জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:২২ পিএম
রাষ্ট্রীয় অর্থ লোপাট করে `দলছুটদের' দিয়ে সরকার নতুন দল বানাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (২৪নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল কখনো অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ভাগিয়ে নেয় না। এই কাজটা করে গ্রাম্য মোড়ল, গ্রাম টাউট, বাজে লোক তারা এসব কাজ করে… অন্য মানুষের বাড়ি থেকে লোক ভাগিয়ে নেয়… সেই কাজ শেখ হাসিনা এখন করছেন। দলের মধ্যে নানাভাবেই সুবিধাবাদীরা ঢুকে পড়ে, উচ্ছিষ্টভোগীরা ঢুকে পড়ে... লোকগুলোকেই তারা পায়। এরশাদের সময়ে আমরা দেখেছি, এসব লোককে নিয়ে এরশাদ দল গঠন করেছে, সরকার গঠন করেছে। শেখ হাসিনাও এখন ওই কায়দা অনুকরণ করছেন, অনুসরণ করছেন।'
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি এবং সমমনা দলগুলোর থেকে লোক ভাগানোর জন্য তিনি (শেখ হাসিনা) তার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং তারা সেই কাজটি করছে। একজন একজনকে নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে, নতুন দলের একেকটা অদ্ভুত অদ্ভুত নাম দিয়ে তাদের নিয়ে যাচ্ছে এবং নমিনেশনে তাদের জেতানো হবে বলে অথবা টাকা পয়সার লোক দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একদিকে চলছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে জনগণকে দমনের যত ধরনের নিষ্ঠুর পদক্ষেপ আছে সেগুলো, অন্যদিকে চলছে রাষ্ট্রীয় টাকা লোপাট করে দলছুটদেরে নিয়ে দল বানানোর কারসাজি। '
রিজভী বলেন, ‘সবসময় সর্বকালের এই স্বৈরাচারী জাতির কাঁধের ওপর চেপে বসে তখন এই ধরনের প্রবণতাগুলোই দেখা দেয়… শেখ হাসিনাও সেটাই করছেন। এটা তো এক নির্লজ্জ ঘৃণ্য কাজ… এটা কোনো ভদ্রলোকে এই কাজ করতে পারে না। কারণ তার তো জনগণের কাছে যাওয়ার উপায় নাই, তিনি একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জিতবেন না, এই জিতবেন না’র কারণে, তিনি যত ধরনের গণবিরোধী কাজ, যত ধরনের দুর্বিনীত কাজ, যত ধরনের দুরাচারমূলক কাজ সেই কাজগুলো তিনি এখন করছেন নির্বাচনকে সামনে রেখে।'
‘সারাদেশে র্যাবের ৪২৮টি কেন্দ্র কেন?’
রিজভী বলেন, ‘গণমাধ্যমের মাধ্যমে জেনেছি, র্যাবের জন্য ৪২৮টি কেন্দ্র বানানো হচ্ছে সারাদেশে। এদের কাজ কী? সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি গণতান্ত্রিক দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এভাবে নিয়োগ করা হয়, তাদের দিয়ে সারাদেশে একেকটি কেন্দ্র বানানো হয়… সেখান থেকে তারা কী করবে? তারা করবে জনগণ যাতে কোনোভাবে তাদের বিস্ফোরণ না ঘটে।'
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘সামনে একতরফা নির্বাচনের যে মাস্টারপ্ল্যান শেখ হাসিনা করেছেন, সেই মাস্টারপ্ল্যানকে বাস্তবায়ন করার জন্য তারা নেতাকর্মীদের বেপরোয়াভাবে গ্রেফতার করছেন, যে গ্রেফতারি অভিযান চলছে বৈশাখী ঝড়ের মতো, সেই অভিযানটা তারা অব্যাহত রাখবেন। সেই কারণেই আজকে র্যাবের ৪২৮টি কেন্দ্র করা হয়েছে সারাদেশে।'
শুক্রবার র্যাব বিএনপির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেফতারের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একজন অভিজ্ঞ সিনিয়র চিকিৎসক তিনি। আজকে সকালে পেশাজীবীদের একটি অনুষ্ঠান শেষে ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেফতার করছে র্যাব। তাকে গ্রেফতারের যে দৃশ্য এটাই হচ্ছে… বিস্ময়কর। বাংলাদেশে এরা যদি আরও কতদিন টিকে কোনো ভদ্রলোক বাংলাদেশে বাস করতে পারবে না।'
রিজভী বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে র্যাবের গ্রেফতারের আলোকচিত্রটি দেখুন। একজন সিনিয়র চিকিৎসক গ্রেফতারের পর দুই র্যাব সদস্য দুই পাশে। আমার প্রশ্ন হলো, তিনি একজন সুচিকিৎসক, সুচিকিৎসক আপনি তাকে গ্রেফতারের পর সন্মানের সাথে র্যাব কার্যালয়ে বসিয়ে রাখতে পারতেন। তার ছবি তুলছেন মনে হয় যে দুর্ধর্ষ কোনো সন্ত্রাসী না কোনো দাগি চোর-ডাকাত। কী করে সম্মানিত মানুষের সম্মান হরণ করছে এই সরকার। আর যারা ক্যাসিনো গড়ে তুলেছেন, যারা একের পর এক টাকা লুট করেছে, নাম প্রকাশ হয়েছে … তারা এখন দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমরা কোন দেশে বাস করছি। আমরা এই গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
বিইউ/জেবি