images

মতামত

কক্সবাজার: সব থেকেও কিছুই নেই!

ঢাকা মেইল ডেস্ক

৩১ মে ২০২৩, ০৭:৪০ পিএম

পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত। সূর্য পশ্চিমাকাশে হেলে পড়েছে। চারপাশে মানুষের কলরব আর সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন মিলেমিশে একাকার। আমরা সঙ্গী হয়েছি বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আমন্ত্রণে আসা প্রতিবেশি ৪টি দেশের ৯৭ জন ট্যুর অপারেটরের। বেশির ভাগেরই প্রথমবার বাংলাদেশে আসা। তাদের সামনে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। 

স্বচ্ছ বালিয়াড়ি আর নীল জলরাশির এমন মোহনীয় রূপ মুঠোফোনে বন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো তারা। কেউ আগ্রহ নিয়ে কুড়াচ্ছিল ঝিনুক, আবার অনেকে নেমে গেলো গা ভেজাতে। কিন্তু তাদের এই মুগ্ধতা ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই পরিণত হলো বিরক্তিতে। আসামের এক ভদ্রলোক ওয়াশরুম খুঁজতে গিয়ে পড়লেন বিপদে। 

এই সৈকতে যতদূর চোখ যায় ওয়াশরুমের কোনো অস্তিত্ব নেই। আর যারা নেমেছিলেন সমুদ্রস্নানে তাদের গাড়িতেই করতে হলো পোশাক বদল। ভূটানের আরেক পর্যটক ভাবছিলেন রাতে কি করে সময় কাটবে তার। অবাক হলেন কক্সবাজারে এলে শুধু সমুদ্র দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। তাহলে এই সৈকতে একজন বিদেশি কেন আসবে? অথচ নেপাল, ভূটান আর সেভেন সিস্টার্স প্রদেশের অপারেটরদের কক্সবাজার নিয়ে ভীষণ আগ্রহ ছিল। 

নেপালের অপারেটররা তো বলেই বসলো ‘ভেবেছিলাম আমাদের আছে হিমালয় আর তোমাদের সমুদ্র। এটাকে আমরা ভালো ভাবেই কাজে লাগাতে পারি’। অথচ আমরা আমাদের সবচেয়ে বড় পর্যটন আকর্ষণকে এখনো প্রস্তুতই করতে পারিনি। করতে পারিনি বিদেশিদের উপযোগী বিনোদন ব্যবস্থা, নেই সূর্যস্নান ও কোলাহলহীন ঘুরে বেড়ানোর পরিবেশ, পেশাদার কোনো গাইডও নেই। আর যতটুকুই আছে তারও প্রচারণা নেই। থাকার মধ্যে যা আছে তা হলো একটা মেরিন ড্রাইভ রোড। সেখানেও চেকিং এর নামে হচ্ছে হয়রানি। 

দেশের ট্যুর অপারেটরদের অভিযোগ এখানে ভারতের যেকোনো পর্যটন এলাকার থেকে হোটেল ভাড়া, খাবারের দাম দ্বিগুণ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা তিনগুণও ছাড়িয়ে যায়। বিদেশি দেখেলেই স্থানীয়রা নানাভাবে হয়রানি করে। ফলে তারাও সাহস করে বিদেশি পর্যটক আনার চেয়ে বিদেশে নিয়ে যাওয়াতেই ব্যস্ত। সবমিলে বিদেশি পর্যটক টানতে ব্যর্থ বিশ্বের দীর্ঘতম এই সমুদ্র সৈকত।

লেখক: নাঈম আবির
প্রতিবেদক, এখন টেলিভিশন