images

রাজনীতি

বারবার খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের পেছনে চালাকি দেখছেন ফখরুল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৭ জুন ২০২৪, ০৪:২৩ পিএম

গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা দীর্ঘায়িত করতেই সরকার সাজা স্থগিতের ‘চালাকি’র আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ অভিযোগ করেন।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।

মানবন্ধনে নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনের সড়কের এক পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনারা জানেন যে, খালেদা জিয়া প্রায় দুই বছরের বেশি জীর্ণ পরিত্যক্ত কারাগারে ছিলেন… তারপরে নিয়ে আসা হয়েছে পিজি হাসপাতালে। সেখানে তিনি কোনো চিকিৎসা পাননি… শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে সাজা স্থগিত করে। এখানে আরেকটা চালাকি আছে… চালাকিটা কি? যেমন আমি বলি না, ছয় মাস ছয় মাস করে সাজা স্থগিত করছে, তার মানে সাজা কিন্তু কমছে না। সেই সাজা আবার গুনতে হবে ভবিষ্যতে যখন তাদের প্রয়োজন হবে… এটা হচ্ছে আরেকটা চালাকি। অর্থাৎ আরও বেশি দীর্ঘায়িত করা হবে।

ফখরুল আরও বলেন, আপনারা জানেন যে, লোয়ার কোর্ট তাকে পাঁচ বছর সাজা দিয়েছিলো। কিন্তু হায়ার কোর্ট সেই সাজা ১০ বছর করেছে। আপনারা জানেন যে, মামলাগুলো একটা সাজানো মামলা ছিলো, মিথ্যা মামলা ছিলো। সেভাবে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্যটা ছিলো, তাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। তাকে সরিয়ে দেওয়া মানে এদেশের জাতীয়াবাদী আন্দোলনে নেতৃত্বকে সরিয়ে দেওয়া, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে সরিয়ে, উন্নয়নের পক্ষের শক্তিকে সরিয়ে দেওয়া। এটা ছোটখাটো ব্যাপার নয়, এটা হচ্ছে একটা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার ব্যাপার।

আরও পড়ুন

‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সেলে যোগ হলেন আরও দুই উপদেষ্টা

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা-নির্যাতনের প্রতিবাদে আন্দোলন করেছি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, ব্যাংক লুটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, আমরা পাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে আন্দোলন করছি, সেটা সম্পূর্ণভাবে সামগ্রিক আন্দোলনের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা আন্দোলন।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আপনারা দেখেছেন, যে সমস্ত চুক্তি করা হয়েছে, সমঝোতা করা হয়েছে সেগুলো বাংলাদেশের পক্ষে নয়। যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে তিনি আবার আমাদেরকে সবক দেন। সবক কি রকম? আমরা নাকি চুক্তি আর সমঝোতার মধ্যে পার্থক্য বুঝি না। আমাদেরকে উনি পড়াশুনা করবার জন্য পরামর্শ দেন। আমি তার কথার গুরুত্ব দিতে চাই। আমি শুধু একটা কথাই বলতে চাই, দেশের সঙ্গে বিদ্রোহ করবেন না, বেঈমানি করবেন না। মানুষকে বোকা বানিয়ে, তাদেরকে ভুল বুঝিয়ে এমন চুক্তি করার সাহস করবেন না, এমন কোনো সমঝোতা স্মারক সই করবেন না যেটা আমার দেশের, আমার জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কি এনেছেন- এমন প্রশ্ন রেখে ফখরুল বলেন, সীমান্তে হত্যা হচ্ছে প্রতিদিন, গতকালও হত্যা হয়েছে। এ বিষয়ে একটা কথা আপনি এই সফরে বলেছেন। আমাদের সরাসরি প্রশ্ন আপনাদের কাছে যে, পৃথিবীর কোনো বন্ধু দেশ আছে? আপনাদের এতো বন্ধুত্ব যে স্বামী-স্ত্রীর বন্ধুত্ব আপনারা বলেন, তাহলে কোন বন্ধু দেশ আছে তার সীমান্তে গুলি করে হত্যা করে তার বন্ধু দেশের মানুষকে। এর জবাব আপনাদের দিতে হবে। আপনারা অনেক কথা বলেছেন। আমি বলি, আপনারা আত্মরক্ষার জন্য যে সমস্ত কথা বলেছেন, এই সমস্ত কথা বলে জনগণকে আর বিভ্রান্ত করা যাবে না।

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও সচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শিরিন সুলতানা, রফিকুল ইসলাম, মীর নেওয়াজ আলী, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ফরিদা ইয়াসমিন, যুব দলের গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিইউ/এমএইচএম