ফিচার ডেস্ক
১৪ জুন ২০২৫, ০৯:১৮ এএম
সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাথায় থাকা হেলমেটের ওপর অনেক সময় দেখা যায় একটি বিশেষ ধরনের রশি বা নেটের মতো কাভার। অনেকেই এটিকে শুধুই ডিজাইনের অংশ মনে করেন। কিন্তু এর রয়েছে গভীর কৌশলগত কারণ, যা অনেক সময় একজন সৈনিকের জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এই প্রতিবেদনে জানুন সেনা হেলমেটের ওপরে থাকা এই নেটের আসল উদ্দেশ্য, কাজ ও বৈশিষ্ট্য।

ক্যামোফ্লাজ কাপড়ের কভার
জালের মতো রশির নেট (Helmet Netting)
এই নেটটি হেলমেটের উপর বসানো হয়। অনেক সময় এতে গাছের পাতা, ঘাস, কাপড় বা মাটির টুকরাও গুঁজে দেওয়া হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়ে আসছে, বিশেষ করে মাঠ-পর্যায়ে সৈনিকদেরকে শত্রুর নজর এড়িয়ে চলতে সহায়তা করার জন্য।

জঙ্গলে বা উন্মুক্ত পরিবেশে হেলমেট অনেক সময় ধাতব ও চকচকে দেখায়। এই নেট দিয়ে ঢেকে দিলে তা গাছপালা বা পরিবেশের সঙ্গে মিশে যায়, ফলে শত্রুপক্ষ সহজে সনাক্ত করতে পারে না।
আরও পড়ুন: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন সেনা কর্মকর্তা শাহনূর
ধাতব হেলমেট সরাসরি রোদ বা আলো প্রতিফলন করে, যা দূর থেকে দৃষ্টিগোচর হতে পারে। নেট থাকলে এই রিফ্লেকশন অনেকটাই কমে যায়।

নেটের ভেতরে গাছের পাতা বা ঘাস গুঁজে দিলে সৈনিক পুরোপুরি পরিবেশের সঙ্গে একীভূত হয়ে যেতে পারেন। এটি বিশেষ করে স্নাইপার বা গেরিলা মিশনে কাজে আসে।
এই নেট অনেক সময়:
ছোট জিনিস গুঁজে রাখার জন্য (যেমন প্যাচ, র্যাংক ট্যাগ)
প্যারাশুট ল্যান্ডিংয়ের সময় ছোটখাটো আঘাত শোষণের জন্য
হেলমেট আরও ফিট করার জন্য ব্যবহৃত হয়

অনেক সময় শত্রু পক্ষ ড্রোন, দূরবীন বা রাডার ব্যবহার করে সৈনিক শনাক্ত করে। তখন পরিবেশের সঙ্গে মিশে যাওয়ার জন্য হেলমেট নেট একটি সাইলেন্ট সিকিউরিটি শিল্ড হিসেবে কাজ করে। এটি চোখে পড়ার মতো নয়, কিন্তু কার্যকারিতায় অনেক।
প্রায় সব দেশের আধুনিক সেনাবাহিনী—যেমন:
🇺🇸 US Army
🇬🇧 British Army
🇮🇳 Indian Army
🇧🇩 Bangladesh Army
এদের মধ্যে বিশেষ অপারেশন ইউনিট, গেরিলা ট্রুপ, স্নাইপার বা বর্ডার পেট্রোল সদস্যরা প্রায়ই হেলমেট নেট ব্যবহার করে থাকেন।
সেনাবাহিনীর হেলমেটে থাকা এই ছোট্ট নেট বা রশির কাভারটি শুধু বাহ্যিক সাজ নয়—বরং এটি যুদ্ধক্ষেত্রে একটি কার্যকর প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, যা সৈনিককে শত্রুর চোখ থেকে লুকিয়ে রাখতে সহায়তা করে। যুদ্ধে প্রতিটি মুহূর্ত এবং প্রতিটি টুকরো যন্ত্রাংশই মূল্যবান—এই নেটও তার একটি নিঃশব্দ প্রমাণ।
এজেড