মো. ইলিয়াস
০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:০৮ এএম
ঈদুল ফিতর সামনে রেখে রমজানের শুরু থেকেই হরেক রকম পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছর রোজার শুরু থেকে বেচাকেনা জমে উঠলেও এবার রোজার মাঝামাঝিতেও জমে ওঠেনি। শপিংমলগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। অলস সময় পার করছেন। ফলে মন খারাপ ব্যবসায়ীদের। যদিও রমজানের শেষের দিকে ক্রেতার উপস্থিতি ও বিক্রি বাড়বে বলে আশাবাদী তারা।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর মৌচাক এলাকায় বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এ দিন মৌচাক এলাকার মৌচাক মার্কেট, আয়েশা মার্কেট, আনারকলি মার্কেট, সেন্টার পয়েন্ট ও ফরচুন শপিংমল ঘুরে দেখা যায়- কিছু দোকানে হাতেগোনা ক্রেতা থাকলেও অধিকাংশ দোকানে নেই কোনো ক্রেতা। এতে অলস সময় কাটছে ব্যবসায়ীদের। এছাড়া মৌচাক মার্কেট ঘুরে শাড়ি ও থ্রি-পিচের দোকানগুলোতে তেমন ক্রেতা লক্ষ্য করা যায়নি। সেখানেও অধিকাংশ দোকানের কর্মকর্তাদের অলস সময় পার করতে দেখা যায়। তবে বাচ্চাদের পোশাকের দুই একটি দোকানে কিছু ক্রেতা লক্ষ্য করা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, প্রতিবছর ৫ রোজার পর থেকেই ঈদের বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর ১৪ রমজান পর্যন্ত তেমন কোনো বেচাকেনা নেই। সারা বছরে টুকটাক যেমন বেচাকেনা হয়, ১৪ রমজান পর্যন্ত সেই একই অবস্থা। তবে রমজানের শুরু থেকেই ঈদের বাজারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত ঈদের কোনো প্রভাব মার্কেটে পড়েনি।
ব্যবসায়ীরা আরও জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের খাদ্যের পেছনে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে। এছাড়া ঘর ভাড়াসহ সকল ক্ষেত্রে খরচ বেশি হচ্ছে। যার কারণে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই বলেই তারা মার্কেটে আসছে না। আবার গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে কাপড়ের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতেও ঈদ বাজারে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
মৌচাক মার্কেটের মধুবণ শাড়ি হাউজের কর্মকর্তা মোহাম্মদ খোকন ঢাকা মেইলকে বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যেই বেচাকেনা হওয়ার কথা ছিল, তার কিছুই নেই। প্রায় অর্ধেক রোজা শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু মানুষ এখনো মার্কেটে আসছে না। মূল কারণ হচ্ছে মানুষের হাতে টাকা নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অতিরিক্ত খরচ, ঘর ভাড়া সবমিলে সৌখিনতা করার মতো পরিস্থিতি নেই।
ফরচুন শপিং মলের ‘নারীর সাজ’ এর কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, রমজান উপলক্ষে যেরকম বেচাকেনা হওয়ার কথা ছিল, সেটা এখনো হচ্ছে না। অল্প ক্রেতা আসছেন, টুকটাক বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আশানুরূপভাবে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। ঈদের আগে এই সময়ে দোকানে তিনজন লোক লাগে, সেখানে আমি একা, তাও বসে রয়েছি। আশা করি- রমজানের শেষ সপ্তাহে বেচাকেনা কিছুটা বাড়বে।
একই কথা জানিয়েছেন যুথী ফ্যাশনের কর্মকর্তা মো. জুবায়ের হোসেন। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, বেচাকেনা খুবই খারাপ। পোশাকের কালেকশনও খুবই কম। অধিকাংশ পোশাক রাজধানীর বঙ্গবাজার থেকে এনে থাকি। কিন্তু সেখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় পোশাকও আনা সম্ভব হবে না। কারণ, আমাদের কাছে তেমন অতিরিক্ত টাকাও নেই যে অন্যান্য জায়গা থেকে বেশি টাকা দিয়ে পোশাক আনব। আবার বেচাকেনার অবস্থাও খুবই খারাপ এ জন্য আপনাকে সময় দিতে পারছি, বেচাকেনা বেশি হলে আপনাকে সময় দেওয়াও সম্ভব হতো না।
এছাড়া মোহাম্মদ কালেকশনের সাদ্দাম হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রতিবছর রমজানের শুরু থেকেই বেচাকেনা আরম্ভ হয়। কিন্তু এবার একেবারেই বেচাকেনা নেই। মার্কেটে কোনো মানুষ নেই। এই সময়ে মার্কেটে ভরপুর মানুষ থাকে। যদিও মালের দাম গত বছর তুলনায় এবার কিছুটা বাড়তি রয়েছে। এর প্রভাবও বেচাকেনাতে পড়বে। তবে সামনের দিনগুলোয় কিছুটা বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা এই বিক্রেতার।
এমই/আইএইচ