images

অফবিট

কচুর লতি বিক্রি করছিল ওরা, চাল পেয়ে কেঁদেই ফেলল!

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ জুলাই ২০২২, ০৯:১৮ পিএম

স্থানীয় বাজারে কচুর লতি বিক্রি করে সংসার চালাতে সাহায্য করতো ছোট্ট দুই বোন। বয়সে অনেক ছোট হওয়ায় ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়েও ধাক্কা খেয়ে ভয়ে সরে এসেছিল তারা। কারণ, বাড়িতে থাকা অসুস্থ বাবা বলে দিয়েছেন- ধাক্কাধাক্কিতে না যাওয়ার জন্য, প্রয়োজনে ত্রাণ না নিয়েই চলে আসার জন্য। তবে লাইন থেকে ভয়ে সরে আসার দৃশ্যটি নজরে আসে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য রেজাউলের। পরে ছোট্ট ওই দুই বোনকে এক বস্তা চালও দেওয়া হয়। ওই সময় চাল পেয়ে খুশিতে কেঁদেই ফেলে তারা।

বুধবার (২৭ জুলাই) রাত ৮টার দিকে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ত্রাণ নিয়ে এমন একটি হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া পোস্ট করা হয়েছে। স্ট্যাটাসটি লিখেছেন সিলেটে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবায়রত মাওলানা সাইমুম সাদী। ঢাকা মেইলের পাঠকদের জন্য ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘ওরা দু-বোন বাজারে কচুর লতি বিক্রি করে। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণের লাইন থেকে দূরে দাঁড়িয়ে ছিল। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক টিমের রেজাউল ভাই এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ত্রাণ নিবে কি না? জানালো, তারা ছোট, লাইনে দাঁড়িয়েছিল, ধাক্কা খেয়ে ভয়ে সরে এসেছে। বাড়িতে অসুস্থ পিতা বলে দিয়েছেন- ধাক্কাধাক্কিতে না যাওয়ার জন্য, প্রয়োজনে ত্রাণ না নিয়ে চলে আসার জন্য।’

‘আমরা দেখলাম হাতে পলিথিনের প্যাকেটে কচুর লতি। জানলাম, ওগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে যা পাবে তা দিয়ে খাবার কিনে ফিরবে দু-বোন। জিজ্ঞেস করলাম, কত টাকা দিলে কচুর লতি খুশিমনে বিক্রি করবে? জানাল, পঞ্চাশ টাকা হলে তারা খুশি। আমরা বললাম, যদি পঁচিশ কেজি চালের বস্তা দেই, খুশি হবে? আনন্দে লাফিয়ে উঠল ছোটো বোন। বলল- সত্যি বলছেন তো? আমাদের নাম তো তালিকায় নেই।’

‘আমরা অবাক হলাম, এত ছোট্ট মেয়ে কীভাবে তালিকা, ত্রাণ- এসব বুঝতে পারে! অভাবের সংসারে বাচ্চারা অনেক কিছুই বুঝে যায়। ট্রাক থেকে এক বস্তা চাল এনে যখন বললাম, এটা তোমাদের জন্য। বড়বোন আনন্দে কেঁদে ফেলল। চোখ বেয়ে টপটপ করে ঝরতে লাগলো পানির ফোটা।’

‘এবার সমস্যা হলো- তাদের বাড়ি এখান থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। এত ছোট্ট দুটি বাচ্চা মেয়ে এই বস্তা নিয়ে যাবে কীভাবে? অগত্যা আমাদের স্থানীয় সহযোগী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দেলওয়ার ভাইয়ের গাড়িতে তুলে ওদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলো। গাড়িতে উঠার পর বললাম- চোখের পানি মুছে একটু হাসো দেখি। হাসলো দুজন। মনে হলো এক টুকরো জান্নাত যেন নেমে এসেছে পৃথিবীতে। ওরা চলে গেছে। আমি কল্পনায় দেখছি, সামান্য এক বস্তা চাল একটা ফ্যামিলিতে আজ আনন্দের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে।’

টিএই/আইএইচ