দেলাওয়ার হোসাইন দোলন
২২ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:৪১ পিএম
বিজয়ের মাসে মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে ২৮ ডিসেম্বর। নগর জীবনে গতি আনবে মেট্রোরেলের এ যাত্রা। অন্যদিকে সড়কের সৌন্দর্যও বাড়িয়েছে এর নির্মাণশৈলী। তবে উদ্বোধনের আগেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন, রাজনৈতিক দলের দাবি-দাওয়া আর শুভেচ্ছার পোস্টারে ঢাকা পড়েছে মেট্রোরেলের পিলার। কেউ কেউ আবার পোস্টার লাগানোর কাজে পেরেকও ব্যবহার করছেন। যা একদিকে যেমন সৌন্দর্যহানি করছে, অন্যদিকে ক্ষতি করছে মেট্রোরেলের পিলারের।
এসব ‘অপকর্ম’ বন্ধে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) অনুরোধে অভিযানও পরিচালনা করেছে সিটি করেপোরেশন। গত আগস্টে পোস্টার লাগানোর অভিযোগ গ্রেফতার করা হয় ১৮ জনকে। যদিও এমন অভিযান খুব একটা কাজে আসছে না। এমনকি দিনের বেলাতেও লাগানো হচ্ছে পোস্টার।
সরেজমিন আগারগাঁও অংশ ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে মেট্রোরেলের পিলার জুড়ে পোস্টারে সাঁটানো। লাগানো হয়েছে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর পোস্টার, রং দিয়ে লেখা নানা স্লোগান।
কাজীপাড়া বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বাম রাজনৈতিক সংগঠনই শুধু নয়, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাওহিদেরও অসংখ্য পোস্টার।
মিরপুর-১০ এ দেখা যায়, পিলারের উপরের দিকে পেরেক দিয়ে লাগানো হয়েছে ব্যানার। এছাড়াও পিলারে লাগানো হয়েছে পোস্টার। একই চিত্র দেখা পুরো এমআরটি-৬ জুড়ে।
এ বিষয়ে ডিএমটিসিএল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিযান পরিচালনা করেও খুব একটা কাজে আসছে না। পোস্টার-ফেস্টুন লাগানো এক প্রকার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে মানুষের। এরমধ্যে কয়েক দফায় পিলারের পোস্টার উঠানো হয়েছে। লাগানো হয়েছে পোস্টার না লাগানোর নির্দেশনা।
এ নিয়ে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ শিক্ষার্থী আশরাফুল আলম ঢাকা মেইলকে বলেন, সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকা পিলারগুলো দেখলে মনে হয় পোস্টার লাগানোর জন্যই নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ শেষ না হতেই সৌন্দর্য বিলীনই শুধু নয়, যেন ধ্বংসে মেতেছে কিছু অসচেতন লোক।
মিরপুর-১০ এ নিয়ে কথা হয় সানজিদ আরেফিন নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবীর সাথে। আলাপকালে ঢাকা মেইলকে বলেন, একসময় এখানকার সড়কগুলো ছিল ধুলাবালি আর খোঁড়া-খুঁড়ির দখলে। আর এখন দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা মেট্রোরেলও দূষণের কবলে।
উত্তরা অংশে কথা হয় তাসনুভা আক্তার স্মৃতি নামে এক শিক্ষার্থীর সাথে। ঢাকা মেইলকে বলেন, সড়কের মাঝ দিয়ে নদীর মতো আঁকাবাঁকা ছুটে চলা কংক্রিটের স্থাপনাটি দৃষ্টি কাড়ে। সড়কের মাঝে আইল্যান্ড তৈরি করা স্টিলের ব্যারিয়ারে নানা রঙের ফুল আর সবুজের সমারোহ। কিন্তু এসব সৌন্দর্য আড়াল করছে পিলারের পোস্টার।
এ বিষয়ে ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমএএন সিদ্দিক বলেন, সিটি করপোরেশন জানিয়েছে পোস্টার লাগানো বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে এবং করছে। এছাড়া মেট্রোরেল পরিচালনায় আলাদা পুলিশ বাহিনী গঠন হলে এসব ঘটনা কমে আসবে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৮ ডিসেম্বর স্বপ্নের মেট্রোরেল উদ্বোধন করবেন। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম যাত্রী হিসেবে টিকিট কেটে মেট্রোরেলে চড়বেন। শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুই হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
তবে সাধারণ যাত্রীরা মেট্রোরেলে চলাচলের সুযোগ পাবেন উদ্বোধনের পরদিন থেকে।
ডিএইচডি/জেএম/আইএইচ