জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
১৮ জুন ২০২৪, ১০:১১ এএম
দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের রাতে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, দেশের মানুষের যে অর্থনৈতিক অবস্থা, দৈন্যতা, আজকে যে খারাপ অবস্থা, ঈদ সকলে সেইভাবে আনন্দের সঙ্গে করতে পারেনি। এ ব্যাপারে আমরা কষ্টে আছি, সকলে এই ব্যাপারে দুঃখিত। আমাদের নেত্রীও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
সোমবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে খালেদার গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় যান খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান। রাত সাড়ে ৯টার পর তারা বেরিয়ে আসেন।
গেইটের সামনে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, পবিত্র ঈদের দিনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আমরা উপস্থিত হয়েছিলাম। আপনারা জানেন যে, প্রত্যেক বছরই আমাদের নেত্রীর সাথে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আমরা একত্রিত হই। এই বছরও তাই করেছি।
ড.মোশাররফ আরও বলেন, দেশের মানুষজনকে এবং দলের নেতাকর্মীকে দেশনেত্রী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মানুষ যেভাবে চায় সেভাবে যাতে করে অর্থনৈতিক-সামাজিক সর্বক্ষেত্রে উন্নতি হয়ে সকলে আনন্দের সঙ্গে সুখ-স্বচ্ছন্দের সাথে এই ধরনের ঈদ এবং জীবন-যাপন করতে পারে সেজন্য আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দোয়া করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের মহাসচিব (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) তিনি নিজের দেশের বাড়িতে আছেন। সেজন্য তিনি আজকে অনুপস্থিত।
নিজের দীর্ঘদিন অসুস্থতা থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে অসুস্থ। আপনারা জানেন আমি প্রায় এক বছর অসুস্থ। আল্লাহ তায়ালা আমাকে আপনাদের দোয়ায় আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, স্থায়ী কমিটির সদস্যগণসহ সকল স্তরের নেতাকর্মীদের দোয়ায় আমাকে ফেরত পাঠিয়েছেন। আপনাদের সামনে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। সেজন্য আমি মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি এবং আমাদের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রত্যেক ঈদে আমাদের নেত্রীর সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করি এবং ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি। এখানে কিন্তু রাজনীতি নিয়ে আমরা আলোচনা করি না। আমাদের নেত্রীও করেন না। আজকেও তাই হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাক্ষাতের পরে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুজা উদ্দিন, আবদুল কাইয়ুম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে দেখা করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ঈদের আগের দিন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল অলি আহমেদও গুলশানের বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করেন।
৭৮ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা ও লিভারের রোগে ভুগছেন। তিনি গুলশানের বাসা ফিরোজায় থাকছেন চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে।
এরপর থেকে গুলশানের ওই বাসায় থাকছেন খালেদা জিয়া, যেখানে দলের নেতাকর্মীসহ অন্যরা তার সাক্ষাৎ পান না। কেবল দুই ঈদে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা খালেদা জিয়ার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে আসছেন।
বিইউ/এমএইচএম