images

জাতীয়

‘হামলা চালিয়ে পুলিশ সাংবাদিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ মার্চ ২০২৩, ০৬:১৯ পিএম

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং তথ্যের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন।

শনিবার (১৮ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মতো সুরক্ষিত জায়গায় সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর পুলিশের হামলা অগ্রহণযোগ্য এবং উদ্বেগজনক। এই হামলার মাধ্যমে পুলিশ সংবিধান স্বীকৃত গণমাধ্যমের স্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘন করেছে। এই ঘটনায় পুলিশের বেআইনিভাবে জনগণের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করার প্রবণতা আবার দেখলাম। ভিন্নমত, প্রতিবাদ ও আন্দোলন দমনে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে পুলিশের ক্রমাগত অনেক বেশি কর্তৃত্বপরায়ণ প্রবণতা, বেআইনি আটক, বলপ্রয়োগ, মামলা, হুমকি, হয়রানি করার প্রবণতা বেড়ে চলেছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, বুধবার, (১৫ মার্চ ২০২৩) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন উপলক্ষে সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান অডিটোরিয়ামে ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলের সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের দুই দিনব্যাপী নির্বাচন বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যের প্রহরায় ধারাবাহিক সহিংসতা, বয়কট এবং কম ভোটার উপস্থিতির মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ)  শেষ হয়েছে। একইভাবে বাংলাদেশ সচিবালয়ের মতো সুরক্ষিত জায়গায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হামলা ও নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন।

এছাড়া সম্প্রতি একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাদিয়া শারমিনের পৈতৃক বাড়িতে দুই দফা হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটে। গত ১১ মার্চ সকালে প্রথম হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। হামলায় বাড়ির কেয়ারটেকার ইউনুস শেখ আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে বাগেরহাট সদর থানায় মামলা করা হলে ক্ষুব্ধ হয়ে রোববার ভোরে দুর্বৃত্তরা আবারও হামলা চালিয়ে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দুর্ভাগ্যবশত, নাদিয়া শারমিন ও তার পরিবারকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া সত্ত্বেও এই বিষয়ে পুলিশের কোনো বিশেষ তৎপরতা নেই।

আর্টিকেল নাইনটিন বিবৃতিতে জানায়, সাংবাদিকরা মুক্ত গণমাধ্যমের অংশ হিসাবে গণতন্ত্র নিশ্চিতে এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাংবাদিক ও স্বাধীন সংবাদমাধ্যম আমাদের সত্য জানতে সহায়তা করে। তথ্যভিত্তিক সঠিক সিদ্ধান্ত প্রণয়নের জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর গণমাধ্যম ব্যবস্থা অপরিহার্য। জাতীয় নির্বাচনের আগে সাংবাদিকদের ওপর এরকম ধারাবাহিক হামলা খুবই উদ্বেগের।   আর্টিকেল নাইনটিন সরকারকে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত পুলিশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তির দাবি জানায়। পাশাপাশি পুলিশকে নাগরিক অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, প্রতিবাদের অধিকার ও নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চায় আরও বেশি সংবেদশীল হওয়ার আহ্বান জানায়।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ মার্চ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনে বিক্ষোভকারী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে পুলিশের লাঠিচার্জের সময় নির্বাচন কভার করতে আসা ১০ জন সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২৪ জন আহত হন।

ডব্লিউএইচ/জেবি