images

মতামত

সাইক্লিস্টের সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত হোক

ঢাকা মেইল ডেস্ক

১৪ মার্চ ২০২৫, ০৪:০১ পিএম

images

বাইসাইকেল পরিবেশবান্ধব বাহন। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাহনগুলোর বিপরীতে এই বাহনের অবস্থান সর্বাংশেই ইতিবাচক—মাঙ্গলিক। অর্থাৎ অন্যান্য বাহন পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ছাড়াও আমৃত্যু পঙ্গুত্বও বরণ করতে হয় কাউকে কাউকে। বিপরীতে বাইসাইকেলে-বাইসাইকেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে না বললেই চলে। পরন্তু কোনো কারণে বাইসাইকেল আরোহী টাল সামলাতে না পালে পড়ে গিয়ে বড় জোর ত্বক ছিলে যাওয়া বা হালকা ব্যথা পাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তাও উল্লেখ করার মতো তত বেশি নয়। এই পর্যন্ত যা বললাম, তাতে একটি বিষয় পরিষ্কার। তা হলো, যেকোনো যান্ত্রিক বাহনের মতো বাইসাইকেল প্রাণঘাতী বা দুর্ঘটনাপ্রবণ নয়। বরং নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর ও পরিবেশবান্ধব বাহন।

বাইসাইকেলের ইতিবাচক হাজারটা বৈশিষ্ট্য থাকলেও এর চালকের সামাজিক মর্যাদা কতটুকু, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বাইসাইকেল চালককে পথচারী থেকে থেকে শুরু করে, রিকশাচালক; মোটরসাইকেল থেকে প্রাইভেটকার-চালক, জিএনজিচালিত অটো থেকে বাস-ট্রাকচালক কেউ সম্মানের চোখে দেখে না। বরং বাইসাইকেল চালককে দেখলেই টিপ্পনি কাটা, বিদ্রূপ করা, হেনস্তা করা যেন নিয়মেই পরিণত হয়েছে। এসব ঘটনায় বাইসাইকেল আরোহীরা প্রতিবাদ করলে যান্ত্রিক বাহনের চালকেরা একজোট হয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। বাইসাইকেল-চালকের সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত না হওয়ার নেপথ্যে বেশকিছু কারণ রয়েছে। এগুলো হলো:  

ক. সমাজের অভিজাত শ্রেণির বাইসাইকেল ব্যবহার না করা।

খ. বাইসাইকেলের জন্য সব ধরনের সড়কে স্বতন্ত্র লেন না থাকা।

গ. সড়কে বাইসাইকেল আরোহীর নিরাপত্তায় ট্রাফিক পুলিশসহ সচেতন নাগরিকের সহযোগিতার অভাব।

ঘ. বাইসাইকেলের সর্বোচ্চ বাজার মূল্য সম্পর্কে সমাজে সম্যক ধারণা প্রচার না করা।

ঙ. বিশ্বমানের  ব্র্যান্ডের বাইসাইকেলের যন্ত্রণাংশ সম্পর্কে ধারণা প্রচারের অভাব।

ঙ.  অন্যান্য  নামি-দামি বাহনের বাজার মূল্যের সঙ্গে বাইসাইকেলের বাজার মূল্যের তুলনামূলক ধারণা প্রচার না থাকা।

চ. অ্যাপাটমেন্ট ও শপিংমলগুলোর বাইসাইকেলের জন্য পার্কিং জোন না থাকা।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদেরও ধারণা বাইসাইকেল দিনমজুর-হতদরিদ্রের বাহন। একটি বাইসাইকেলে বাজার মূল্য ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। বিপরীতে একটি মোটরসাইকেলের দাম দুই লাখ থেকে শুরু করে আট দশ লাখ টাকা এবং প্রাইভেটকারের বাজার মূল্য ৩০ লাখ থেকে পৌনে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তাদের ধারণা, যারা বেশি মূল্যের বাহনের মালিক-চালক; সমাজে তাদের মর্যাদাই সবার ওপরে। অন্যভাবে বললে সমাজের সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরাই যান্ত্রিক বাহনের মালিক হন। অর্থাৎ যান্ত্রিক বাহনের মালিক হবেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিল্পপতি, রাজনীতিবিদ, আমলা, এমপি-মন্ত্রীরা। আর বাইসাইকেলের মালিক হবে—গ্রামের রাখাল, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, দরিদ্র শিক্ষার্থী, পল্লীচিকিৎসক, ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের কিস্তি কালেকটর, প্রাইভেট টিউটর; শহরে পিওন, সিকিউরিটি গার্ড, ডেলিভারি বয় ও দিনমজুর। এর বাইরে কোনো চিত্র থাকতে পারে, সমাজের আত্মম্ভরী ব্যক্তিরা ভাবতেই পারেন না। তাই তাদের বদ্ধমূল ধারণা—বাইসাইকেল-চালকের মতো দরিদ্র ও হাড়-হা-ভাতে ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা থাকতেই পারে না।  

