images

জাতীয়

পরিবর্তনের ‘হাওয়া’ ঢাকা-৫ আসনে

কাজী রফিক

০৩ মার্চ ২০২৩, ১১:০০ এএম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছরেরও কম সময় বাকি। ২০২৪ সালের প্রথম সপ্তাহে ভোট হওয়ার কথা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে চলতি বছরের নভেম্বরে। তবে এরইমধ্যে ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে দেশজুড়ে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে চায়। দলটি ইতিমধ্যে তাদের নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছে। অপরদিকে সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনে মাঠে আছে বিএনপি। আর পারিবারিক কলহের মধ্যদিয়ে গেলেও ভোটের বিষয়ে চোখ-কান খোলা জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের।

দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২০টি ঢাকায়। যার ১৮টিতে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য। দুটি আসন মহাজোটকে ছাড়া হয়েছে।

সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ঢাকা-৫ জাতীয় সংসদের ১৭৮নং আসন। যা ঢাকা জেলার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৮, ৪৯ ও ৫০নং ওয়ার্ড এবং ঢাকা মেট্রোপলিটনের ডেমরা, দনিয়া, মাতুয়াইল ও সারুলিয়া এলাকা নিয়ে গঠিত।

২০০৮ সালে সীমানা নির্ধারণের পর আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে আসে। এর আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুইবার পালাক্রমে আসনটির দায়িত্বে ছিল।

Election২০০৮ সালে হাবিবুর রহমান মোল্লা আসনটির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। টানা তিনবার আসটির সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে মারা যান তিনি। পরে উপনির্বাচনে তার স্থলাভিষিক্ত হন কাজী মনিরুল ইসলাম মনু।

তার মতে, আসনটির দায়িত্ব পাওয়ার পর নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। উন্নয়নের পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই নিয়ে এসেছেন পরিবর্তন।

ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে কাজী মনিরুল ইসলাম মনু বলেন, দুই বছর চলে গেল, এখনও এক বছর আছে। করোনার মধ্যে যতটা সম্ভব চেষ্টা করেছি। স্কুলগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করার জন্য কাজ করেছি। এক্ষেত্রে আমরা অনেকটাই সফল। যাত্রাবাড়ীর ভিতরে যে রাস্তা আছে সেখানে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আরও হবে, মাননীয় মেয়র সাহেব তিনি সুদৃষ্টি রাখছেন। অল্প সময়ের মধ্যেই হবে।

সংসদীয় আসনটিতে বর্তমানে কি কি সমস্যা রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে পানি নিয়ে। এই পানির সমস্যা দূর করার চেষ্টা করছি। গ্যাসের সমস্যা রয়েছে, কেন জানি না বাড়িতে বাড়িতে গ্যাস আসে না। বহুবার খবর নিয়েছি।

সমস্যা সমাধান করতে না পেরে সংসদ সদস্য বললেন, অচিরেই বোধহয় মানুষ বোতলজাত সিলিন্ডার ব্যবহার করবে।

সংসদ সদস্য বলেন, মাদক কমে গেছে, এলাকার মধ্যে মাদক নেই। ভূমিদস্যু কমেছে।

সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হওয়ার পর উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছিল ২০টি। অর্থাৎ এটা স্পষ্ট যে, আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই। ১৯ জনকে পেছনে ফেলে নৌকা পেয়ে সংসদ সদস্য হন কাজী মনিরুল ইসলাম মনু। স্থানীয় অনেকে বলছেন, এবার এ আসনে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে।

এখন দলীয় নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী মনিরুল ইসলাম মনু বলেন, যারা প্রার্থী ছিল তাদের সাথে আমার কোনো খারাপ আচরণ হয়নি। তারাও করেনি, আমিও করি নাই। তারা মামলা-হামলা করেনি, আমরা করিনি।

Awami Leagueঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা-৫ আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গাজী সারোয়ার হোসেন বাবুর কাছে আসনটির রাজনৈতিক অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা-৫ আওয়ামী লীগের আসন। এখানে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের সব সহযোগী সংগঠন শক্তিশালী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখানে নৌকা প্রতীক দিয়ে যাকে দেবেন, তিনিই বিজয়ী হবেন।

আগামী নির্বাচনকে ঘিরে এখনই আলোচনা চলছে ঢাকা-৫ আসনে। বর্তমান সংসদ সদস্য ছাড়াও আসনটিতে আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন প্রার্থী আছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল।

তিনি ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয়ভাবে সুপরিচিত ও প্রভাবশালী এই নেতা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।

আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চান নেহরীন মোস্তফা দিশি। তিনি আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির সদস্য। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু পরিবারের আত্মীয়ও তিনি। গত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে দিশিও একজন।

এদিকে ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগ যতটা শক্তিশালী ততটাই দুর্বল ধরা হয় বিএনপিকে। আসনটিতে জাতীয়তাবাদী দলের তেমন কোনো জাতীয় নেতা নেই। থানার নেতাদের হাত ধরেই চলছে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম। তবে স্থানীয়দের অনেকেই মনে করেন, দলের সবুজ সংকেত পেলে নবীউল্লাহ নবী হতে পারেন ঢাকা-৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী৷

কারই/জেএম