images

রাজনীতি

এবার দিল্লি থেকে খালি হাতে ফিরলে ক্ষমা নেই: ফারুক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২১ জুন ২০২৪, ০৩:১৭ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফর প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদিন ফারুক বলেছেন, ‘সরকারপ্রধান আজকে দিল্লি যাবেন। কী নিয়ে আসবেন সেটা আমরা দেখব। এবার দিল্লি থেকে খালি হাতে এলে দেশের জনগণ আর আপনাকে ক্ষমা করবে না। রাজনৈতিকভাবে আপনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’

শুক্রবার (২১ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

‘ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের মাটির উপর দিয়ে রেললাইন নির্মাণের প্রস্তাবের প্রতিবাদ’ শীর্ষক এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদ।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘আজকে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে সমস্যার সৃষ্টি আপনি করেছেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছেন। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে আপনি ব্যর্থ হয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষকে আপনি তাদের সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। আপনি বাংলাদেশে এমন এক বাজেট দিয়েছেন যে বাজেটে আমি কষ্টার্জিত উপার্জনে ট্যাক্স দেব। আর যারা কোটি কোটি টাকা চুরি করে ১৯ % ট্যাক্স দিয়ে তারা বৈধতা আনবে। তাদের আপনি আমাদের সাথে সমান করে দিয়েছেন। এই লুটেরা সরকার, এই দুর্নীতিবাজ সরকার, এই ইন্ডিয়ান প্রীতি সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ তাদের হিসাব আদায় করে নেবে। আপনার অন্যায় অত্যাচার আর গ্রহণ করবে না।’

সিলেটে চলমান বন্যা পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কাউকে খুশি করার জন্য যদি কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশের অগণিত মানুষকে আজকে পানির পানিতে ডুবিয়ে দিছেন। কোনো ব্যক্তি বিশেষকে খুশি করার জন্য এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে, যা সিলেটের মানুষের জন্য আজ একটি উপহাস হয়ে পড়েছে।’

বাংলাদেশের উপর দিয়ে ভারতীয় রেললাইন নির্মাণের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু। তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের অস্ত্র দিয়েছে। তারা আমাদের প্রতিবেশী। তাই ভারতকে আমরা কোনোদিনও অবজ্ঞা করতে চাই না। কিন্তু ভারতের গণতন্ত্র থাকবে। আর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ভারত সরকার সহযোগিতা না করে যারা দিনের ভোট রাতে করে, তাদের সহযোগিতা করে যাবে, আমাদের ন্যায্য হিস্যা দেবে না, ন্যায্য হিস্যা পেতে গেলে আমাদের সীমান্তে গুলি করে মানুষ মারবে, সে বন্ধু তো বাংলাদেশের মানুষ চায় না। তাই বাংলাদেশের মানুষ আজ বলতে শুরু করেছে, ভারত তুমি আমাদের বন্ধু থাকো। বন্ধু বলে তুমি বাংলাদেশের সব কিছু কেড়ে নিয়ে যাবে, আমাদের ন্যায্য হিস্যা দেবে না, বাংলাদেশের জনগণ গরিব হতে পারে, কিন্তু আমাদের আত্মমর্যাদা অনেক বড়। তাই আপনাদের জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের ন্যায্য হিসাব আপনাদের দিতেই হবে।’

আরও পড়ুন

অর্থনৈতিক দৈন্যতায় সবাই আনন্দের সঙ্গে ঈদ করতে পারেনি: বিএনপি

বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সরকারের উদাসীনতা বিস্ময়কর: রিজভী

ফারুক বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের যে করুণ অবস্থা তার জন্য দায়ী কারা? আপনারা রেললাইন নির্মাণ করবেন আর ক্যানসারের নমুনা পাওয়া পণ্য বাংলাদেশের রফতানি করবেন, বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিনও সেটা গ্রহণ করবে না।’

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ ও ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার সম্পদ অনুসন্ধানের প্রকাশিত সংবাদ সম্পর্কে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কিছুসংখ্যক আমলা, কিছুসংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তা দিয়ে বাংলাদেশে অন্যায়ভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন করার অপচেষ্টা করেছেন। তার প্রমাণ হলো বেনজীর, তার প্রমাণ হলো আজিজ আহমেদ। আজিজ আহমেদ, বেনজীর আহমেদ, আসাদুজ্জামান মিয়া আপনারা এখন কোথায়? আপনারা যাদের বিনা ভোটে এমপি হতে, মন্ত্রী হতে, রাষ্ট্র পরিচালনা করতে সহযোগিতা করেছেন তারাই আজকে বলে আপনাদের বিচার করা হবে। তাই আহ্বান জানাবো, এখনো দুর্নীতিবাজ আমলা যারা এখনো চাকরিতে আছেন তাদের লিস্ট দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরুন। চাকরি গেলে, অবসরে গেলে বলবেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এখন কেন করা হচ্ছে না। এখন কেন তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। কিছুসংখ্যক আমরা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় কিন্তু সেটা দীর্ঘায়িত হয় না।’

নিজ দল ও আয়োজক সংগঠনের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘কে প্রমোশন পাইছেন, কে প্রমোশন পান নাই, সেটা বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হলো, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে শহীদ জিয়াউর রহমান যেভাবে অবদান রেখেছেন সেই শহীদ জিয়ার মতোই বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলনে সকলকে শরিক হতে হবে।’

আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি ডা. মো. মাইনুল ইসলাম বাদল তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, আকাম মোজাম্মেল, রেজাউল হক, বিএনপির সহ তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এ এইচ এম সাদিক খানসহ আয়োজক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বিইউ/জেবি