জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:০৩ এএম
খুব বেশি পরিবর্তনের সম্ভাবনা না থাকলেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ ইস্যু নিয়ে কর্মপন্থা ঠিক করছে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) কমিশনের বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
যদিও সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য আদমশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় থাকার কথা জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে আপাতত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) থেকে পাঠানো খসড়া প্রতিবেদনের তথ্য ধরেই কাজ শুরু করছে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থাটি।
জানা গেছে, বিদ্যমান জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে ইসি সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শুরু করছে। এটাকে ভিত্তি ধরে কমিশন বৈঠকে আলোচনা করা হবে। এরই মধ্যে জেলাভিত্তিক জনসংখ্যার হিসাবও প্রকাশিত হয়েছে। উপজেলাভিত্তিক হিসাব প্রস্তুতের কাজ চলছে। তাই চূড়ান্ত জনশুমারি প্রকাশ না হলেও এসব ধরেই সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানিয়েছেন, পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন হয়তো জুনের আগে পাওয়া যাবে না। তবে না পেলেও যে খসড়া প্রতিবেদন পাঠিয়েছে তা থেকে ৪-৫ শতাংশ এদিক-সেদিক হয়। সেক্ষেত্রে কাজ করতে সমস্যা হবার কথা নয়। সেটা দিয়েই কাজ শুরু করা হয়েছে।
ইসির পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছে, প্রশাসনিক এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে গুরুত্ব দিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। সেই অনুযায়ী জাতীয় সংসদের হাতেগোনা কয়েকটি আসনের এলাকা পরিবর্তন হতে পারে। এক্ষেত্রে গুরুত্বের দিক দিয়ে জনসংখ্যার বিষয়টি তৃতীয়। সে কারণে অনেক বেশি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম।
যদিও এরইমধ্যে সীমানা পুনর্নির্ধারণের পক্ষে-বিপক্ষে অনেকে নির্বাচন কমিশনে আবেদনও জমা দিয়েছেন। কেউ সীমানা বাড়ানোর দাবি করছেন। কেউ আবার পরিবর্তন হতে পারে এমন আশঙ্কায় বিদ্যমান সীমানা ঠিক রাখার দাবি করছেন।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার পর্যন্ত সীমানা পুনর্নির্ধারণ চেয়ে ১৮টি আবেদন জমা পড়েছে ইসিতে। আবেদনকারীদের মধ্যে এসব এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আইনজীবীও রয়েছেন।
অন্যদিকে কতিপয় সংসদ সদস্য মৌখিকভাবে সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে তদবির করলেও এমপিদের কেউ লিখিত আবেদন করেননি বলে জানা গেছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দেওয়ার সময় শেষ হলে প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর দাবি, আপত্তি ও শুনানি শেষে চূড়ান্ত করা হবে সংসদীয় আসনের সীমানা।
জানা গেছে, কুমিল্লা-১ ও কুমিল্লা-২ আসনের সীমানা নিয়ে পাঁচটি আবেদন জমা পড়েছে। একটিতে বিদ্যমান কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-মেঘনা) ও কুমিল্লা-২ (হোমনা-তিতাস) সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন করে হোমনা ও মেঘনা উপজেলার সমন্বয়ে আসন পুনর্নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে।
অন্য আবেদনে কুমিল্লা-১ ও ২ আসনের বিদ্যমান সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন করে হোমনা ও মেঘনা উপজেলায় পুনর্নির্ধারণ চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া হোমনা ও মেঘনা উপজেলার সমন্বয়ে সংসদীয় আসনের পুনর্নির্ধারণ, বিদ্যমান কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি ও মেঘনা) এবং কুমিল্লা-২ (হোমনা ও তিতাস) উপজেলার পরিবর্তে সংসদীয় আসনের পূর্ব ইতিহাস অনুযায়ী হোমনা ও মেঘনা উপজেলার সমন্বয়ে নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণের আবেদনও জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে।
অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ-১ ও ৫ আসন নিয়েও আবেদন জমা পড়েছে ইসিতে। এতে সিরাজগঞ্জ জেলায় সমন্বয়ের (বেলকুচি ও কামারখন্দ) ভিত্তিতে পুনর্নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া পিরোজপুর-৩ আসনের (মঠবাড়িয়া উপজেলা) সংসদীয় আসনের বর্তমান সীমানা বহাল চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
বিইউ/এমআর