নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ জুলাই ২০২৪, ০২:১১ পিএম
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে রাজনীতির উপাদান যুক্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোটা আন্দোলনে পলিটিক্সের উপাদান যুক্ত হয়েছে। আমাদের ডিভাইসিভ পলিটিক্স পোলারাইজড পলিটিক্স এখানে যুক্ত হয়ে গেছে। কারণ বিএনপি প্রকাশ্যে এবং তাদের সমমনারা কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে। তারা সাপোর্ট করেছে প্রকাশ্যেই।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সাপোর্ট করা মানেই তারা এরমধ্যে অংশগ্রহণও করেছে। কাজেই এটা এখন পোলারাইজড পলিটিক্সের ধারার মধ্যেই পড়ে গেছে। এটার পলিটিক্যাল কালার নতুন করে বলার আর অপেক্ষা রাখে না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখানে কারা কারা যুক্ত আছে, কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি না, সেটা যে আন্দোলনের গতিধারা এরমধ্যেই বোঝা যাবে। এই গতিধারার সবকিছু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার হয়ে যাবে। কোন কিছুই হাইড করা সম্ভব হবে না। সেটা আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনিও গতকাল যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কিছু কথা বলেছেন। ওইটাই আমাদের বক্তব্য। প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দেবেন তিনি আমাদের পার্টিরও সভাপতি। সেই বক্তব্যই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বক্তব্য, সরকারের বক্তব্য।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কোটার বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিষয়টি বিচারাধীন এবং আদালত উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে নিশ্চয়ই একটা চূড়ান্ত রায় দেবেন। উচ্চ আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে এবং কোন প্রকার উত্তেজনা ও রাস্তাঘাট বন্ধ করে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি পরিহার করা হোক উচিত। বিশেষত এইচএসসি পরীক্ষার্থী অভিভাবকদের অসুবিধা হয় যে কর্মসূচিতে সে ধরনের কর্মসূচি পরিহার করা দরকার।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে পরিপত্র জারি করে সকল প্রকার কোটা বিলুপ্ত করেছে। এই আদেশের বিরুদ্ধে সাতজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। হাইকোর্ট কোটা বাতিলের পরিপত্রও বাতিল করেছে। সরকারের পক্ষের আইনজীবী রায়ের পক্ষে আপিল করেছে। সরকার কোটা বাতিলের পক্ষে আন্তরিক বলেই এটর্নি জেলারেল আপিল দায়ের করেছেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে সংগ্রাম শুরু করেছে তার মূল চালিকাশক্তি হলো মেধাবী জনগোষ্ঠী। শিক্ষিত দক্ষ স্মার্ট প্রজন্ম গঠনের মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামকে অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছে নিতে মেধাবী তরুণ প্রজন্ম আমাদের প্রধান প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের একটা বিষয় সবার জানা দরকার এর আগে যে কোটা আন্দোলন বাংলাদেশে হয়েছিল সেই কোটা আন্দোলনের প্রথম সারির ৩১ জন নেতা তারা কিন্তু সিভিল সার্ভিস বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। এটার হিসাব আপনারা নিতে পারেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো পলিটিক্যাল পার্টি পৃথিবীর কোনো দেশে আন্দোলনে সামিল হয়েছে? এটা সাবজুডিস। কোন পলিটিক্যাল পার্টি পারে না এভাবে। এটা তো আদালতের রায়। যে বিষয়টা আদালতের এখতিয়ার সে বিষয়টা নিয়ে কথা বলা বা সমালোচনা করা, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা এটা তো আইনসিদ্ধ নয়। আমরা সেটাই বলছি।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর প্রমুখ।
কারই/এমআর