খলিলুর রহমান, বোরহান উদ্দিন
১৫ মে ২০২৩, ১১:৪৬ এএম
ঘুর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেকনাফ, সেন্টমার্টিনে। সে তুলনায় অনেকটা কক্সবাজারের মূল ভূখণ্ড নিরাপদেই ছিল। কিন্তু মোখার কারণে আতঙ্ক আর বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত দুদিন ধরে অনেকটা থমকে ছিল এখানকার মানুষদের জীবন। তবে সোমবার (১৫ মে) সকাল থেকে অনেকটা প্রাণ ফিরেছে কক্সবাজার সদরে।
সকাল থেকে এখানকার আবহাওয়া রোববারের ঠিক বিপরীত। অর্থাৎ কড়া রোদ, হালকা বাতাস সব কিছু মিলে এক স্বাভাবিক কক্সবাজার দেখা গেছে আজ।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে এমর আশঙ্কা ছিল গত কয়েকদিন ধরে। তবে সেই তুলনায় রোববারে মোখার আঘাতে বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ার বাইরে তুলনামূলক কম ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়রা বলছেন।
সরকারি দফতরগুলোর দেওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে পুরোপুরি বিধ্বস্ত ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০ হাজারের মতো বাড়িঘর।
এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সেন্টমার্টিনে দুজন নিহত ও ১১ জনের মতো আহত হওয়ার কথাও দাবি করলে জেলা প্রশাসন বলছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পায়নি। দুজন মৃত্যুর খবর জনমুখে শুনলেও। কিন্তু কোনো মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেনি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ ঢাকা মেইলকে বলেন, কক্সবাজার জেলার সবকটি উপজেলার ২০ হাজার ৪৬৯টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেকনাফ উপজেলায়।
এই কর্মকর্তা বলেন, ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে দিনভর শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে যাদের বাড়ি-ঘর তেমন ক্ষতি হয়নি তাদের নিজ বাড়িতে ফিরেছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান ঢাকা মেইলকে বলেন, সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ, উখিয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর বেশিভাগ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কক্সবাজার শহরের আলীর জাহানের বাসিন্দা কাজী শাহাদাতুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, সবাই আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম কি না কি হয়ে যায়। শুকরিয়া তেমন বড় ক্ষতি হয়নি। এতে কক্সবাজারের হোটেল ব্যবসায়ীদের মনে স্বস্তি আসছে। কারণ ৯১ সালের বন্যায় মাস খানেকের মতো এই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। এবার তেমন প্রভাবই পড়েনি।
এদিকে রোববার বন্ধ থাকলেও সোমবার সকাল থেকে কক্সবাজারে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে। সৈকতে পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে।
জাকির হোসেন নামের এক পর্যটক ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলায়। ঘূর্ণিঝড়ের আগে আমি কক্সবাজার আসি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আর সিলেট যাইনি। তাই আজ বিচে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, ভোর ছয়টার দিকে একবার এসে বিচে গোসল করে গেছি। এখন আবার এসেছি। আগামীকাল সিলেটের উদ্দেশে কক্সবাজার ত্যাগ করব।
একই এলাকার বাসিন্দা জিল্লুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, আমিও মোখার আগে কক্সবাজারে আসছিলাম। কিন্তু মোখার কারণে এখানে আটকা পড়ি। আজ বাড়ি ফিরব।
কক্সবাজার শহরের বিখ্যাত আল গণি হোটেলের ম্যানেজার ঢাকা মেইলকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের জন্য কক্সবাজারে পর্যটক অনেক কম ছিল। ফলে আমাদের বেচাকেনাও কম হয়েছে। এখন বিপদ কেটে গেছে। লোকজনও বাড়তে শুরু করবে আজকে থেকে।
বিইউ/কেআর/এএস