নিজস্ব প্রতিবেদক
১৪ মে ২০২৩, ০৬:৩২ পিএম
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলার পাশাপাশি জরুরি সহায়তায় সরকারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপকূলীয় এলাকা ছাড়াও সমুদ্রবন্দরগুলোতে কাজ করছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস)। এসব কাজে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার ৭৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে কাজ করছে সোসাইটির ৮ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক।
রোববার (১৪ মে) বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির গণসংযোগ কর্মকর্তা ফারজানা জেরিন শ্রাবন্ত গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
ফারজানা জেরিন জানান, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় উপকূলজুড়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৭৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৮ হাজারের বেশি যুব স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বিশেষ করে উখিয়া, টেকনাফ ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন সোসাইটির যুব স্বেচ্ছাসেবকরা।
রেড ক্রিসেন্টের কাজের বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আবহাওয়া অধিদফতর, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী (সিপিপি), আইএফআরসি, আরআরআরসি ও ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কাজ করছে। সেই সঙ্গে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সোসাইটির প্রশিক্ষিত ইউনিয়ন ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট টিমের (ইউডিআরটি) সদস্যরা প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদি নিয়ে প্রস্তুত রয়েছেন। পাশাপাশি তাৎক্ষণিক উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তার জন্য সরঞ্জামসহ প্রস্তুত আছে সোসাইটির সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিম। সেই সঙ্গে মেডিকেল টিমের সঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স।
এছাড়াও সাধারণ মানুষের জন্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ফারজানা জেরিন শ্রাবন্ত। সেই সঙ্গে মজুত আছে তারপলিন, জেরিকেন, স্লিপিং ম্যাট, বালতি, হাইজিন কিটসহ অন্যান্য সামগ্রী। যা প্রয়োজনে বিতরণ করা হবে।
এদিকে, দুর্যোগ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিডিআরসিএস এর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জাতীয় সদর দফতর থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে।
জরুরি সহায়তার বিষয়ে সোসাইটির মহাসচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে বিপদগ্রস্ত মানুষের জরুরি সহায়তা হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ’র (আইএফআরসি) সহযোগিতায় ৮ কোটি টাকার ডিজাস্টার রেসপন্স ইমার্জেন্সি ফান্ডের জন্য আবেদনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’
এ বিষয়ে আইএফআরসি বাংলাদেশ ডেলিগেশনের হেড অব ডেলিগেশন সঞ্জীব কুমার কাফলে বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে আমরা বিডিআরসিএস-এর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা কক্সবাজারের ক্যাম্প এবং অন্যান্য উপকূলীয় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অবস্থান করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ করছেন।’
এমএইচ/আইএইচ