images

জাতীয়

দুই ভিডিও থেকে ৩৩ জঙ্গি শনাক্ত করল র‍্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

০২ মার্চ ২০২৩, ০১:১৫ পিএম

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র প্রধান নেতা আনিছুর রহমান ওরফে মাহমুদ এবং দাওয়াতী শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মাইমুনের সদস্য সংগ্রহ ও অর্থ সংগ্রহ বিষয়ক এবং উগ্রবাদী বক্তব্য সম্বলিত চাঞ্চল্যকর ভিডিও কন্টেন্ট উদ্ধার করেছে র‍্যাব। ওই ভিডিওগুলো থেকে ৩৩ জঙ্গিকে শনাক্ত করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়। 

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র প্রধান নেতা আনিছুর রহমান ওরফে মাহমুদ এবং দাওয়াতী শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মাইমুনের সদস্য সংগ্রহ ও অর্থ সংগ্রহ বিষয়ক এবং উগ্রবাদী বক্তব্য সম্বলিত চাঞ্চল্যকর ভিডিও কন্টেন্ট উদ্ধার করা হয়েছে। ৮ মিনিট ও ৭ মিনিটের ভিডিওতে সর্বমোট ৩৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি জঙ্গিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলমান আছে। 

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত ২৩ আগস্ট কুমিল্লা ও দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে ৮ তরুণ নিখোঁজ হয়। এরই সূত্র ধরে র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখা এবং অন্যান্য ব্যাটালিয়ন নিখোঁজ তরুণদের উদ্ধারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। একপর্যায়ে তরুণ নিখোঁজের ঘটনার পেছনের নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। আরও জানা যায়, এই সংগঠনের ৫৫ জন সদস্য পাহাড়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকী চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর ছত্রছায়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন অরণ্যে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। 

এরই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রামে গত ৩ অক্টোবর থেকে র‍্যাব ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান পরিচালিত হতে থাকে।  র‍্যাবের অব্যাহত অভিযানে অদ্যাবধি ৫৯ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং জঙ্গি প্রশিক্ষণের সহায়তার অভিযোগে ১৭ জন কেএনএফ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও র‍্যাব ফোর্সেস এই সংগঠনের ২ জনকে ডির‍্যাডিকালাইজড করে তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে।

র‍্যাব জানায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখা এবং র‍্যাব -৭ চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আল আমিন ওরফে মিলদুকের হেফাজত থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র  প্রধান নেতা আনিছুর রহমান ওরফে মাহমুদ এবং দাওয়াতী শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মাইমুনের সদস্য ও অর্থ সংগ্রহ বিষয়ক এবং উগ্রবাদী বক্তব্য সম্বলিত চাঞ্চল্যকর ভিডিও কন্টেন্ট উদ্ধার করা হয়।

গত ২২ জানুয়ারি এই সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকালীন তার মোবাইল ফোন থেকে ৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের আর একটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়। ওই ভিডিওতে মোট ২৯ জন জঙ্গিকে শনাক্ত করা হয়। বুধবার (১ মার্চ) উদ্ধার হওয়া ৭ মিনিট দৈর্ঘ্যের ভিডিওতে আরও ২৩ জন জঙ্গিকে শনাক্ত করা হয়। এই ২৩ জনের মধ্যে ১৯ জন জঙ্গি ২২ জানুয়ারি উদ্ধার হওয়া ভিডিওতেও ছিলেন। 

বুধবারের ভিডিওতে নতুন করে আরও ৪ জন জঙ্গির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তারা হলেন- শেখ আহমেদ মামুন ওরফে রমেশ, শামিম মিয়া ওরফে বাকলাই ওরফে রাজান, নিজাম উদ্দিন হিরন ও ডা. জহিরুল ইসলাম ওরফে আহমেদ।
 
র‍্যাব জানায়, ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মূলত অর্থ সংগ্রহ এবং সদস্য সংগ্রহের জন্য এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়ে থাকতে পারে। অপরদিকে দেশে বড় কোনো নাশকতা করার পর নিজেদের অস্তিত্ব দেশিয় ও আন্তর্জাতিক মহলে জানান দেওয়াও জন্য এই ভিডিওর উদ্দেশ্য হতে পারে। সংগঠনটির নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ অর্থাৎ প্রধান নেতা আনিছুর রহমান, অর্থ ও মিডিয়া শাখার প্রধান রাকিব, দাওয়াতী শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মাইমুনকে গ্রেফতার করতে পারলে ভিডিওটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। তবে ২টি ভিডিও এর ব্যাকগ্রাউন্ড ভয়েস দিয়েছেন আল আমিন ওরফে বাহাই (নারায়ণগঞ্জ থেকে নিখোঁজ রিয়াসাত রায়হান ওরফে আবু বক্করের প্রাইভেট টিউটর) এবং ভিডিও এডিটিং করেছেন পাভেল নামক অপর এক জঙ্গি।

কেআর/এমএইচএম