images

জাতীয়

দুই ভাষা শহীদের সমাধির মাঝে শহীদ মিনারের নকশাকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৩৯ পিএম

রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে শায়িত আছেন দুই মহান ভাষা শহীদ আবুল বরকত ও আব্দুর জব্বার। তাদের দুইজনের সমাধির মাঝে আছে আরও একটি সমাধি। সেটি শহীদ মিনারের নকশাকার হামিদুর রহমানের।

আজিমপুর কবরস্থানের পশ্চিম দিকে রয়েছে কবরটি। তিনটি কবরই কালো রঙের টাইলস দিয়ে বাঁধাই করা।

করবস্থানে দায়িত্ব পালনকারী গোরখোদকরা সবাই জানেন এই কবর তিনটি তিনজন মহান মানুষের।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান শাসকদের জারি করা কারফিউ ভেঙে মিছিল বের করেছিলেন বাংলা মায়ের একঝাঁক দামাল ছেলে। সেই মিছিলে কর্তাদের নির্দেশে গুলি চালিয়েছিল পাকিস্তান পুলিশ। শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউল, সালাউদ্দিনসহ নাম না জানা অনেকে।

সেই মহান শহীদদের স্মৃতির ধারক হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শহীদ মিনার। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে কেন্দ্রীয় এই শহীদ মিনারের নকশা করেছিলেন হামিদুর রহমান।

জানা যায়, হামিদুর রহমানকে শহীদ মিনারের নকশা করার কাজ দেয়ার পর থেকেই তিনি ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্রীয়ভাবে ধারণ করে এমন কোনো নকশা করতে চেয়েছিলেন। তিনি আনুভূমিক ও উল্লম্ব আকারের কাঠামোর মাধ্যমে পুরো বাঙালির পরিচয় বের করে আনতে চেয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় কাঠামোর উভয়দিকে চারটি স্তম্ভের মাধ্যমে একটি একত্রিত স্তম্ভের ভারসাম্য এবং সাদৃশ্য রক্ষা করার ব্যবস্থা করেন। প্রকৃত নকশাতে তিনি স্টেইনড কাচের মধ্যে হাজারো চোখের ন্যায় গঠনও এঁকেছিলেন, যার মধ্য দিয়ে সূর্যালোক এসে সামনের মর্মরখচিত মেঝেকে ভোর থেকে গোধূলি পর্যন্ত আলোকিত করে রাখবে। এর বেসমেন্টে তিনি ১৫০০ বর্গফুটের একটি ফ্রেস্কোর কাজও করতে চেয়েছিলেন।

হামিদুর রহমানের রূপকল্পনা অনুসারে ১৯৬২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কিছুটা পরিবর্তিত আকারে শহীদ মিনারের নির্মাণকাজ আরম্ভ হয়। ১৯৬৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি নতুন শহীদ মিনারের উদ্বোধন করা হয়।

মহান এই অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮০ সালে একুশে পদক লাভ করেন এই চিত্রশিল্পী।

শহিদ মিনারের নকশাকার হামিদুর রহমান ১৯৮৮ সালের ১৯ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তাকে সমাহিত করা হয় আজিমপুর কবরস্থানে দুই ভাষা শহীদের কবরের মধ্যবর্তী স্থানে।

দুই ভাষা শহীদের সমাধি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন দেখভাল করলেও শহীদ মিনারের নকশাকার হামিদুর রহমানের সমাধির তত্ত্বাবধান করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কারই/জেএম