images

জাতীয়

পানি অবশ্যই ফুটিয়ে পান করতে হবে: ওয়াসা এমডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৫ এপ্রিল ২০২২, ০১:২৩ পিএম

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিম এ খান বলেছেন, ওয়াসার লাইনের পানি অবশ্যই ফুটিয়ে পান করবেন। কারণ আমিদের পানি ৯৫ ভাগ বিশুদ্ধ। পাঁচ ভাগ পানিতে সমস্যা থাকে। সেক্ষেত্রে সেই পাঁচ ভাগের মধ্যে আপনি পড়েন কি না সে গ্যারান্টি আমরা দিতে পারি না। 

মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংলাপে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ‘নগরবাসীর চাহিদা ও ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা’ শীর্ষক এ সংলাপের আয়োজন করে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা)।

ওয়াসা এমডি বলেন, অনেকসময় বাসা বাড়ির পানির ট্যাংকে ময়লা থাকে সে কারণেও পানির সমস্যা হয়ে থাকে। আমরা পাইপলাইনে বিশুদ্ধ পানি দিয়ে থাকি। এখন ট্যাংকিতে এসে যদি পানির সমস্যা হয় সেই দায় তো আমরা নিতে পারি না।

সংলাপে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিগত প্রায় ১২ বৎসর যাবৎ রাজধানীতে পানি সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। বরং দৈনিক চাহিদার তুলনায় ঢাকা ওয়াসার পানি উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। বর্তমানে দৈনিক পানির চাহিদা ২৬০-২৬৫ কোটি লিটার। আর ঢাকা ওয়াসার বর্তমান পানি উৎপাদন সক্ষমতা ২৭০-২৭৫ কোটি লিটার। বর্তমান গ্রীষ্ম মৌসুম ও চলমান পবিত্র রমযান মাসে ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং রমযান মাসে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ইফতার ও ওযুর জন্য মোবাইল ভ্যান, প্লাষ্টিক ট্যাংকের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসার মূল লক্ষ্য পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী পানি ব্যবস্থাপনা। এ লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় ঢাকা ওয়াসার বর্তমান ব্যবস্থাপনা পানির চাহিদা পূরণে ‘ঘুরে দাঁড়াও ঢাকা ওয়াসা কর্মসূচি’র আওতায় নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে।

ওয়াসা এমডি বলেন, তারই পরিক্রমায় ঢাকা ওয়াসা আজ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি রোল মডেল। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার দৈনিক পানি উত্তোলন/উৎপাদন সক্ষমতা ২৭০-২৭৫ কোটি লিটার এবং দৈনিক ২৬০-২৬৫ কোটি লিটার পানির চাহিদার পুরোটাই ঢাকা ওয়াসা সরবরাহ করছে। 

তিনি আরও বলেন, দুই কোটির অধিক মানুষ রাজধানী ঢাকা শহরে বাস করে। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার মোট উৎপাদিত পানির শতকরা ৩৪ ভাগ ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে সংগ্রহ করে পরিশোধনপূর্বক সরবরাহ করা হচ্ছে আর ৬৬ ভাগ পানি ভূ-গর্ভস্থ উৎস তথ্য গভীর নলকূপ থেকে আসছে। ২০২৩ সাল নাগাদ ঢাকা শহরে সরবরাহকৃত পানির ৭০ ভাগ আসবে ভূ-উপরিস্থ পানির উৎস থেকে। অবশিষ্ট ৩০ ভাগ ভূ-গর্ভস্থ তথা গভীর নলকূপ থেকে।

তাসকিম এ খান বলেন, বর্তমান প্রশাসন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে ঢাকা ওয়াসাকে আরও গতিশীল ও গ্রাহকবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে ২০১০ সালে ‘ঘুরে দাঁড়াও ঢাকা ওয়াসা কর্মসূচি’র মত এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য রাজধানীবাসীর পানির চাহিদা ও পয়ঃসেবা প্রদানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও স্বল্পতম সময়ে সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ। তারই পরিক্রমায় ঢাকা ওয়াসা আজ ‘ডিজিটাল ওয়াসা’য় পরিনত হয়েছে। প্রায় সকল সেবা অনলাইন ভিত্তিক হওয়ায় গ্রাহকদের ভোগান্তি বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঢাকা ওয়াসার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রাহক সেবা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের সময় রাজধানীতে পানি সরবরাহ পরিস্থিতিতে বেশ ঘাটতি ছিল। তখন মোট পানি উৎপাদনের পরিমাণ ছিল দৈনিক ১৮৮ কোটি লিটার এবং গভীর নলকূপের সংখ্যা ছিল ৫১৯টি। পানি সরবরাহে বর্তমান প্রশাসনকে দ্রুত এবং বহুমুখী বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসা ৯০৬টি গভীর নলকূপ এবং ৫টি পানি শোধনাগারের মাধ্যমে নগরবাসির পানির চাহিদার পুরোটাই মেটাতে সক্ষম।

ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে সংলাপে ডুরা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

টিএই/এএস