নিজস্ব প্রতিবেদক
২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:২৯ এএম
দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেলে প্রথমবারের মতো চড়ে যাত্রীদের উল্লাস করতে দেখা গেছে।
উদ্বোধনের পর বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) জনসাধারণের জন্য খুলেছে মেট্রোরেলের দুয়ার। ফলে প্রথম দিনে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করে উচ্ছ্বসিত নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
জহিরুল ইসলাম নামের এক যাত্রী ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রথম বারের মতো বাংলাদেশে মেট্টোরেল চালু হয়েছে। তাই প্রথম দিনই চড়তে এসেছি। আসলে মেট্টোরেল যাত্রা সত্যিই অনেক ভালো লাগছে।
জাহিদ নামের আরেক যাত্রী ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার বাসা মিরপুর। দীর্ঘ দিন মেট্টোরেলের কাজ চলছিল। তবে অপেক্ষায় ছিলাম কবে মেট্টোরেল চালু হবে। অবশেষে চালু হয়েছে। তাই প্রথম দিনই মেট্টোরেল চড়তে এসেছি। সত্যিই আনন্দ লাগছে। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।
উত্তরা একটি কলেজের শিক্ষার্থী রহিমা ঢাকা মেইলকে বলেন, মেট্টোরেল উদ্বোধন হওয়ায় আমি খুব খুশি। আর প্রথমদিন চড়তে পেরে আরও খুশি আমি।
নবীন হোসেন নামের আরেক যাত্রী ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার বাসা দিয়াবাড়ি। তবে মেট্টোরেল চড়ে অনেক ভালো লাগছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মেট্টোরেলের যাত্রীরা। কেউ কেউ ফজরের নামাজের আগে থেকেই স্টেশনে উপস্থিত হয়েছেন। রাজধানীর উত্তরা স্টেশনে আসা যাত্রীদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
আমিনুল ইসলাম নামের এক যাত্রী ঢাকা মেইলকে বলেন, আমি ভোর ৫টায় এসেছি। পরে সকাল আটটায় প্রথম ট্রেনের যাত্রী হযেছি। এতে অনেক ভালো লাগে।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতুর পর আরও একটি স্বপ্ন ছুঁয়েছে বাংলাদেশ। রাজধানীর বুক চিড়ে গড়ে ওঠা উড়াল রেলযোগাযোগের মধ্যদিয়ে তাই মেট্রোযুগে প্রবেশ করেছে দেশ। বুধবার সব অপেক্ষার প্রহর ঘুচিয়ে ঘটা করেই দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে প্রথম যাত্রী হিসেবে টিকিট কেটে অতিথিদের নিয়ে মেট্রোভ্রমণ উপভোগও করেছেন সরকারপ্রধান।
দেশের প্রথম মেট্রোভ্রমণ ঘিরে ইতোমধ্যেই নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পক্ষ থেকে যাত্রীদের জন্য বেশকিছু নির্দেশনা ও বিধিনিষেধও জারি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্বের অতিরিক্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে ১০ গুণ বেশি ভাড়া আদায়ের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
ডিএমটিসিএল বলছে- মেট্রোরেলে চড়ার সময় সঙ্গে পোষা প্রাণী; যেমন- কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি বহন করা যাবে না। পাশাপাশি সঙ্গে রাখা যাবে না বিপজ্জনক বস্তু; যেমন- আগ্নেয়াস্ত্র, ছুরি, চাকু। এছাড়া স্টেশনে বা ট্রেনে ফেলা যাবে না থুথু কিংবা পানের পিকও। আর পাবলিক প্লেসের মতো মেট্রোরেলেও ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্ল্যাটফর্মে বসেও কোনো খাবার গ্রহণ করা যাবে না।
যেভাবে মিলবে টিকিট
বৃহস্পতিবার থেকে চালু হওয়ার পর মেট্রোরেল চলবে দিনে চার ঘণ্টা (সকাল ৮ থেকে দুপুর ১২টা)। এছাড়া উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পথে প্রথম দিকে ট্রেন মাঝপথে কোথাও থামবে না। এ ক্ষেত্রে উত্তরা ও আগারগাঁও স্টেশন থেকে টিকিট (কার্ড) কাটা যাবে। পৌনে ১২ কিলোমিটারের এই পথের ভাড়া ৬০ টাকা।
পুরোপুরি চালু হওয়ার আগে স্টেশনে দুই ধরনের কার্ড পাওয়া যাবে। এরমধ্যে একটি স্থায়ী এবং অন্যটি একবারের যাত্রার (সিঙ্গেল জার্নি) কার্ড। প্রথম দিকে মেট্রোরেল স্টেশন থেকেই এই কার্ড বিক্রি শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে স্টেশনের বাইরেও এটি কিছু প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে ডিএমটিসিএল। ১০ বছর মেয়াদী স্থায়ী কার্ড কিনতে হবে ২০০ টাকা দিয়ে। আর এই কার্ড দিয়ে মেট্রোরেলে ভ্রমণে প্রয়োজনমতো টাকা রিচার্জ করতে পারবেন যাত্রীরা।
কেআর/এএস