images

মতামত

দেবদূতের মতো দুই তুর্কি নাগরিক আমাদের বাঁচালেন

ঢাকা মেইল ডেস্ক

১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:১৭ এএম

এখন আছি ইউফ্রেটিস নদীর কাছাকাছি ঐতিহাসিক শহর সানলিউরফায়। রাত ১০টার দিকে এই শহরের একটি হোটেলে এসে পৌঁছালাম। দেবদূতের মতো দুই তুর্কি নাগরিক এখানে এনে তুললেন। আদিয়ামান শহরে গেল দুদিন কাজ করছি। চকচকে শহরটি মাটির সাথে মিশে গেছে। 

২৮০০ ভবন ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে এই শহরে। যেসব বাড়িঘর আছে তাও ফাটল ধরা, ভীত নড়া ব্যবহারের অযোগ্য। শহরের সব মানুষ বাইরে চলে গেছে। এখন কেবল কাজ করছেন হাজার পাঁচেক বিদেশি এবং স্থানীয় উদ্ধারকর্মী।

এবার তুরস্কে পৌঁছানো থেকে এ পর্যন্ত আমাদের ঘুম, খাওয়া, নাওয়া হয়নি। রিলিফের চা নাশতা দিয়ে দিন পার হয়। শহরে কোনো দোকান খোলা নেই। কোন বাস ট্যাক্সি চলে না। থাকার মতো কোনো আবাসনও নেই। খোলা মাঠে তাবু পেতে থাকার চেষ্টা হয়েছিলো কিন্তু রাতে মাইনাস ৭/৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় বরফ হয়ে যাচ্ছিলাম। তাই হেঁটে শহর থেকে বের হয়ে আশেপাশে কোথায় যেতে বের হয়েছি। হাঁটছি তো হাঁটছিই। 

মাইল তিনেক পর রাস্তায় দাঁড়ানো সালেহ বিধস্ত আমাদের দেখে এগিয়ে আসে। পাউরুটি বের করে দেয় খেতে। সাথে থাকা খাবার পানি। ১৩০ কিলোমিটার দুরের সানলিউরফা থেকে এসেছেন তারা। আদিমানের মানুষের পাশে দাঁড়াতে। সাথে নার্স আলী। 

গুগুলে ট্রানসলেশন করে তাদের যখন বললাম ৩ রাত ঘুমাইনি। ঘুমানোর জায়গা পাইনি - তখন তাঁরাই জোর করে তুলে নিল। পৌনে দুই ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে পৌঁছে দিল এই শহরে। এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম। নয়তো শীতের এই রাতে আমাদের রাস্তায় ঘুরতে হতো। যেমন ঘুরছেন হাজারো মানুষ। কয়েক রাত পর ঘুমাতে যাচ্ছি আজ।