images

রাজনীতি

‘বিরোধী দল’ নাকি ‘বিরোধী জোট’ কোন পথে আওয়ামী লীগ

কাজী রফিক

১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:৫২ পিএম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বড় প্রশ্ন কারা হচ্ছে বিরোধী দল। কেননা এবার আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠটার পর দল হিসেবে সর্বোচ্চ আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। সে সংখ্যাটাও মাত্র ১১টি। অপরদিকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়া নেতারা স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটের মাঠে পেয়েছেন ৬২টি। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট হয়েছে ২৯৯টি আসনে। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে প্রার্থী দেয় আওয়ামী লীগ। জয় পান ২২৩ জন। দলের মনোনয়নের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন ২৬৯ জন। তাদের মধ্যে জয় পান ৬২ জন।

জাতীয় পার্টির ১১টি আসনের বিপরীতে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আসন পেয়েছেন ৬ গুণ। সেক্ষেত্রে দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দল থাকবে নাকি বিরোধী জোট? এটিই এখন রাজনীতির মাঠে বড় প্রশ্ন।

খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনা, বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির (জাপা) আসন সংখ্যা যেহেতু কম এবার বিরোধী জোট হতে পারে জাতীয় সংসদে। 

বৃহস্পতিবার নিজেদেরকে বিরোধী দল হিসেবে ঘোষণা করে জাপা। দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের নেতাও ঘোষণা করছে দলটি।

এদিকে আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অনেকেই মনে করেন বিরোধী দলের জায়গায় এবার ‘বিরোধী জোট’ হওয়াই গুরুত্বপূর্ণ। এতে জাতীয় সংসদ প্রাণবন্ত ও সক্রিয় থাকবে। 

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছেন মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী। তার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদে বিরোধী জোট হতে যাচ্ছে বলে আলোচনা আছে। 

জানা গেছে, স্বতন্ত্র বিজয়ীরা এরইমধ্যে একাধিকবার রাজধানীর একটি অভিজাত এলাকায় বৈঠক করেছেন। তবে এই বৈঠক থেকে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। 

এ নিয়ে ভিন্ন মতও আছে দলের মধ্যে। অনেকেই দলের বিরুদ্ধে জোট করতে রাজী নন। 

তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় লাভ করা কেউ কেউ চান, জোট হোক। 

বিরোধী জোট হিসেবে আলোচনা ও নানা চেষ্টায় কয়েকজন থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী অনেকেই এ বিষয়ে অবগত নন।

ঢাকা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী মশিউর রহমান মোল্লা সজল। জোটগত হওয়ার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে ঢাকা মেইলকে তিনি জানান, তারা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন। 

প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়া সজল বলেন, আমি কোনো মিটিংয়ে ছিলাম না। আমাকে জানানোও হয়নি। তবে একটা সিদ্ধান্তে তো অবশ্যই যেতে হবে। জাতীয় সংসদকে প্রাণবন্ত করতে একটা সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। আমার মনে হয়, একটা বার্তা আসবে। আমরা সেই বার্তার জন্য অপেক্ষা করছি।

এখনো বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে রাজী নন দলের নেতারা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে তারা কথা বলতেও রাজী নন। এমনকি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকও বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য বা জবাব দিচ্ছেন না। 

গত ৮ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বিরোধী দল কালার হচ্ছে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, জাতীয় পার্টির তো অনেকেই জিতেছেন, চৌদ্দ দলেরও দুজনের মতো জিতেছেন। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তো দূরে নয়। যিনি লিডার অব দ্যা হাউজ হবেন, তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী, নতুন লিডার অব দ্যা হাউজ পরিস্থিতি, বাস্তবতা, করণীয়... অবশ্যই সিদ্ধান্ত নেবেন।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, সংসদে বিরোধী দলের আকার কত হচ্ছে? ১১ নাকি ৬২ জনের? 

তবে এ প্রশ্নেরও সরাসরি জবাব দেননি ওবায়দুল কাদের।

কারই/এএস