নিজস্ব প্রতিবেদক
০২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৬:১৫ পিএম
ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনকে ঘিরে ওড়ানো ফানুস বৈদ্যুতিক তারে পড়ে গতকাল রোববার দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল মেট্রোরেল চলাচল। ওই সময়ে তাই অনেকেই স্বপ্নের মেট্রোতে চড়তে আসলেও পারেননি। ‘ট্রেন বন্ধ’ এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়েছিল জনমনে। যার প্রভাব কাটেনি এখনও। ফলে চতুর্থ দিনে (১ জানুয়ারি) যাত্রী কমেছে মেট্রোরেলে। আর এতে তৃতীয় দিনের (৩১ ডিসেম্বর) তুলনায় বছরের প্রথম দিনে মেট্রোরেলের রাজস্ব কমেছে তিন লাখ ১৫ হাজার ৩৭০ টাকা।
সোমবার (২ জানুয়ারি) ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, রোববার (১ জানুয়ারি) সকাল ১০ থেকে মেট্রোরেল চালু করার পরও পর্যাপ্ত যাত্রী পাওয়া যায়নি। এতে এক ধরনের ফাঁকা অবস্থায় চলাচল করেছে মেট্রোরেল কোচগুলো। একই কারণে মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশনও ছিল যাত্রীশূন্য। মূলত দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। এমনকি টিকিট ভেন্ডিং মেশিনের সামনেও যাত্রী তেমন একটা চোখে পড়েনি। অথচ অন্যান্য দিন স্টেশন গেটে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
ডিএমটিসিএলের দেওয়া তথ্যমতে, চতুর্থ দিনে রোববার ৯ লাখ ১৬ হাজার ৩৪০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে মেট্রোরেলে। এরমধ্যে সিঙ্গেল জার্নি টিকিট (এসজেটি) বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪০ টাকার। আর আগের দিন শনিবারও (৩১ ডিসেম্বর) ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭১০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়। তবে রোববার ৬ হাজার ৫২৮টি সিঙ্গেল টিকিট বিক্রি হয়েছে। যেখানে শনিবার বিক্রি হয়েছিল ৯ হাজার ২৮৯টি টিকিট।
এদিকে, রোববার এমআরটি পাস টিকিট বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৩৮টি। প্রতি টিকিটের দাম ৬০ টাকা ধরে আয় হয়েছে ৫ লাখ ২২ হাজার ৭০০ টাকা। আর আগের দিন শনিবার ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭১০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। সবমিলিয়ে শনিবার ১২ লাখ ৩১ হাজার ৭১০ টাকার টিকিট বিক্রি হলেও ফানুস ওড়ানোর জেরে রোববার মাত্র ৯ লাখ ১৬ হাজার ৩৪০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়।
অন্যদিকে, ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধনের পরদিন (২৯ ডিসেম্বর) জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর মেট্রোরেলের সিঙ্গেল টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৩ হাজার ৯৯৬টি। প্রতিটি টিকিটের দাম ৬০ টাকা। এছাড়া মেট্রোরেলে যাতায়াতের জন্য ৩০৪টি এমআরটি পাস বিক্রি হয়। প্রতিটি এমআরটি পাসের দাম সর্বমোট ৫০০ টাকা। এরমধ্যে কার্ডের জামানত ২০০ টাকা। বাকি ৩০০ টাকা ব্যালেন্স, যা দিয়ে ভ্রমণ করা যাবে। আর কার্ড জমা দিলে জামানতের টাকা ফেরত দেবে সরকার। সবমিলিয়ে ২৯ ডিসেম্বর মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫২০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়।
>> আরও পড়ুন: একই সংখ্যার ট্রিপ, তবুও দ্বিতীয় দিনে আয় কমেছে মেট্রোরেলের
তবে দ্বিতীয় দিনে (৩০ ডিসেম্বর) মাত্র ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়। অথচ প্রথম দিন ও দ্বিতীয় দিন ট্রিপসংখ্যা ছিল ৫০টি। অর্থাৎ আগারগাঁও থেকে উত্তরা উত্তরা স্টেশনে ২৫ বার করে মেট্রোরেল যাতায়াত করেছে। এরমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে ট্রিপসংখ্যা একই হলেও ভাড়া কমেছে অনেক। যেখানে মেট্রোরেলে চড়তে না পেরে হাজারও মানুষ বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে তৃতীয় দিনে এসে প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। কিন্তু চতুর্থ দিনে মেট্রোরেল দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকায় আবারও টিকিট বিক্রি কমেছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট গণসংযোগ কর্মকর্তা নাজমুর ইসলাম ভূঁইয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, ফানুস মেট্রোরেলের বৈদ্যুতিক তারের ওপর পড়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এ নিয়ে একপ্রকার নেতিবাচক চিন্তা জনমনে তৈরি হয়েছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যই আমরা আবারও ট্রেন সচল করি।
মেট্রোরেলের এই কর্মকর্তা বলেন, তৃতীয় ও চতুর্থ দিনে মেট্রোরেলে রাজস্ব কমার পেছনে আরও যোক্তিক কারণ রয়েছে। অনেকেই প্রথম এসে চড়েছেন। শখের বসে এসেছেন। সামনে দিনে আরও কমবে। আজও পর্যাপ্ত যাত্রী ছিল না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ডিএইচডি/আইএইচ