঘর থেকে, জেগে উঠবো নিভে যাওয়া ছাই থেকে, জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভেবেছ সব সাহস পুড়েছে? পুড়েছ তোমরা। আমরা বাঙালি এই ছাইভস্ম থেকেই উঠবো আবার আগুন হয়ে জেগে! জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

Dhanmondi14
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবন্ধু ভবন। ছবি: ঢাকা মেইল

রোকেয়া প্রাচীকে সরব দেখা গেলেও খোঁজ নেই আওয়ামী লীগপন্থী বাকি সংস্কৃতি কর্মী, তারকাদের।

অন্য তারকারা কোথায়?

আওয়ামী লীগের টিকিটে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য হয়েছিলেন অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ। ৫ আগস্টের পর 'হঠাৎ বৃষ্টি' খ্যাত অভিনেতার দেখা নেই।

আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদে সংরক্ষিত আসন বাগিয়ে নিয়েছিলেন সুবর্ণা মোস্তফা। দেখা নেই তারও। নিস্ক্রিয় রয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।

আরও পড়ুন

বঙ্গবন্ধু ভবন এখন ধ্বংসস্তূপ, ইতিহাসের দলিল যাচ্ছে ভাগাড়ে

একাধারে টেলিভিশন অভিনেত্রী, নাট্য পরিচালক, লেখক, আইনজীবী ও সমাজকর্মী তারানা হালিম৷ ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি নির্বাচিত সরকারের সংসদ সদস্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সবশেষ আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে নিয়মিত দেখা গেছে তাকে। তবে ৫ আগস্টের পর তারানা হালিমের কোনো দেখা নেই।

RR
ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবন্ধু ভবনে রোকেয়া প্রাচী। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের ছায়াতলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন নিপুণ আক্তার৷ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়মিত ছিলেন এই অভিনেত্রী। তবে দলের দুঃসময়ে সটকে পড়েছেন তিনি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো অভিনেত্রী তারিনও এখন নিশ্চুপ। ‘ম্যাজিক মামনী' খ্যাত অভিনেত্রী মাহিয়া মাহির কোনো সাড়া-শব্দ নেই।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংরক্ষিত আসনে নৌকাপ্রত্যাশী ছিলেন অভিনেত্রী তানভিন সুইটি, মেহের আফরোজ শাওন, সোহানা সাবা, অপু বিশ্বাস, শাহনূর, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী করসহ অনেকেই। তবে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে কিংবা ৫ আগস্টের পর মাঠে দেখা যায়নি কাউকেই।

কারই/জেবি