images

জাতীয়

৯১’র ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে বেশি ভয় পেয়েছেন নুরুল হক

বোরহান উদ্দিন

১৪ মে ২০২৩, ১০:৫০ এএম

কক্সবাজারের মহেশখালীর নুরুল হক। চার সন্তানের বাবা নুরুল হক অটো রিকশা চালিয়ে যা আয় রোজগার করেন তা দিয়ে কক্সবাজার সদরে বাসা নিয়ে মোটামুটি ভালোই আছেন। গত ১৯ বছর ধরে এই নগরীতে থাকলেও খুব একটা ভাগ্য বদল হয়নি। তবুও স্বস্তি এখানে। কারণে মহেশখালীতে থাকাকালীন সময় ১৯৯১ সালে তার জীবনের ওপর দিয়ে বসে গেছে এক ঝড়। প্রলয়ংকারী সেই ঝড়ের স্মৃতি এখানো মনে দাগ কেটে আছে তার। তবে এবারের ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে তার ভয় ছিল ওই সময়ের চেয়েও বেশি। কারণ এবার আবহাওয়া অধিদফতরের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত।

যদিও রোববার (১৪ মে) সকাল নয়টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি অনেকটা ভালো থাকায় কিছুটা স্বস্তিও দেখা গেছে তার মধ্যে। দুপুরের দিকে সমুদ্রে যে জোয়ার আসবে তার আগে যদি বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে সেক্ষেত্রেই কেবল নিরাপদবোধ করবেন বলে জানান এই অটোচালক।

কলাতলী বিচের সামনে থেকে রোববার সকালে অটোতে ওঠার পর নুরুল হকের সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয় জানা যায়।

কেন এবারের ঘূর্ণিঝড় নিয়ে বেশি আতঙ্ক তার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি (কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষায়) বলেন, এবার ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দিয়েছে। এটায় সবার মধ্যে ভয় ঢুকে গেছে। সবার ধারণা বড় কিছু হয়ে যাবে। আবার ১৯৯১ সালের মতো হয় কিনা সেই টেনশনও ছিল। এখনো সব শেষ হয়ে গেছে বলা যায় না। যদি আবার দুপুরের জোয়ারের সময় হয় তাহলে আরও ঝুঁকি।

nurul

প্রশাসন চেষ্টা করলেও অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে না যাওয়ায় বেশ কষ্ট তার মনে। বললেন, সরকার আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে যাদের জন্য তারা না গেলে লাভ কি? প্রশাসন চেষ্টা করছে। অনেক হোটেল ঠিক করছে। কিন্তু এগুলো খালি।

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় নিয়ে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, তখন তো গ্রামের বাড়ি মহেশখালীতে থাকতাম। আত্মীয় স্বজনও মারা গেছে। শহরে তো অনেক সময় অনেক কিছু টেরও পাওয়া যায় না। ওই সময়ের পরে এখানে আসছি। খেয়ে-পরে ভালোই আছি।

নিজের দুই মেয়েকে পাত্রস্থ করার পর দুই ছেলেকেও কাজে ব্যস্ত রেখেছেন তিনি। বললেন, দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এক ছেলে ক্রিকেট খেলে। আরেক ছেলে হোটেলে ম্যানেজারের চাকরি করে। সব মিলে ভালোই আছি।

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় নিহতের সংখ্যা বিচারে স্মরণকালের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে একটি। ওই বছরের ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশে দক্ষিণপূর্ব চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৫০কিমি/ঘণ্টা বেগে আঘাত করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ৬ মিটার (২০ ফুট) উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত করে এবং এর ফলে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয় এবং প্রায় ১ কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারায়।

বিইউ/এএস