images

জাতীয়

পল্টন ছাড়া অন্য কোথাও সমাবেশে আপত্তি নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০৫:২৯ পিএম

নয়াপল্টন ছাড়া বিএনপি ঢাকার অন্য কোথাও সমাবেশ করতে চাইলে সরকারের কোনো আপত্তি করবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তবে কোনোক্রমেই নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে বিএনপি। এর মধ্যে দেশের সব বিভাগে সমাবেশের কর্মসূচিও ছিল। এর অংশ হিসেবে দেশের নয়টি বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করে দলটি।

পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী শনিবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকায় মহাসমাবেশ করার কথা রয়েছে দলটির। আগের সমাবেশগুলো শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ঢাকার কর্মসূচি ঘিরে বিপত্তি দেখা দিয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে ডিএমপির পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হলেও বিএনপি সেখানে সমাবেশ করবে না বলে জানিয়ে দেয়। তারা নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বলে ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যেই গতকাল বিকালে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিতে একজনের মৃত্যু হয়।

সংঘর্ষের পর বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযানে দলটির কয়েকজন নেতাসহ তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সংঘর্ষের পর নয়াপল্টন এলাকা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এখনো নয়াপল্টনে সমাবেশ করার বিষয়ে অবস্থানের কথা জানিয়ে আজ সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি মহাসচিব। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বিএনপিকে। তবে অন্য কোথাও চাইলে আপত্তি করবে না সরকার।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ডিএমপির নির্ধারিত স্থানে বিএনপিকে সমাবেশ করতে হবে। এছাড়াও মিরপুরে কালশী মাঠেও চাইলে সমাবেশ করতে পারবে। তবে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনোক্রমেই রাস্তাঘাটে অরাজক পরিবেশ হোক, তা চাই না। পরিস্থিতি নাজুক হয়েছে, এটা মনে করি না। সব সময় আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।

একগুঁয়েমি ছেড়ে বিএনপির শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, তারা সোহরাওয়ার্দী কিংবা কালশীতে সমাবেশ করুক। কিংবা অন্য কোনো বিকল্প থাকলে সেটা পুলিশ কমিশনারকে বলুক। তাদের পুরোপুরি সহযোগিতা করা হবে।

বিশৃঙ্খলা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চুপ থাকবে না জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় বলে যাই, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির কথা। কিন্তু ভাঙচুর, বিশৃঙ্খলা করলে তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চুপচাপ থাকতে পারে না। তারা শান্তিপূর্ণভাবে কোনো সমাবেশ করলে এখানে কোনো বাধা নেই।

নয়াপল্টনে সংঘর্ষের বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, বিএনপিকর্মীরা পুলিশের ওপর মারমুখী ছিল। তারা ঢিল ও ইটপাটকেল ছুড়েছিল। সেটি মোকাবিলা করতে গিয়ে আহত হন পুলিশ সদস্যরা। ৪৯ জন কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে এসেছিলেন। অস্ত্র, গজারি লাঠি দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে আহত করে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বিএনপি বিভিন্ন বিভাগে-জেলায় সমাবেশ করেছে। তাদের যা বলার মন খুলে বলেছে। আমরা বাধা দেইনি। এখন তারা ঢাকায় যে স্থানে সমাবেশ করতে চাইছে, সেখানে বড় জমায়েত করার সুযোগ নেই। তাই বিকল্প চিন্তা করতে বলা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় ২৫ লাখ লোক জমায়েতের বার্তা দিয়েছিল বিএনপি। তারা প্রথম সোহরাওয়ার্দী, মানিক মিয়া এভিনিউ ও নয়াপল্টন চেয়েছিল। বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দীতে সুযোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে সম্মেলন এগিয়ে আনতে বলেন। সে অনুযায়ী ছাত্রলীগ সম্মেলন এগিয়েও আনে।

কেআর/এমআর