Sycle1

দ্বিতীয় কারণ যদিও বাংলাদেশের দুই একটি বিশেষ অঞ্চল ছাড়া সর্বত্রই লেন মেনে গাড়ি চলে না, তবু যান্ত্রিক বাহনের জন্য গতি অনুযায়ী আলাদা-আলাদা লেন রয়েছে। কিন্তু ঢাকা ক্যানটনমেন্ট ও মানিক মিয়া এভিনিউ ছাড়া বাইসাইকেলের জন্য কোনো আলাদা লেন নেই। ক্যানটনমেন্ট এলাকায় রিকশা-বাইসাইকেল লেনে বাস-প্রাইভেটকার না চললেও মানিক এভিনিউ’র চিত্র ভিন্ন। এখানে বাইসাইকেল লেনের সাইন আছে বটে, কিন্তু সেই লেন রয়েছে চটপটিঅলা, প্রাইভেকটারের পার্কিং। ফলে ওই বাইসাইকেল লেনে কার পার্কিং-চটপটিঅলার দৌরাত্ম্য থাকলেও কেবল বাইসাইকেল চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। আর বিষয়টি তদারকির জন্যও কেউ আছে বলে মনে হয় না।

দেশের সড়কগুলোয় বাইসাইকেল চালকের নিরাপত্তায় ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতামূলক মনোভাব দেখাতে দেখা যায় না। ট্রাফিক সিগন্যাল দেওয়ার সময় বাইসাইকেলকে বিবেচনায় নেওয়া হয় না। ফলে এক লেনের সিগন্যাল ছেড়ে দেওয়ার সময় অন্য লেনে বাইসাইকেল চলমান থাকলেও তাতে ভ্রূপেক্ষ করেন ট্রাফিক সদস্য। ফলে যান্ত্রিক বাহনগুলো মুহূর্তে বাইসাইকেলের ওপর এসে পড়ে। পরন্তু যান্ত্রিক বাহনের চালকরা তখন বাইসাইকেল চালককে বিদ্রূপ করা থেকে শুরু করে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করেন। ওই সময়ে পথচারী থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ট্রাফিক পুলিশকেও প্রায় যান্ত্রিক বাহনের চালককে সমর্থন করতে দেখা যায় । এমনকি বাইসাইকেল চালকের বয়স, সামাজিক মর্যাদা কিংবা পেশাগত পরিচয়কেও সম্মান দেওয়া না। বরং সবাই সম্মিলিতভাবে বাইসাইকেল চালককে ‘তুই তোকারি করে’ অসম্মান করাসহ প্রহারেও উদ্ধত হয়। এছাড়া উপস্থিত জনতাও প্রাইভেটকার-মোটরসাইকেল চালককে যতটা সম্মানের চোখে দেখে, ঠিক ততটাই অসম্মান করে বাইসাইকেল চালককে। যেন যান্ত্রিক বাহনের অভিজাত চালকদের গালি শুনে ‘জি হুজুর’-‘জি-হুজুর’ বলে নিজের দোষ স্বীকার না করে ফৌজদারি অপরাধ করে ফেলেছেন বাইসাইকেল-চালক।

