ঢাকা মেইল ডেস্ক
৩০ মে ২০২৫, ০৫:৫৭ পিএম
নিকষ কালো আঁধারের মাঝে সাঁঝ বাতির আলো যেন বাংলার মাটিতে, মরুভূমির ধূ ধূ বালুচরে হঠাৎ জন্ম সবুজ অরণ্যের নাম, বাংলাদেশের ইতিহাসে হীরকখচিত কালজয়ী মৃত্যুঞ্জয়ী মহাপুরুষ, স্বপ্নদ্রষ্টাদের স্বপ্নদ্রষ্টা, বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের হৃৎস্পন্দন, বেদনার বালুচরে আনন্দের অশ্রু বিচক্ষণ দেশ পরিচালক স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম। কালের প্রয়োজনে সময়ের দাবিতে যে সাহসী বীরের বীজ বপিত হয়েছিল তা আজও স্নায়ুযন্ত্রের প্রতিটি তন্ত্রে মিশে আছে। মিশে আছে ভালোবাসার প্রতিটি চিলেকোঠায়। আদর্শে উদ্ভাসিত উদ্যমে স্বজ্ঞানে সচিত্তে চিরযৌবন যে কণ্ঠ ভেসে ওঠে মুক্তিকামী মানুষের কানে, বেজে ওঠে হৃদয়ে কেঁদে ওঠে চোখের পাপড়ি যেন, তিনি শুধুই একজন জিয়াউর রহমান নন। তিনি এক আবেগ, তিনি এক বিরামহীন ভালোবাসার ডাকটিকিট। এক মধুমাখা কণ্ঠের সুরেলা গীতি যেন, যেন শিল্পীর তুলির আছড়ে গড়ে ওঠা নিদারুণ চিত্রসজ্জা। তিনি এক দৃঢ় প্রত্যয় মানুষের মাঝে।
যেন এক মুক্তির গান, স্বাধীনতার প্রতিধ্বনি, বিজয়ের কণ্ঠ। সেই আহ্বান যেন ডেকে ফেরে ওই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। আজও হাতছানি দিয়ে ডাকে যেন স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া তোমার জয় আছে তবু ক্ষয় নাই।
হে জেড ফোর্সের সাহসী কমান্ডার, হে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশকে তুমি করেছ ধন্য, মোদের জন্য অনন্য।
বিশ্বের বুকে মাথা তুলে যে বুক চাপটে বলতে পারি, ‘মোদের এক যে ছিল শহীদ জিয়া’ মুক্তির কামনায় স্বাধীনতার মহান আদর্শে চিরনতুন চিরভাস্বর অবিরাম মানব প্রাণ এক, ছুটেছে দিগন্ত থেকে দিগন্ত পাড়িয়ে, মাঠঘাট ছাড়িয়ে। করেনি সংকোচ রাখেনি সংশয়, মিশেছে মাটির সাথে বেঁধেছে প্রাণ মাটির মানুষের সাথে।
হে বাংলার রাখাল রাজা, কাস্তে কোদাল হাতে তুমি নেমেছো মাঠে, তোমার উপহার সারা বাংলার খাল যেন বইছে পানি ওই তোমার হৃদয়সম সমুদ্রের দিকে।
আক্রোশ আর ক্রোধে নয় ছিলে তুমি আপদে বিপদে/তাই তুমি শয়নে স্বপনে নিদ্রায় জাগরণে- এমন সাম্যের গান গাহিছে কে আর! কণ্ঠ রুধিবে সাধ্য যে কার। অগ্নিচক্ষু অপরাধীর আর নিরীহের তুমি হিমালয়, মেহনতি ওই মানুষগুলোর তুমিই শেষ আশ্রয়। বাকশাল আর রক্ষী বাহিনীর অত্যাচারে দেশ ছিল স্থবির, সিপাহি জনতার বিপ্লব বুঝিয়েছে তাই আর কেউ নয় তুমিই বীর। শোষক শাসক নওকো তুমি, তুমি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অখণ্ডতার অতন্দ্র প্রহরী, বহুদলের মহাসনদ গণতন্ত্র যে তোমার দান। গ্রাম গড়েছো মাঠ গড়েছো ধানের শীষে মিশে, প্রতিটি শিশিরবিন্দু জানে জিয়া আছে নিঃশ্বাসে। সংবিধানের সংশোধনে কলঙ্কমুক্ত দেশ, ধর্মনিরপেক্ষতা যেন তোমাতে হইলো শেষ। জাতীয়তাবাদের নিদর্শন তুমি রেখেছ একটি দল, অধিকাংশ দেশের মানুষের বেঁচে থাকার বল।

