জেলা প্রতিনিধি
১৩ মে ২০২৩, ১০:৩০ পিএম
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে শনিবার (১৩ মে) দেশজুড়ে লোডশেডিং বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকাতেও। এদিন রাজধানীতে দফায় দফায় বিদ্যুতের লোডশেডিং হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার নাগাদ বিদ্যুতের সংকট থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার (১২ মে) দিবাগত রাত ১২টায় সারাদেশে এক হাজার ২৫৩ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে, যেটা বেড়ে ভোর ৫টার দিকে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮২৫ মেগাওয়াটে। এর ফলে বেড়েছে লোডশেডিং।
পিজিসিবি সূত্র জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সাড়ে নয় হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে সারাদেশে প্রায় অর্ধেকের বেশি সময় লোডশেডিং করতে হবে। এই লোডশেডিংয়ের ফলে জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব শুরুর পর ১৬ হাজার থেকে সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এজন্য ঢাকার বাইরে সারাদেশেই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
শনিবার সকাল থেকেও দেশজুড়ে লোডশেডিং হচ্ছে। এর আগে শুক্রবার রাত ১১টা থেকে সমুদ্রে ভাসমান টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকার কথা জানিয়েছিল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে দুটি সংস্থা নিয়োজিত। এর একটি ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)। সংস্থাটি জানিয়েছে, আজ শনিবার (১৩ মে) সকাল ১০টার দিকে তাদের চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি ছিল প্রায় ৩৫০ মেগাওয়াট।
আরেকটি কোম্পানি ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড- ডিপিডিসি। তারা জানিয়েছে, তাদেরও ঘাটতি প্রায় ৪৫০ মেগাওয়াটের। ফলে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিং করা ছাড়া তাদের কোনো বিকল্প নেই।
ঢাকার মিরপুর, শ্যামলী, ফার্মগেট, বাংলামোটর, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মুখপাত্র শামীম হাসান ঢাকা মেইলকে জানান, যেহেতু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ কম হচ্ছে, তাই আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত লোডশেডিং থাকবে।
এর আগে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় মোখার ফলে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে শনিবার গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হবে। ঝড়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ করা হবে। চট্টগ্রাম, মেঘনাঘাট, হরিপুর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ বা আংশিক চালু থাকতে পারে।
এই বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাময়িক এই অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘অতিদ্রুত গ্যাস-বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হবে।
তবে ঘূর্ণিঝড় মোখার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মহেশখালীতে ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনালের কার্যক্রম দ্রুত চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে গ্যাস-বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিনিধি/জেবি