বাইসাইকেল চালককে সম্মান না দেওয়ার  পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ এই বাহনটির বাজার মূল্য সম্পর্কে অজ্ঞতা। বাজার মূল্য জানার ব্যাপারে অবজ্ঞা-অনাগ্রহ। সমাজে কথিত অভিজাত-বিত্তশালীরা মনে করেন বাইসাইকেল হতদরিদ্র ও নিম্নবর্গের বাহন। এই বাহনের বাজার মূল্য আর কত হবে—বড়জোর দশ হাজার থেকে পনেরো হাজার। তাদের জানা মতে, যেহেতু যান্ত্রিক বাহনের বাজার মূল্য লাখ টাকা থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত গড়ায়, সুতরাং যান্ত্রিক বাহনের মালিকরাই মর্যাদাবান। কেননা এই সময়ে এই সমাজে মানুষের সামাজিক মর্যাদা নির্ণীত হচ্ছে অর্থবিত্তের নিক্তিতে। তাদের ধারণা—যার যত বিত্ত, সে তত সম্ভ্রান্ত, তার জন্য তত সম্মান বরাদ্দ। আর বিত্তহীনের কোনো সম্মান থাকতে নেই। এভাবে তাদের ভেতর আর্থিক সামর্থ্যের ভিত্তিতে এক ধরনের আত্মম্ভরিতা জন্ম নেয়। সেই আত্মম্ভরিতা তাদের এমন পর্যায়ে নিয়ে যায়, যেখান থেকে বাইসাইকেলের বাজার মূল্য জানার মতো ঔৎসুক্যও তাদের মনে স্থান পায় না। তারা আর জানতেই পারেন না, মোটরসাইকেলের দাম সর্বোচ্চ দশ লাখ টাকা হলেও বাইসাইকেলের দাম বারো লাখ টাকাও হতে পারে। প্রাইভেটকারের দাম ত্রিশ লাখা টাকা থেকে শুরু করে দুই কোটি বা ছয় কোটি টাকা হলেও বাইসাইকেলের দাম বিশ কোটি টাকাও হতে পারে। এই বিষয়ে তাদের জানার আগ্রহ তো নেই-ই, কেউ জানালে উল্টো দম্ভভরে এই প্রশ্ন তারা হামেশাই তোলেন—সাইকেলে এমন কী আছে যে, এতদাম হবে? তারা যেমন বাইসাইকেলের দাম জানেন না, তেমনি কেউ জানাতে গেলেও বিত্তের অহম ও আত্মম্ভরিতার গরমে তারা জানতেও চান না। তাই মাত্র ৮০ হাজার টাকার স্কুটি চালিয়েও দশ লাখা টাকা বাজার মূল্যের বাইসাইকেল-চালককে ‘ফকিরনির পুত’ বলে গালি দিতেও দ্বিধাবোধ করেন না। ত্রিশ লাখ টাকার প্রাইভেটকারের মালিক বিশ কোটি টাকা বাজার মূল্যের বাইসাইকেল চালককে ছোট লোকের বাচ্চা বলে গালি দিয়ে বীরত্ব প্রকাশ করেন।

সমাজে বাইসাইকেলের বাজার মূল্য সম্পর্কে যেমন অজ্ঞতা-উপেক্ষা রয়েছে, তেমনি রয়েছে এর যন্ত্রণাংশের বাজার মূল্য সম্পর্কেও অজ্ঞতা। ফলে যান্ত্রিক বাহনের মালিকরা নিজেদের বাহনের ৫০০ টাকা দামের কোনো যন্ত্রাংশকে যত মূল্যবান মনে করেন, বাইসাইকেলের লাখ টাকা দামের যন্ত্রাংশকে ঠিক ততটাই তুচ্ছজ্ঞান করেন।

বাইসাইকেল সম্পর্কে এমন হীন ধারণার পেছনে রয়েছে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে প্রকৃত ধারণা প্রচারের অভাব। রয়েছে শিক্ষারও অভাব।  অন্যান্য  নামি-দামি যান্ত্রিক বাহনের বাজার মূল্যের সঙ্গে বাইসাইকেলের বাজার মূল্যের তুলনামূলক ধারণা প্রচার না থাকায় আত্ম-অহঙ্কারী মানুষ থাকে অন্ধকালে। ফলে নিজেদের বাহনের চেয়ে তিন চারগুণ বেশি দামের বাইসাইকেল চালককে তাচ্ছিল্য করেন তারা।

বড় ছোট কোনো শহরের অ্যাপাটমেন্ট ও শপিংমলগুলোর বাইসাইকেলের জন্য পার্কিং জোন নেই। দুই একটি ব্যতিক্রম থাকতে পারে। নিরাপদ পার্কিং জোন না থাকায় অনেকেই তাদের লাখ টাকা দামের বাইসাইকেলটি নিয়ে সহজে বেড়াতে যেতে চান না, শপিং মলেও না। কারণ বাইসাইকেলটি নিয়ে যে আনন্দে ঘর থেকে বের হবেন, সেই আনন্দ নিয়ে বাসায় ফিরতে পারবেন কি না, তার নিশ্চয়তা নেই। পার্কিং জোনের অভাবে সাইকেলটি যেখানে-সেখানে রেখে সাইক্লিস্টকে শপিংমল বা অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করতে হয়। ফিরে এসে প্রায় দেখেন তার অতি প্রয়োজনীয় নিত্যসঙ্গী কয়েক লাখ টাকা দামের বাইসাইকেলটি আর নেই। ইতোমধ্যেই চুরি হয়ে গেছে।  যে বাহনের জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই, সে বাহনের মালিককে শপিংমল ও ভবনের সিকিউরিটিরাও সম্মান দেখান না। তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন।