নতুন কুঁড়ির শিশুর ঝুড়ি শিশুর মতোই মন দেশের মানুষের চাইতে যে আর কে ছিল আপন? গ্রামের মাঝে গ্রামের সরকার আমার জন্য আমার দরকার তাও যে শহীদ জিয়ার আবিষ্কার, মনি মুক্তাসম হৃদয় বিজড়িত স্মৃতিগাথা, মায়ামাখা, অশ্রুঝরা ইতিহাসের রাজপুরুষ রাজটিকা যেন মাথার মুকুট, ওই মেহনতি মানুষের ঘামের সাথে বেড়ে ওঠা স্বচ্ছ নেতৃত্ব যা এই ভূখণ্ডে দ্বিতীয়বারের জন্য কেউ আসবে না। জীবনসঙ্গিনী করেছো এক মহীয়সী নারীকে যার হাতে বর্তমানের শান্তির কেতন, তোমার মতোই দেশের নেতা মানুষের নেতা মাটির ও মমতার নেতা, মাতৃতুল্য নেত্রী গণতন্ত্রের পতাকাবাহী সাহসী রাজকন্যা আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তোমার দেখানো পথেই নিয়ে গেছেন আমাদের, তার নেতৃত্বেই এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের স্বপক্ষের শক্তি, বেঁচে আছে তার সাহসী নেতৃত্বের কারণেই।
আর ভবিষ্যতের কাণ্ডারি রূপে রেখে গেছ যাকে সদা হাসিমুখ নিখাদ অদ্ভুত প্রাণ এক, তরুণ সমাজের হৃদয়ের স্পন্দন, বাস্তববাদী হয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে বেঁচে থাকার অকৃত্রিম আশ্রয়স্থল তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমান তোমার নেতৃত্বের অপেক্ষায় বাংলাদেশ। রক্ত বিজড়িত নতুন মহাশ্মশান শোষণ শাসন আর নিপীড়ন দিয়ে ঘেরা পাষাণের জেলখানা আমার বাংলাদেশ গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায়।
না ফেরার দেশে চলে যাওয়া অমর নেতা, রক্তের কফিনে তোমার সেই বাংলাদেশ যার প্রতিটি ধূলিকণা গড়েছিলে নিজ হাতে। আমরা তোমায় কতটা বুঝেছি জানি না, বুঝেছিল সৌদির বাদশাহ, তোমার লাগানো গাছের নাম দিয়ে দিয়েছিল জিয়া ট্রি। তোমায় বুঝেছিল ফিদেল ক্যাস্ত্রো, তোমায় বুঝেছে সারা বিশ্ব। তুমি যে শুধু এই বাংলাদেশের নও, তুমি সারা বিশ্বের নেতা।
এই স্বাধীন বাংলাদেশ যতদূর যাবে তোমার ইতিহাস ততই বর্ধিত হবে, তুমি যে আশার প্রদীপ জ্বালিয়েছিলে এই মৃত্যু উপত্যকায়। কিন্তু অবেলায় ঘাতকের আঘাত হেনেছিল যে কোন পাষণ্ড। কবিতা যে কত রইলো বাকি, কবির অপেক্ষায়। আকাশের মেঘ ভারী হয়ে যে ঝরলো নিরালায়। নিথর দেহখানি যে পড়ে রইলো না, রইলো না পড়ে জিয়া, পড়ে রইলো পুরো একটা দেশে স্বপ্ন।

হে লক্ষ প্রাণের স্পন্দন! আজও তোমায় মনে পড়ে, আজও তোমার জন্য হিয়া ভিজে ওঠে যখন দেখি দেশ পড়ে মহাবিপদে! তোমায় ফিরিয়ে আনতে ইচ্ছা করে যখন এই স্বাধীন বাংলাদেশ পাষণ্ড পশু জল্লাদখানা বানিয়ে ফেলে, এ যেন জংলি বন্য পশুর উল্লাসখানা। আজও তোমার কাছে পেতে চায় বাংলাদেশের কোটি জনতা শুধুই স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য। তাকিয়ে থাকলাম তোমার দিকে তোমার রেখে যাওয়া আদর্শ ও ধারকদের দিকে। হারানো ঐতিহ্য রক্ষা যে জিয়া পরিবারের ঐতিহাসিক দায়িত্ব।
হে কৃষকের নেতা! হে রাখাল রাজা! হে রাঙা পলাশের রঙিন ভালবাসা! হে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তোমার ক্ষয় নাই। যে জিয়া জনতার সে জিয়া মরে নাই।
লেখক: রাজনৈতিক বিশ্লেষক