উল্লিখিত কারণগুলো বিশ্লেষণ করে একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় এভাবে, বাইসাইকেল-চালকের সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য সবার আগে প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। সমাজকে এই ধারণা দেওয়া যে—বাইসাইকেল সমাজের সম্ভ্রান্ত বাহন। পরিবেশবান্ধব-স্বাস্থ্যকর-দুর্ঘটনাপ্রতিরোধী বাহন। তাই বাইসাইকেল-চালকের সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সমাজের অভিজাতশ্রেণীকেও বাইসাইকেল ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। অভিজাত শ্রেণী অর্থাৎ এমপি-মন্ত্রী-আমলা-অধ্যাপক-শিল্পপতিরাও যতি সড়কে মাঝেমাঝে ক্ষেত্রে বিশেষে বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে কিংবা সপ্তাহে একদিন ইভেন্ট করে বাইসাইকেল চালান, তাহলে বাইসাইকেল চালকের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হবে।

Sycle2

অভিজাত শ্রেণী যখন বাইসাইকেল চালাবেন, তখন তাদের নিরাপত্তার স্বার্থেই  বাইসাইকেলের জন্য সব ধরনের সড়কে স্বতন্ত্র লেন তৈরি করতে হবে। স্বতন্ত্র  লেনে বাইসাইকেল চলাচলের ফলেও সমাজে এই বাহনের চালককের সামাজিক মর্যাদা তৈরি হবে। সেই স্বতন্ত্র লেনে বাইসাইকেল আরোহীর নিরাপত্তায় ট্রাফিক পুলিশসহ সচেতন নাগরিকের সহযোগিতামূলক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

আমরা নিশ্চয় ভুলে যাইনি যে, আশির দশক থেকে মধ্য নব্বই দশক পর্যন্ত ‘ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটি সন্তানই যথেষ্ট’ রাষ্ট্রীয়ভাবে এই স্লোগানে শহরে-গ্রামে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছিল। পাশাপাশি বাল্যবিয়েবিরোধী ও এসিডসন্ত্রাসবিরোধী সামাজিক আন্দোলনও বছরের পর প্রচলিত ছিল।  এই সামাজিক আন্দোলনের ফলে ধীরে ধীরে দুটি সন্তানেই দম্পতিরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন, বাল্যবিয়ের পরিমাণ কমে এসেছে, এসিডসন্ত্রাস বন্ধ হয়ে গেছে। এই সামাজিক আন্দোলনগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে বাইসাইকেল চালনার প্রতি সব বয়সের মানুষ সচেতন করে তুলতে হবে। ধনী-দরিদ্র-ছেলে-বুড়ো সর্বশ্রেণী মানুষকে বোঝাতে হবে বাইসাইকেল পরিবেশবান্ধব-স্বাস্থ্য রক্ষার সহায়ক, দুর্ঘটনা প্রতিরোধী বাহন। এর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও কম। এছাড়া সব সাইকেলই দশ হাজার টাকা দামের নয়, দশ লাখ থেকে দশ-বিশ কোটি টাকা দামের বাইসাইকেলও রয়েছে বাজারে। ফলে প্রত্যেকেই তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী বাইসাইকেল কিনে ব্যবহার করতে পারেন। একইসঙ্গে ট্রাফিক পুলিশসহ সচেতন সমাজের উচিত হবে সড়কে বাইসাইকেল প্রায়োধিকার দিতে হবে। সম্মান দেখানোর ক্ষেত্রে যান্ত্রিক বাহনের চালক ও বাইসাইকেল চালক—উভয়েরই সমান সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠ্যবইয়ে বাইসাইকেলের উপকারিতা ও সামাজিক মর্যাদা সম্পর্কে রচনা লিপিবদ্ধ করতে হবে। শিশুরা শৈশব থেকে বাইসাইকেলের উপকারিতা ও সামাজিক মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন হলে, বড় হয়ে এই বাহন ও বাহনের চালককে কখনোই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে না। আর তাহলেই সাইক্লিস্টরা পাবেন, যথাযথ সামাজিক মর্যাদা। এই সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত যত দ্রুত সম্ভব ততই মঙ্গল। সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক।

লেখক: কবি-গবেষক-সাইক্লিস্ট-সাংবাদিক